প্রশ্নঃ ২৩৩২৬. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, আসসালামু আলাইকুম ওয়ারহমাতুল্লাহ।একসময় আল্লাহ পুরো সৃষ্টিজগৎ ধ্বংস করে দেবেন। মানে কিয়ামত সংঘটিত হবে। তখন সব ধ্বংস হয়ে যাবে। শুধুমাত্র আমাদের সৃষ্টিকর্তা থাকবেন। তিনি চিরঞ্জীব। আল্লাহর সৃষ্টি জগতের মধ্যে তো আল্লাহর আরশ, কুরসি, জান্নাত, জাহান্নামও অন্তর্ভুক্ত। এগুলোও কি আল্লাহ ধ্বংস করে পুনরায় আবার সৃষ্টি করবেন?
১১ অক্টোবর, ২০২২
Dhaka
উত্তর
و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
সম্মানিত প্রশ্নকারী!
আল্লাহু সুবহানাহুতায়ালা কোরআনে কারিমের মধ্যে এরশাদ করেন,
وَنُفِخَ فِی الصُّوۡرِ فَصَعِقَ مَنۡ فِی السَّمٰوٰتِ وَمَنۡ فِی الۡاَرۡضِ اِلَّا مَنۡ شَآءَ اللّٰہُ ؕ ثُمَّ نُفِخَ فِیۡہِ اُخۡرٰی فَاِذَا ہُمۡ قِیَامٌ یَّنۡظُرُوۡنَ
অর্থ: “এবং শিঙ্গায় ফুঁক দেওয়া হবে। ফলে আল্লাহ যাকে ইচ্ছা করবেন সে ছাড়া আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবীতে যারা আছে সকলেই মূর্ছিত হয়ে পড়বে। তারপর তাতে দ্বিতীয় ফুঁক দেওয়া হবে, অমনি তারা দন্ডায়নমা হয়ে তাকিয়ে থাকবে।
তাফসীরঃ
২৫. অর্থাৎ শিঙ্গার প্রথম ফুকে সকলেই মূর্ছিত হয়ে পড়বে জিবরাঈল, ইসরাফীল ও মালাকুত-মাওত ছাড়া তাঁরা মূর্ছিত হবে না। কেউ কেউ নবী-রাসূল ও শহীদদেরকেও এর অন্তর্ভুক্ত করেছেন। মূলত আল্লাহ তাআলাই ভালো জানেন কে কে ব্যতিক্রম থাকবে। -অনুবাদক
একদল ওলামায়ে কেরাম বলেছেন যে, যারা আরশ বহন করবে, আটজন ফেরেশেতা, তারা এর মধ্যে থাকবে না। কিন্তু কেউ কেউ বলেছেন, তারাও এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত হবে।
প্রিয়ভাই! এটি মূলত তাফসিরের বিষয়। কোরআন হাদিসে সরাসরি এব্যাপারে কোনো বক্তব্য উদ্বৃত হয়নি। তবে আহলুত তাহকিক (মুহাক্বিক) ওলামায়ে কেরাম বলেছেন যে, আরশ বহনকারী যে আটজন ফেরেশতা রয়েছেন, তাঁরা সেই দলের অন্তর্ভুক্ত হবেন, আল্লাহর চাওয়ায় যাঁদের মৃত্যু হবে না। এই তাফসির থেকে এতটুকু বোঝা যায় বা উপলব্ধি করা যায় যে, আল্লাহ তায়ালার আরশ ধ্বংস হবে না। তবে স্মরণ রাখতে হবে যে, এটি মুহাক্কিক তাফসিরকারকদের তাফসির। এর পক্ষে সরাসরি কোরআন বা হাদিসের কোনো আয়াত বা দলিল নেই।
আল্লাহই ভালো জানেন।
সম্মানিত দ্বীনি ভাই! আপনি যেই বিষয়টি জানতে চেয়েছেন সেটি নিশ্চয়ই জানার প্রয়োজন আছে। কিন্তু সাধারণ মানুষের জন্য এই জাতীয় বিষয় অনর্থক বিষয়ের আন্তর্ভূক্ত। কেননা এজাতীয় বিষয় জানার সাথে আমাদের আমলী জিন্দেগীর কোনো সম্পর্ক নাই। বরং আমাদের আমাল কি করে সুন্দর হয়ে সেই বিষয়ে চিন্তা করা দরকার। হাদিসে এজতীয় অনর্থক বিষয় পরিহার করতে নির্দেশ করা হয়েছে। রাসূলুল্লাহ সা. ইরশাদ করেন,
مِنْ حُسْنِ إِسْلَامِ الْمَرْءِ تَرْكُهُ مَا لَا يَعْنِيهِ. رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ، وقَالَ: حَسَنٌ.
কোনো ব্যক্তির ইসলামের অন্যতম সৌন্দর্য হলো অর্থহীন কথা বা কাজ ত্যাগ করা।’ (তিরমিজি, হাদিস : ২৩১৮)।
কাজেই আমাদের উচিত অর্থক বিষয় সম্পর্কে জ্ঞান লাভের আগে আমাদের দৈনন্দিন জীবনে যে সকল বিষয় গুরুত্ব পূর্ণ সেগুলো জানার চেষ্টা করা। আল্লাহ তায়ালা তাওফিক দান করুন।
والله اعلم بالصواب
মুফতি সাইদুজ্জামান কাসেমি
শিক্ষক, জামিয়া ইসলামিয়া ইবরাহিমিয়া দারুল উলুম মেরাজনগর, কদমতলী, ঢাকা।
মন্তব্য (0)
কোনো মন্তব্য নেই। প্রথম মন্তব্য করুন!
মন্তব্য করতে লগইন করুন
এ সম্পর্কিত আরও জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর
মাসায়েল-এর বিষয়াদি
আল কুরআনুল কারীম
৪
হাদীস ও সুন্নাহ
৬
তাসাউফ-আত্মশুদ্ধি । ইসলাহী পরামর্শ
৩
শরীআত সম্পর্কিত
১৪
ফিতনাসমুহ; বিবরণ - করণীয়
২
আখিরাত - মৃত্যুর পরে
৩
ঈমান বিধ্বংসী কথা ও কাজ
৬
ফিরাকে বাতিলা - ভ্রান্ত দল ও মত
২
পবিত্রতা অর্জন
৮
নামাযের অধ্যায়
১৯
যাকাত - সদাকাহ
৫
রোযার অধ্যায়
৬
হজ্ব - ওমরাহ
২
কাফন দাফন - জানাযা
৫
কসম - মান্নত
১
কুরবানী - যবেহ - আকীকা
৪
বিবাহ শাদী
৮
মীরাছ-উত্তরাধিকার
২
লেনদেন - ব্যবসা - চাকুরী
৯
আধুনিক মাসায়েল
৬
দন্ড বিধি
২
দাওয়াত ও জিহাদ
৩
ইতিহাস ও ঐতিহ্য
৬
সীরাতুন নবী সাঃ । নবীজীর জীবনচরিত
৩
সাহাবা ও তাবেঈন
৩
ফাযায়েল ও মানাকেব
৩
কিতাব - পত্রিকা ও লেখক
৩
পরিবার - সামাজিকতা
৭
মহিলা অঙ্গন
২
আখলাক-চরিত্র
২
আদব- শিষ্টাচার
১২
রোগ-ব্যধি। চিকিৎসা
২
দোয়া - জিকির
২
নাম। শব্দ জ্ঞান
৩
নির্বাচিত
২
সাম্প্রতিক
১
বিবিধ মাসআলা
১