পারিবারিক কলহ
প্রশ্নঃ ২৪১২৯. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, আশা করি আল্লাহর রহমতে ভাল আছেন, খুব দ্বিধায় পড়ে প্রশ্নটিই করলাম, আমার দুই সন্তান আছে এবং তারা সিজারের মাধ্যমে ডেলিভারি হয়েছে। এবং আমি তৃতীয়বারের মতো গর্ভবতী আলহামদুলিল্লাহ, কিন্তু বর্তমানে আমার অনেক শারীরিক সমস্যা হচ্ছে,যার কারনে ডাক্তার আমাকে সম্পুর্ন বিশ্রামে থাকতে বলেছে, নয়তো গর্ভের বাচ্চার ক্ষতি হতে পারে। আমার ১১বছরের সংসার আর বর্তমানে আমি এতিম, এখন কারণেই আমাকে আমার শাশুড়ীর(তিনি এখনও যথেষ্ট শক্ত-সামর্থ্য) উপর নির্ভরশীল হতে হবে।কিন্তু তিনি এখন তাতে রাজি নয়,তার মতে ছেলে বউয়ের সেবা করা উনার দ্বায়িত্ব না,অথচ এই ১১ বছরে আমি কখনো আামার নিজের দায়িত্ব থেকে পিছু পা হইনি।এমনকি আমার আগের দুই সন্তানের কোনো কিছুতেই উনার দরকার হয়নি।অনেক বুঝানোর পরও উনি এতে রাজি হয়নি, এমনকি প্রয়োজনে আমি যেন গর্ভপাত করিয়ে নেই, একথাও বলেছেন।এবার আমার প্রশ্ন হলো,(১)-এই অবস্থায় আমার স্বামী যদি তাদের হক ঠিক রেখে, একই বাড়িতে আমাকে আলাদা রাখার ব্যবস্থা করে, তাতে কি আমাদের গুনাহ হবে?(২)-এতে করে উনারা যদি আমাদের এমনকি আমার গর্ভের সন্তানকেও যদি অভিশাপ দেয়, তাহলে কি তা কবুল হতে পারে?**যদিও লেখা টা খুব বড়ো হয়ে গেছে তবুও দয়া করে ২টি প্রশ্নেরই উত্তর দিলে উপকৃত হবো।অগ্রীম ধন্যবাদ রইলো**
উত্তর
و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
সম্মনিত বোন!
আল্লাহ তায়ালা আপনার সবকিছু আসান করে দিন। ডাক্তারের পরামর্শে আপনি যথাসাধ্য বিশ্রামে থাকুন। এবং এবিষয়ে আপনি আপনার স্বামীকে বুঝাতে চেষ্টা করুন। কেননা আপনার বিশ্রাম মূলত সন্তানের সুভাগমনের জন্যই।
বদদোয়া সম্পর্কে কথা হলো, কেউ অমূলক কিংবা অন্যায়ভাবে বদদোয়া দিলেই তা কবুল হয়ে যায় না। কাজেই আপনি ওই জাতীয় অমূলক বদদোয়া থেকে নিশ্চিত থাকুন। তবে আপনার স্বামীর জন্য পিতামাতার সাথে সদ্যবহার করা এবং তাদের হক রক্ষা করা আবশ্যক। কাজেই তাকে বলুন তিনি যেনো পিতামাতার শতভাগ হক রক্ষা করার চেষ্টা করেন। হক নষ্ট করার কারণে তারা যদি কোনো বদদোয়া দেয় তাহলে সেটা ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াবে।
প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনার স্বামী যদি পিতামাতারা খেদমত এবং তাদের যাবতীয় হক আদায় করে আপনাদের সংসার আলাদা করে দেয় তাহলে সেটা শরঈ দৃষ্টিকোণ থেকে না জায়েজ নয়। তবে এক্ষেত্রে কিছুতেই যেন স্ত্রীর হক আদায় করতে গিয়ে বাবা মায়ের কিংবা বাবা মায়ের হক আদায় করতে গিয়ে স্ত্রীর হক নষ্ট না হয় সেই দিকে লক্ষ রাখতে হবে। এজাতীয় পরিস্থিতিতে পারিবারিক সুরাহার কোনো বিকল্প নাই। তাই যা-ই করুন পারিবারিক আলোচনার ভিত্তিতে করুন। তবেই সকলে শান্তিতে থাকবে। না হলো পারিবারিক কলহ অপরিহায্য। আল্লাহ তায়ালা কথাগুলো বুঝার এবং আমল করার তাওফিক দান করুন।
والله اعلم بالصواب
মন্তব্য (0)
কোনো মন্তব্য নেই। প্রথম মন্তব্য করুন!
মন্তব্য করতে লগইন করুন