আপনার জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর

সকল মাসায়েল একত্রে দেখুন

চাকুরীর র‍্যাংক (rank) বাড়ানোর ‍উদ্দেশ্যে হিজাব পরিহার করা

প্রশ্নঃ ২৩১৩৩. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, আমার একটা দীনি উত্তর খুব জরুরী ভিত্তিতে দরকার। উত্তর টা আমি একজন আহলে সুন্নাহ ওয়াল জামাত এর কোনো বিজ্ঞ আলেম দিলে আমি খুবি উপকৃত হব। আমার এক মুসলিম বোন ডাক্তার এবং আর্মি অফিসার।তার সকল যোগ্যতা আছে চাকরি র promotion এর জন্য। কিন্তু হিজাব পড়ে দেখে ওনার প্রমোশন দিবে না। এখন অনেকে বলতেসে কিছুদিন হিজাব খুলে রেখে rank টা পড়ে পরে আবার হিজাব শুরু করতে।বিপদ আপদ আল্লাহ বুঝে।তাই এভাবে অল্প দিনের জন্য হিজাব খুললে অসুবিধা নাই।আর হিজাব না খুললে চাকরি ছেরে দিতে।যেহেতু আর্মি তে হিজাব allowed না।সরকারি চাকরি এখন ছেড়ে দিবে কি দিবে না...পারিবারিক চাপ...সরকারি চাকরি...র একবার হিজাব খুললে অনেক বড় অফিসার হতে পারবে এই সেই সবাই বুঝাছে।মাঝে মধ্যে হিজাব খুলবে আবার পরবে এই করে অনেক দুর যাওয়া যাবে এসব সবাই বুঝাছে।এখানে উল্লেখ্য যে আর্মি র পোশাক শার্ট প্যান্ট এবং হিজাব allowed না.please আমি আশা করি মুসলিম বাংলার কোণ অভিজ্ঞ আলেম উত্তর দিবেন.,

২৭ এপ্রিল, ২০২৪

Dhaka, Bangladesh

উত্তর

و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم


সম্মানিত প্রশ্নকারী! আপনার প্রশ্নের সাথে অনেকগুলো বিষয় সংশ্লিষ্ট তাই। সবগুলো বিষয়কে আমরা আলাদা আলাদা শিরোনামে উপস্থাপনের চেষ্টা করবো। তাছাড়া আপনি যেহেতু বিস্তারতি উত্তর চেয়েছেন সঙ্গত কারণেই উত্তরটি দীর্ঘ হতে পারে ।

১.পর্দা
নাহমাদুহু ওয়া নুসাল্লি আলা রাসূলুহিল কারীম। আম্মা বাদ। পর্দার বিধান ইসলামের এক চিরন্তন ও সার্বজনীন বিধান। সাধারণ সমাজ ব্যবস্থা এবং উম্মতের মায়েদের জন্য অনেক বড় ইহসান। এই বিধানের মাধ্যমে মূলত ইসলামি শরিয়তের যর্থাথতা, পরিপূর্ণতা এবং উন্নত রুচিশীলতার স্ফুরণ ঘটেছে। পর্দা নারী জাতির নিরাপত্তার একমাত্র প্রতীক। নারীর মর্যাদা এবং ইজ্জত ও ইফ্ফতের প্রধান সোপান। কোরআনুল কারীমের বিভিন্ন স্থানে আল্লাহ তায়ালা পর্দার গুরুত্ব, প্রয়োজনীয়তা এবং পর্দা লঙ্ঘণের ভয়াবহতা সম্পর্কে আলোচনা করেছেন। হাদিস শরিফের অসংখ্য বর্ণনায়ও রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিষয়টি সবিস্তারে উল্লেখ করেছেন। কিন্তু আধুুনিক শিক্ষিত সমাজ এবং ধর্মীয় শিক্ষায় শিক্ষিত ও স্বশিক্ষিত একটি বিশেষ শ্রেণি, ‘ইসলামই সর্বাধুনিক জীবনব্যবস্থা’ এই চিরন্তন সত্য বাণীর আড়ালে ভিন্ন কিছু খোঁজার চেষ্টা করেন। ‘একাবিংশ শতাব্দির এই যুগে, বৈশি^ক উন্নতির এই সময়ে নারীদের ঘরে বসিয়ে রাখার কোনো সুযোগ নেই! এটা পশ্চাৎপদতা!! এটা উন্নয়ন বিমুখতা!!! ইত্যদি মুখরোচক শ্লোগান তুলেও তারা নারীদের উন্মুক্ত চলাফেরা ও পুরুষের সমন্বিত কর্মক্ষেত্রের সুযোগ করে দিচ্ছেন। ইদানিংকালে সমাজ ও রাষ্ট্রের কোনো কোনো কর্তা ব্যক্তিরাও উম্মুল মুমিনিন হযরত খাদিজা রা. এর ব্যবসা করা এবং যুদ্ধক্ষেত্রে হযরত আয়েশা রা. এর সহযোগিতা করাকে নারীদের অবাদে চলাফেরা ও পুরুষের সাথে সমানতালে কর্মক্ষেত্রে অংশগ্রহনের প্রমাণ হিসেবে পেশ করতে চাচ্ছেন। যার ফলে পর্দার বিষয়টি অনেক গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
শরিয়ত যদিও মহিলাদের কর্মক্ষেত্র হিসেবে তাদের গৃহকেই নির্বাচন করেছে, কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে নারীরা আর ঘরে বসে নেই। বরং প্রতিনিয়ত তারা বাইরে যাতায়াত করেই চলছে। তাই প্রশ্ন দাঁড়িয়েছে, যে মহিলাদের পর্দা বা হিযাব কতটুকু?
উন্মুক্ত স্থানে, পরপুরুষের সামনে, স্কুল-কলেজ, অফিস আদালতে তারা কি চেহারা খুলতে পারবে? কেননা অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে এসকল ক্ষেত্রে অনেক নারীই চেহারা খুলতে অস্বীকৃতি জানানোর কারণে কিংবা মুখ ঢেকে রাখার কারণে হেনস্তার শিকার হয়েছেন। নিন্মোক্ত আলোচনায় আমরা বিষটি সমাধানের চেষ্টা করবো ইনশাআল্লাহ।
পর্দাই নারীর ইজ্জত-আবরুর রক্ষাকবচ
পর্দা সম্পর্কিত সর্বপ্রথম আয়াত হচ্ছে সুরা আহযাবের ৩৩ নং আয়াত। উক্ত আয়াতে আল্লাহ তায়ালা প্রত্যক্ষভাবে নবীপত্মীদের এবং প্ররোক্ষভাবে উম্মতের সকল নারীদের সম্ভোধন করে নির্দেশ দিয়েছেন
وَقَرْنَ فِي بُيُوتِكُنَّ وَلَا تَبَرَّجْنَ تَبَرُّجَ الْجَاهِلِيَّةِ الْأُولَى
অর্থাৎ তোমরা তোমাদের গৃহে অবস্থান কর এবং প্রাচীন জাহেলী যুগের নারীদের ন্যায় সাজ-সজ্জা প্রদর্শন করে বাইরে বেরিয়ে পড়ো না। (সুরা আহযাব, আয়াত:৩৩) এই আয়াতে আল্লাহ তায়ালা নারী জাতির সৃষ্টির মৌলিক উদ্দেশ্যের প্রতি ইঙ্গিত করেছেন। এবং আয়াতের শেষাংশে একথাও বলে দিয়েছেন যে, ‘হে নবীর পরিবার!
إِنَّمَا يُرِيدُ اللَّهُ لِيُذْهِبَ عَنْكُمُ الرِّجْسَ أَهْلَ الْبَيْتِ وَيُطَهِّرَكُمْ تَطْهِيرًا
নিশ্চয় আল্লাহ তায়ালা তোমাদের থেকে অপবিত্রতা দূর করে তোমাদের পুত-পবিত্র করতে চান। আয়াতের প্রথমাংশ এবং শেষাংশ দ্বারা একথাই প্রমাণিত হয় যে, নারী জতির প্রবিত্রতা একমাত্র পর্দার মাঝেই নিহিত। পর্দাই নারীর ইজ্জতের রক্ষাকবচ।

চেহারারও পর্দা আছে

এক. কুরআনুল কারীমের সুরাতুল আহযাবের ৫৯নং আয়াত আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন,
يَاأَيُّهَا النَّبِيُّ قُلْ لِأَزْوَاجِكَ وَبَنَاتِكَ وَنِسَاءِ الْمُؤْمِنِينَ يُدْنِينَ عَلَيْهِنَّ مِنْ جَلَابِيبِهِنَّ ذَلِكَ أَدْنَى أَنْ يُعْرَفْنَ فَلَا يُؤْذَيْنَ وَكَانَ اللَّهُ غَفُورًا رَحِيمًا (৫৯)
অর্থ: হে নবী! আপনি আপনার স্ত্রী, কন্যা এবং জগতের সকল নারীদের লক্ষ করে বলুন, তারা যেন তাদের চাদরের কিয়দাংশ নিজেদের ওপর টেনে দেয়। এতে তাদের চেনা সহজ হবে। ফলে তাদের উত্যক্ত করা হবে না। আর নিশ্চয় আল্লাহ ক্ষমাশীল,পরম দয়ালু’।
এই আয়াতে চেহারার পর্দা সংশ্লিষ্ট শব্দ হচ্ছে جَلَابِيبِ শব্দটি। তাই প্রথমে আমরা جَلَابِيبِ শব্দের মৌলিক অর্থ জেনে নিব।
جَلَابِيبِ কাকে বলে
جَلَابِيبِ শব্দটিجلباب শব্দের বহুবচন। আল্লামা রাগেব ইস্পাহানি রহ. (মৃত: ৫০৬) তার কুরআনিক অভিধানগ্রন্থ (المفردات في غريب القرآن)- এ جَلَابِيبِ শব্দের আনুবাদ করেছেন الخُمُرُ বলে। (আলমুফাদাত ফি গারিবিল কুরআন, পৃষ্ঠা: ১০২ মাকতাবা তাওফিকিয়্যাহ) আর তাঁরই ভাষ্যমতে
الخمار في التعارف إسما لما تغطي به المرأة رأسها
অর্থাৎ খিমার বলা হয় এমন কাপড় যা দিয়ে মহিলারা মাথা ঢেকে রাখে। (আলমুফরাদাত,পৃষ্ঠা:১৬৫)
আরবি ভাষার বিখ্যাত অভিধানগ্রন্থ ‘লিসানুল আরবে’ جلباب শব্দে অর্থে বলা হয়েছে,
الجلباب: ثوب أوسع من الخمار دون الرداء. تغطي به المرأة رأسها و صدرها.
অর্থাৎ جلباب বলা হয় এমন কাপড় যা ওড়না থেকে বড় এবং চাদর থেকে ছোট। যা দিয়ে মহিলারা নিজেদের মাথা ও বক্ষাদেশ ঢেকে রাখে। (লিসনুলআরব: ১/১৬২, দারুলহাদিস)
উপরোক্ত আলোচনা থেকে একথা প্রতিয়মান হয় যে, جلباب বলা হয় ওই কাপড় যা দিয়ে মহিলারা মাথা ও বক্ষাদেশ ঢেকে রাখে ।

সাহাবায়ে কেরামের ব্যাখা ও আমল:
এখন আমারা দেখব যে উক্ত আয়াত অবতীর্ণ হওয়ার পর সাহাবায়ে কেরাম রা. এই আয়াতের কী ব্যাখ্যা করেছেন এবং তারা এর ওপর কিভাবে আমল করেছেন।

(এক.)
قَالَ عَلِيُّ بْنُ أَبِي طَلْحَةَ عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ أَمَرَ اللَّهُ نِسَاءَ الْمُؤْمِنِينَ إِذَا خَرَجْنَ مِنْ بُيُوتِهِنَّ فِي حَاجَةٍ أَنْ يُغَطِّينَ وُجُوهَهُنَّ مِنْ فَوْقِ رُؤُوسِهِنَّ بِالْجَلَابِيبِ وَيُبْدِينَ عَيْنًا وَاحِدَةً
আলি ইবনে আবু তালহা হযরত ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণনা করে বলেন, আল্লাহ তায়ালা মুসলিম মহিলাদের এই নির্দেশ দিয়েছেন, তারা যখন বিশেষ কোন প্রয়োজনে ঘর থেকে বের হবে তখন যেন মাথায় কাপড় দিয়ে তাদের চেহারা ঢেকে বের হয় এবং (পথ চলার জন্য) এক চোখ খোলা রাখে।

(দুই.)
ইমাম মুহাম্মাদ ইবনে সিরিন রহ. বলেন,
سَأَلْتُ عَبِيدَةَ السَّلْمَانِيَّ عَنْ قول الله عز وجل: يُدْنِينَ عَلَيْهِنَّ مِنْ جَلَابِيبِهِنَّ فَغَطَّى وَجْهَهُ وَرَأْسَهُ وَأَبْرَزَ عَيْنَهُ الْيُسْرَى
অর্থ: আমি আবিদা সালমানিকে এই আয়াত সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলাম। তিনি (আমাকে বুঝানোর জন্য) তার চেহারা এবং মাথা ঢেকে দিলেন এবং বাম চোখ খোলা রাখলেন।

(তিন.)
হযরত ইকরামা রহ. বলেন,
تُغَطِّي ثُغْرَةَ نَحْرِهَا بِجِلْبَابِهَا تُدْنِيهِ عَلَيْهَا
অর্থ: মহিলারা মাথার কাপড় দিয়ে তাদের গলার নিচ পর্যন্ত ঢেকে রাখবে। (তাফসিরে ইবনে কাসির-৬/৫০৩, রুহুল মা‘আনি-২২/৩৫৫ দারুলহাদিস)

(চার.)
আম্মাজান হযরত আয়েশা রা. ইফকের দীর্ঘ হাদিস বর্ণনা করে বলেন,
فَبَيْنَا أَنَا جَالِسَةٌ فِي مَنْزِلِي غَلَبَتْنِي عَيْنِي فَنِمْتُ وَكَانَ صَفْوَانُ بْنُ الْمُعَطَّلِ السُّلَمِيُّ ثُمَّ الذَّكْوَانِيُّ مِنْ وَرَاءِ الْجَيْشِ فَأَدْلَجَ فَأَصْبَحَ عِنْدَ مَنْزِلِي فَرَأَى سَوَادَ إِنْسَانٍ نَائِمٍ فَأَتَانِي فَعَرَفَنِي حِينَ رَآنِي وَكَانَ رَآنِي قَبْلَ الْحِجَابِ فَاسْتَيْقَظْتُ بِاسْتِرْجَاعِهِ حِينَ عَرَفَنِي فَخَمَّرْتُ وَجْهِي بِجِلْبَابِي وَ وَاللَّهِ مَا كَلَّمَنِي كَلِمَةً وَلَا سَمِعْتُ مِنْهُ كَلِمَةً غَيْرَ اسْتِرْجَاعِهِ
অর্থ: আমি আমার জায়গায় বসা ছিলাম। এক সময় আমার চোখ দুটি নিদ্রাচ্ছন্ন হয়ে পড়ল এবং আমি ঘুমিয়ে গেলাম। সফওয়ান ইবনে মুয়াত্তাল আস সুলামি জাকওয়ানি ছিল বাহিনীর পিছনে গমনকারী। সে যখন আমার অবস্থানস্থলের নিকট পৌঁছল তখন একজন ঘুমন্ত মানুষের আকৃতি দেখতে পেল। এরপর সে আমার নিকট এসে আমাকে চিনে ফেলল। কারণ পর্দা অবতীর্ণ হওয়ার পূর্বে সে আমাকে দেখেছিল। সে তখন ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন বলে উঠল,যার দরুন আমি ঘুম থেকে জেগে উঠি এবং ওড়না দিয়ে আমার চেহারা ঢেকে ফেলি। আল্লাহর কসম আমি তার সাথে কোনো কথা বলিনি এবং ‘ইন্নালিল্লাহি’ বলা ছাড়া তার আর কোনো শব্দও আমি শুনিনি। অন্য রেওয়ায়েতে আছে আমি নিজেকে আবৃত করে ফেলি। (সহিহুল বুখারি-হাদিস নং ৪৭৫০, মাকতাবা শামেলা, সুনানুত তিরমিজি হাদিস নং-৩১৭৯)


(পাঁচ.)
উম্মুল মুমিনিন হযরত আয়েশা রা. বলেন,
كنا مع النبي صلى الله عليه و سلم ونحن محرمون. فإذا لقينا الراكب أسدلنا ثيابنا من فوق رءوسنا. فإذا جاوزنا رفعناها
অথাৎ আমরা রাসূলুল্লাহ সা.-এর সাথে এহরাম অবস্থায় ছিলাম। তখন আমাদের পাশ দিয়ে অনেক কাফেলা অতিক্রম করত। তার যখন আমাদের সমানাসামনি চলে আসতো তখন আমরা সকলেই চেহারার ওপর উড়না টেনে দিতাম। তারা চলে গেলে তা আবার সরিয়ে ফেলতাম। (ইবনেমাজাহ্ হাদিস নং-২৯৩৫, দারাকুতনি হাদিস নং-২৭৯৫ মাকতাবা শামেলা)

(ছয়.)
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রা. বলেন,
قام رجل فقال يا رسول الله ماذا تأمرنا أن نلبس من الثياب في الإحرام ؟ فقال النبي صلى الله عليه و سلم: ৃৃৃ.. ولا تنتقب المرأة المحرمة ولا تلبس القفازين
অর্থাৎ জনৈক ব্যক্তি দাঁড়িয়ে জিজ্ঞেস করল, হে আল্লাহর রাসূল এহরাম অবস্থায় আমরা কোন্ ধরনের পোশাক পরিধান করব? উত্তরে রাসূলুল্লাহ সা. এহরাম অবস্থায় নারী-পুরুষের পোশাক কী হবে সে সম্পর্কে আলোচনা করেছেন। এরপর তিনি বলেন, এহরাম পরিহিতা নারী নেকাব পরবে না এবং হাত মোজাও পরবে না।

(সাত.)
আল্লামা আবু বকর জাস্সাস রহ. (মৃত্যু: ৩৭০ হি.) তাঁর বিখ্যাত অমর গ্রন্থ ‘আহকামুল কুরআন’-এ উল্লেখ করেন,
في هذه الآية دلالة على أن المرأة الشابة مأمورة بستر وجهها عن الأجنبيينৃৃ. . وفيها دلالة على أن الأمة ليس عليها ستر وجهها وشعرهاৃৃৃ فجعل الستر فرقا يعرف به الحرائر من الإماء وقد روي عن عمر أنه كان يضرب الإماء ويقول: اكشفن رءوسكن ولا تشبهن بالحرائر.
অর্থাৎ, এ আয়াতে এই নির্দেশনা রয়েছে যে, স্বধীন যুবতি মহিলারা গায়ের মাহরাম পুরুষের সামনে নিজেদের চেহারা ঢেকে রাখার ব্যাপারে আদিষ্ট। ..... এবং এতে এই নির্দেশনাও রয়েছে যে, দাসি মহিলার জন্য চেহারা এবং চুল ঢেকে রাখা আবশ্যক নয়।................. সুতরাং চেহারা ঢেকে রাখা না রাখাকে স্বাধীন বা দাসি নারী চেনার মানদ- হিসেবে নির্ধারণ করা হয়েছে। এছাড়া বর্ণিত আছে, হযরত ওমর রা. দাসিদের (মাথা ও চেহারা ঢেকে রাখতে দেখলে) প্রহার করে বলতেন, অ্যাই! তোমরা তোমাদের মাথা খুলে রাখ, স্বাধীন নারীদের সাদৃশ্য গ্রহন করো না। (আহকামুল কুরআন ৩/৪৮৬ দারুলকুতুব আল্ ইলমিয়া)
পর্যালোচনা:
উপরোক্ত আয়াত, جلباب শব্দের আভিধানিক অর্থ, আয়াতের ব্যাখ্যায় সাহাবা এবং তাবেয়িদের বর্ণনা এবং আম্মাজান হযরত আয়েশা রা.-এর হাদিস থেকে একথাই প্রমানিত হয় যে, মহিলাদের চেহারাও হিজাবের অন্তর্ভূক্ত। গায়ের মাহরামের সামনে তা খোলা রাখা যাবে না।
( দুই)
وَإِذَا سَأَلْتُمُوهُنَّ مَتَاعًا فَاسْأَلُوهُنَّ مِنْ وَرَاءِ حِجَابٍ ذَلِكُمْ أَطْهَرُ لِقُلُوبِكُمْ وَقُلُوبِهِنَّ
অর্থ: তোমরা তাঁদের (নবিপত্নীদের) কাছে কোনো কিছু চাইলে পর্দার আড়াল থেকে চাও। এই বিধান তোমাদের এবং তাদের হৃদয়ের জন্য অধিকতর পবিত্রতার মাধ্যম। ( সুরা আহযাব, আয়াত: ৫৩)
আল্লামা হাফেয ইবনে কাসির রহ. এই আয়াতের তাফসিরে উল্লেখ করেন,‘ নবিগৃহে বিনাঅনুমতিতে প্রবেশে যেমনিভাবে তোমাদের নিষেধ করা হয়েছে; অনুরূপভাবে তোমাদের এই আদেশও দেয়া হচ্ছে যে, কখনো তাদের দিকে তাকাবে না। আর যদি তাদের নিকট তোমাদের কোনো কিছুর প্রয়োজন দেখা দেয় তাহলে তা পর্দার আড়াল থেকে চাবে।
এই আয়াত থেকেও বুঝা যায় মহিলাদের চেহারা পর্দার অন্তর্ভূক্ত। কেননা যেখানে সাহাবায়ে কেরামকে লক্ষ করে নবিপতিœদের দিকে তাকাতে নিষেধ করা হয়েছে; একান্ত প্রয়োজন হলে পর্দার আড়াল থেকে প্রয়োজন পুরণ করতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে এবং এটাকেই পবিত্রতার কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে, সেখানে ইসলামের এই ক্রন্তিকালে “মহিলাদের চেহারা হিজাবের অন্তর্ভূক্ত নয়” অথবা “তাদের চেহারা ঢেকে রাখা আবশ্যক নয়”-এজাতীয় কথা বড়ই হাস্যকর ও দুঃখজনক। আল্লাহ আমাদের হেফাজত করুন।

(তিন)

وَقُلْ لِلْمُؤْمِنَاتِ يَغْضُضْنَ مِنْ أَبْصَارِهِنَّ وَيَحْفَظْنَ فُرُوجَهُنَّ وَلَا يُبْدِينَ زِينَتَهُنَّ إِلَّا مَا ظَهَرَ مِنْهَا وَلْيَضْرِبْنَ بِخُمُرِهِنَّ عَلَى جُيُوبِهِنَّ
অর্থ: (হে নবি!) মুমিন নরীদের বলুন তারা যেন তাদের দৃষ্টি অবনত রাখে এবং লজ্জস্থান হেফাজত করে। আর সাধারণত যা প্রকাশ পেয়ে যায় তা ছাড়া নিজেদের সৌন্দর্য প্রদর্শন না করে এবং তাদের মাথার ওড়না বক্ষাদেশে ফেলে রাখে। (সুরা নুর আয়াত: ৩১)
এই আয়াতে ‘যিনত’ প্রদর্শন না করতে আল্লাহ তায়ালা নির্দেশ দিয়েছেন। অধিকাংশ তাফসিরবিদ ‘যিনত’ শব্দের অর্থ নিয়েছেন সাজ-সজ্জার স্থান। অর্থাৎ যেসকল অঙ্গে সাজ-সজ্জার অলংকার পরিধান করা হয়। (রুহুল মাআনি: ১৮/৪৪৯ দারুল হাদিস) তাহলে আয়াতের অর্থ এই দাঁড়ায় যে, সাজ-সজ্জার অঙ্গসমূহ প্রদর্শন না করা মহিলাদের জন্য ওয়াজিব (মারেফুল কোরআন: ৬/৪০১-মাকতাবা ইসলামিয়া ঢাকা)
আয়াতের এই অংশ থেকেও মহিলাদের চেহারা হিজাবের অন্তর্ভূক্ত হওয়া এবং পরপুরুষের সামনে চেহারা ঢেকে রাখার অপরিহার্যতা অনুধাবন করা যায়।

একান্ত প্রয়োজনে চেহারা খোলা

সুরা নুরের এই আয়াতে চেহারার পর্দার ব্যাপারে কিছুটা ব্যতিক্রম বিধান উল্লেখ করা হয়েছে। সেই ব্যতিক্রমটা হচ্ছে, إِلَّا مَا ظَهَرَ مِنْهَا বাক্যটি। আয়াতের প্রথমাংশে বলা হয়েছে নারীদের সাজ-সজ্জার কোনো অঙ্গ পরপুরুষের সামনে প্রদর্শন করা বৈধ নয়; অবশ্য যেসব অঙ্গ যেগুলো কাজকর্ম ও চলা-ফেরার সময় আপনা আপনি প্রদর্শিত হয়ে যায় সেগুলো পূর্বোক্ত বিধানের ব্যতিক্রম। প্রয়োজনের তাগিদে এগুলো প্রদর্শন করার মধ্যে কোনো গুনাহ নেই। (ইবনে কাসির ৬/৫০ দারুলহাদিস, মারেফুল কুরআন: ৬/৪০১ মাকতাবা ইসলামিয়া ঢাকা)
مَا ظَهَرَ مِنْهَا -দ্বারা উদ্দেশ্য কী?
مَا ظَهَرَ مِنْهَا দ্বারা কী উদ্দেশ্য তা নিয়ে কিছুটা ভিন্নমত রয়েছে।
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা.-এর মতে সেগুলো হলো, كالرداء والثياب বোরকা, লম্বা চাদর ইত্যাদি। সে হিসেবে আয়াতের অর্থ এই দাঁড়ায়, যে প্রয়োজনবশত বাইরে যাওয়ার সময় যেসব ওপরের কাপড় আবৃত করা সম্ভব নয় সেগুলো ব্যতিত সাজ-সজ্জার কোনো বস্তু প্রদর্শন করা জায়েয নয়।

কিন্তু হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা.-এর মতে مَا ظَهَرَ مِنْهَا দ্বারা وجهها وكفيها والخاتم মুখমন্ডল ও হাতের তালু এবং আংটি বুঝানো হয়েছে। কেননা নারী প্রয়োজনবশত বাইরে যেতে বাধ্য হলে কিংবা চলাফেরা ও লেনদেনের সময় মুখম-ল ও হাতের তালু আবৃত রাখা খুবই দুরূহ হয়ে পড়ে। অতএব হযরত ইবনে আব্বাস রা.-এর ব্যাখ্যা অনুসারে প্রয়োজনে পরপুরুষের সামনে চেহারা ও হাতের তালু খোলা রাখার অবকাশ আছে। (প্রাগুক্ত)

ইমাম বায়যাবি ও খাজেন রহ. এই আয়াতের তাফসিরে বলেন, নারীর আসল বিধান এই যে সে তার সাজ-সজ্জার কোনো কিছুই প্রদর্শন করবে না, আয়াতের উদ্দেশ্যও তাই মনে হয়। তবে চলাফেরা ও কাজকর্মে স্বভাবত যেগুলো খুলে যায় সেগুলো প্রদর্শন করতে পারবে। বোরকা, চাদর, চেহারা, ও হাতের তালু এগুলোর অন্তর্ভূক্ত। নারী কোনো প্রয়োজনে বাইরে বের হলে বোরকা, চাদর ইত্যাদি প্রদর্শিত হয়ে যাওয়াটা সুনির্দিষ্টি। লেনদের প্রয়োজনে কখনো কখনো চেহারা এবং হাতের তালু প্রদর্শিতা হয়ে পড়ে। এটাও ক্ষমারযোগ্য; গুনাহ নয়। (মারেফুল কুরআন: ৬/৪০২ মাকতাবা ইসলামিয়া ঢাকা)

ইমাম বায়যাবি রহ. উল্লেখ করেন,
والمستثنى هو الوجه والكفان لأنها ليست بعورة والأظهر أن هذا في الصلاة لا في النظر فإن كل بدن الحرة عورة لا يحل لغير الزوج والمحرم النظر إلى شيء منها إلا لضرورة كالمعالجة وتَحَمُّلِ الشهادة
অর্থাৎ সৌন্দর্য প্রদর্শনের বিধান থেকে চেহারা এবং দুই হাতের তালুর বিধান সতন্ত্র। কেননা এগুলো সতর নয়। তবে সুস্পষ্ট কথা হচ্ছে এটা নামাযের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। নামাযের বাইরে তাকানোর সাথে সংশ্লিষ্ট নয়। বরং স্বাধীন নারীর পুরো শরীরই সতর; পরপুরুষের জন্য তার শরীরের দিকে তাকানো জায়েয নাই। তবে একান্ত বাধ্যবাধকতা যদি হয়, যেমন চিকিৎসা অথবা সাক্ষ্য প্রদানের ক্ষেত্রে তাহলে তার অবকাশ আছে। (তাফসিরে বায়যাবি: ৪/৩৭৭ মাকতাবা শমেলা)

তাফসিরে রুহুল মাআনিতে আল্লামা আলুসি রহ. যাওয়াজের নামক কিতাবের উদ্ধৃতি দিয়ে إِلَّا مَا ظَهَرَ مِنْهَا-এর ব্যাখ্যা উল্লেখ করে বলেন,
ويكون المعنى أن ما ظهر منها من غير إظهار كان كشفته الريح مثلا فهن غير مؤاخذات به في دار الجزاء ، وفي حكم ذلك ما لزم إظهاره لنحو تحمل شهادة ومعالجة طبيب
অর্থাৎ مَا ظَهَرَ مِنْهَا -এর অর্থ হলো,শরীরের যেসকল অঙ্গ প্রদর্শন করা ছাড়াই আপনা আপনি প্রদর্শিত হয়ে যায়, যেমন বাতাসের কারণে কাপড় সরে যাওয়া ইত্যাদি, সেক্ষেত্রে তাকে আখেরাতে জিজ্ঞাসা করা হবে না। আদালতে সাক্ষ্য প্রদান, চিকিৎসা গ্রহন ইত্যাদিও এই বিধানের আওতাভূক্ত। (রুহুল মাআনি: ১৮/৪৫১ দারুলহাদিস)

হাদিসের আলোকে চেহারার পর্দা
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বস রা বর্ণনা করে বলেন,
قال المرأة عورة فإذا خرجت استشرفها الشيطان
অর্থ: রাসূলুল্লাহ সা.-এর এরশাদ করেন, মহিলারা হচ্ছে অরক্ষিত সম্পদ। তারা যখন বাইরে বের হয় তখন শয়তান তার দিকে উঁকিঝুঁকি দিতে থাকে। (সুনান আত তিরমিজি: হাদিস নং ১১৭৩)

হযরত আবু হোরায়রা রা. রাসূলুল্লাহ সা. থেকে বর্ণনা করেন,
فزنا العين النظر وزنا اللسان المنطق والنفس تمنى وتشتهي والفرج يصدق ذلك أو يكذبه
অর্থ: চোখের জিনা হলো দৃষ্টি দেয়া। মুখের জিনা হলো, কথা বলা। হৃদয় কামনা করে আর লজ্জাস্থান তা গ্রহন করে বা প্রত্যাখ্যান করে। (সহিহুল বুখারি হাদিস নং: ৬৬১২)
হযরত জরির ইবনে আব্দুল্লাহ রা. বলেন,
سَأَلْتُ رَسُولَ اللَّهِ -صلى الله عليه وسلم- عَنْ نَظَرِ الْفُجَاءَةِ فَأَمَرَنِى أَنْ أَصْرِفَ بَصَرِى
অর্থ: আমি রাসূলুল্লাহ সা.-কে অকষ্মিক দৃষ্টির ব্যাপারে জিজ্ঞেস করলাম। তিনি আমাকে আদেশ দিলেন যেন আমি আমার দৃষ্টি ফিরিয়ে রাখি। (সহিহুল মুসলিম হাদিস নং: ২১৫৯, মুসনাদ আহমাদ হাদিস নং ১৯১৬০ শামেলা ভার্সন)

রাসূলুল্লাহ সা. হযরত আলি রা.-কে উদ্দেশ্য করে বলেন,
"يا على لا تتبع النظرة النظرة ، فإن لك الاولى وليست لك الآخرة
অর্থ: হে আলি একবার দৃষ্টির পর তুমি দ্বিতীয়বার দৃষ্টি দিও না। কেননা প্রথম দৃষ্টি তোমর জন্য ক্ষমাযোগ্য কিন্তু দ্বিতীয় দৃষ্টি ক্ষমারযোগ্য নয়। (আবুদাউদ: হাদিস নং ২১৪৯ আহমাদ: হাদিস নং ২২৯৯১)

হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. বর্ণনা করে বলেন,
أردف رسول الله صلى الله عليه و سلم الفضل بن عباس يوم النحر خلفه على عجز راحلته وكان الفضل رجلا وضيئا فوقف النبي صلى الله عليه و سلم للناس يفتيهم وأقبلت امرأة من خثعم وضيئة تستفتي رسول الله صلى الله عليه و سلم فطفق الفضل ينظر إليها وأعجبه حسنها فالتفت النبي صلى الله عليه و سلم والفضل ينظر إليها فأخلف بيده فأخذ بذقن الفضل فعدل وجهه عن النظر إليها
অর্থ: বিদায় হজের দিন রাসূলুল্লাহ সা.ফজল ইবনে আব্বাসকে নিজের বাহনের পিছনে বসিয়েছিলেন। ফজল ছিলেন অত্যন্ত উজ্জল বর্ণের। রাসূলুল্লাহ সা. দাঁড়িয়ে লোকদের প্রশ্নের জবাব দিচ্ছিলেন। অগত্য খাসআম গোত্রের একজন সুন্দরী মহিলা এসে রাসূলুল্লাহ সা.-কে মাসয়ালা জিজ্ঞেস করল। (পিছন থেকে) ফজল তার দিকে তাকাচ্ছিলেন। তার সৌন্দর্য্যে তিনি বিমুগ্ধ হয়ে গেলেন। রাসূলুল্লাহ সা. ফজলের দিকে তাকিয়ে দেখলেন তিনি মহিলার দিকে তাকিয়ে আছেন। তাই রাসূলুল্লাহ সা. পিছনে হাত ঘুরিয়ে তার থুতনিতে ধরে মহিলার দিক থেকে তার চেহারা ঘুরিয়ে দিলেন। (সহিহুল বুখারি: হাদিস নং ৬২২৮)

ফোকাহায়ে কেরামগণের অভিমত:
মালেকি মাজহাব:- মুফতি আযম পাকিস্তান, আল্লাম মুফতি মুহাম্মাদ শফি রহ. তাফসিরে মালেফুল কুরআনে উল্লেখ করেন ইমাম মালেক রহ.-এর প্রসিদ্ধ মত হচ্ছে, শরিয়তসম্মত কোনো ওজর ছাড়া পরনারীর (গায়ের মারহাম মহিলা) চেহারা ও হাতের তালুর দিকে দৃষ্টি দেয়া নাজায়েয।

শাফেয়ী মাজহাব:- যাওয়াজের কিতাবে আল্লাম ইবনে হাজার মক্কি রহ. ইমাম শাফেয়ী রহ.-এর মত উল্লেখ করেছেন যে; মহিলাদের চেহারা ও হাতের তালু যদিও সতরের অন্তর্ভূক্ত নয়, ফলে সেগুলো খোলা রেখে নামাজ পড়লে নামাজ সহীহ হয়ে যাবে তথাপিও গায়ের মাহরাম পুরুষের জন্য শরিয়ত সম্মত কারণ ছাড় তার প্রতি দৃষ্টি দেওয়া জায়েয নাই। (প্রাগুক্ত)

হাম্বলী মাজহাব:- ইমাম আহমাদ ইবনে হাম্বল রহ. হযরত ইবনে মাসউদ রা.-এর মত গ্রহন করে إِلَّا مَا ظَهَرَ مِنْهَا দ্বারা শুধুমাত্র কাপড় উদ্দেশ্য নিয়েছেন। (রুহুল মাআনি: ১৮/৪৫১ দারুলহাদিস)

হানাফি মাজহাব
হানাফি মাজহাবের প্রসিদ্ধ ও নির্ভরযোগ্য ফাতোয়াগ্রন্থ রদ্দুল মুহতার (যা সর্বমহলে ফতোয়া শামি নামে পরিচিত) ও তার মূলগ্রন্থ আদ্দুররুল মুহতারে এব্যাপারে বিশদভাবে আলোচনা করা হয়েছে। নি¤েœ সেখান থেকে দুইটি উদ্ধৃতি পেশ করা হলো।
এক.
(وتمنع) المرأة الشابة (من كشف الوجه بين الرجال) لا لانه عورة بل (لخوف الفتنة) كمسه وإن أمن الشهوة لانه أغلظ، ولذا ثبت به حرمة المصاهرة ৃ.ৃৃ. (ولا يجوز النظر إليه بشهوة ৃ.ৃৃ

অর্থাৎ যুবতী মহিলাকে পরপুরুষের সামনে চেহারা খোলা রাখতে বারণ করা হবে। এটা এজন্য নয় যে তা পর্দার অন্তর্ভূক্ত। বরং তা ফেতনা থেকে বেঁচে থাকার স্বার্থে। যেমনিভাবে তাকে স্পর্শ করা নিষেধ যদিও যৌনচাহিদার অশঙ্কা মুক্ত হোক না কেন। একারণেই দৃষ্টির মাধ্যমে হুরমতে মুসাহারা (বৈবাহিকসূত্র সম্পর্ক স্থাপন নিষিদ্ধ বিধান) সাবস্ত হয়। আর তার প্রতি যৌনচাহিদা নিয়ে তাকানোও জায়েজ নাই।
আল্লামা ইবনে আবিদিন শামি রহ. এই বক্তব্যের ব্যাখ্যায় বলেন,
وَالْمَعْنَى تُمْنَعُ مِنْ الْكَشْفِ لِخَوْفِ أَنْ يَرَى الرِّجَالُ وَجْهَهَا فَتَقَعُ الْفِتْنَةُ لِأَنَّهُ مَعَ الْكَشْفِ قَدْ يَقَعُ النَّظَرُ إلَيْهَا بِشَهْوَةٍ .......... كَمَا يُمْنَعُ الرَّجُلُ مِنْ مَسِّ وَجْهِهَا وَكَفِّهَا وَإِنْ أَمِنَ الشَّهْوَةَ ........ إلَّا لِحَاجَةٍ كَقَاضٍ أَوْ شَاهِدٍ بِحُكْمٍ أَوْ يَشْهَدُ عَلَيْهَا ...... وَكَخَاطِبٍ يُرِيدُ نِكَاحَهَا فَيَنْظُرُ وَلَوْ عَنْ شَهْوَةٍ بِنِيَّةِ السُّنَّةِ لَا قَضَاءِ الشَّهْوَةِ، ...... أَوْ مُدَاوَاتِهَا إلَى مَوْضِعِ الْمَرَضِ بِقَدْرِ الضَّرُورَةِ ....الخ
পরপুরুষের সামনে চেহারা প্রদর্শন করতে মহিলাদের বারণ করা হবে। কেননা হতে পারে এর কারণে ফেতনা সৃষ্টি হবে। কারণ অনেক সময় পরনারীর প্রতি দৃষ্টি যৌনচাহিদার কারণেই হয়ে থাকে।...যেমনিভাবে পরপুরুষকে পরনারীর চেহার বা হাতের তালু স্পর্শ করতে বারণ করা হবে। যদিও তা যৌনচাহিদা মুক্ত হোক না কেন।.......আল্লামা শামি রহ. আরো উল্লেখ করেন,‘তবে একান্ত প্রয়োজন হলে তার প্রতি দৃষ্টি দেয়া যাবে। যেমন বিচারক কিংবা সাক্ষীর ক্ষেত্রে সাক্ষ্য প্রদানের সময়। অনুরূপভাবে যদি কেউ কোনো নারীকে বিবাহের উদ্দেশ্যে দেখতে চায় তাহলেও তার চেহারা দেখতে পারবে।....... এমনিভাবে চিকিৎসার উদ্দেশ্যেও শারীরের প্রয়োজনীয় অংশ দেখতে পারবে। (আদ্দুররুল মুখতার: রদ্দুল মুতার সম্বলিত,২/৯৮ মাকতাবা রশিদিয়া-পাকিস্তান)

দুই

(و) ينظر (من الاجنبية) ولو كافرة. مجتبى (إلى وجهها وكفيها فقط) للضرورة ৃ. (فإن خاف الشهوة) أو شك (امتنع نظره إلى وجهها) فحل النظر مقيد بعدم الشهوة وإلا فحرام، وهذا في زمانهم، وأما في زماننا فمنع من الشابة ৃ. (إلا) ৃ (لحاجة) كقاض وشاهد يحكم (ويشهد عليهاৃ. (وكذا مريد نكاحها) ولو عن شهوة بنية السنة لا قضاء الشهوة (وشرائها ومداواتها ينظر) الطبيب (إلى موضع مرضها بقدر الضرورة) إذ الضرورات تتقدر بقدرها

এই আররি পাঠে আল্লামা হাসকাফি রহ. (তারবিরুল আবসারের আরবি পাঠসহ) হানাফি মাজহাবের বর্ণনা এভাবে দিচ্ছেন যে, পরনারীর চেহারা দেখার অবকাশের বিষয়টি যদিও যৌনচাহিদা না থাকার ওপর মওকুফ ছিল; কিন্তু বর্তমান সময়ে তা প্রযোজ্য নয়। কেননা বর্তমান সময় হচ্ছে ফেতনার সময়। কাজেই পরনারীর চেহারা দেখা না দেখা বতর্মানে শুধুমাত্র প্রয়োজনের ওপর মওকুফ থাকবে। অর্থাৎ একান্ত প্রয়োজন হলেই কেবল পরনারীর চেহারা দেখা যাবে অন্যথায় দেখা যাবে না। (প্রাগুক্ত:৯/৬১০)
উপমহাদেশের প্রখ্যাত আলেমেদ্বিন, বিশ^বরেণ্য ব্যক্তিত্ব, সাবেক বিচারপতি আল্লামা মুফতি তাকি উসমানি হাফিজাহুল্লাহু “সময়ের পরিবর্তনে আহকামের পরিবর্তন” এই শিরোনামে الحاجة -এর আলোচনা করতে গিয়ে উল্লেখ করেন,“এর দৃষ্টান্ত হলো মহিলার মুখম-ল খোলা রাখার ন্যায়। প্রকৃত বিধান হচ্ছে মহিলাদের জন্য চেহারা খোলা রাখা বৈধ নয়। কোনো কোনো ফকিহ এটাকে বৈধ বলেছেন। তবে বৈধতার দিকটি যদিও অপ্রণিধানযোগ্য; কিন্তু একান্ত প্রয়োজনে বিপরিত দিকটাকে প্রধান্য দেয়া হচ্ছে। একারনেই হানাফি ফোকাহয়ে কেরাম সাক্ষ্য প্রদান এবং হজের সফরে প্রচ- ভীড়ের সময় যখন চেহারা খোলা না রাখলে পথ চলা দুস্কর হয়ে পড়ে-এমন ক্ষেত্রে চেহারা খোলা রাখার অনুমতি দিয়েছেন। (উসুলুল ইফতা: পৃষ্ঠা-২৭১)

বাস্তবতার নিরিখে চেহারার পর্দার যৌক্তিকতা: স্কুল কলেজেও চেহারা ঢেকে রাখুন
উপরোক্ত মাজহাবগুলোর বর্ণনা থেকে এটাই বুঝে আসে যে, রাস্তা-ঘাট, আফিস-আদালত বা স্কুল কলেজেও মহিলারা চেহারা ঢেকে রাখবে। একান্ত প্রয়োজন ছাড়া চেহারা উন্মুক্ত করবে না। আর নিজেদের বাসা-বাড়িতে যদি কোনো গায়রে মাহরাম পুরুষ থাকে না, কাজেই সেখানে চেহারা ঢেকে রাখার প্রয়োজন নাই।

চিকিৎসার সার্থে পর্দা লঙ্ঘন করা:
চিকিৎসার জন্য মহিলা ডাক্তার পাওয়া না গেলে পুরুষ ডাক্তার দিয়ে চিকিৎসা কারানোর আবকাশ আছে। সেক্ষেত্রে যদি মহিলার শরীর দেখার প্রয়োজন হয় তাহলে পর্দা লঙ্ঘন করে হলেও চিকিৎসা করানো বৈধ। তবে সর্তক থাকতে হবে যেন একান্ত প্রয়োজনের অতিরিক্ত অঙ্গ প্রদর্শিত না হয়। প্রয়োজনাতিরিক্ত অঙ্গ দেখা জায়েজ নাই, তা হারাম
হানাফি মাজহাবের প্রসিদ্ধ ও সর্বজনস্বীকৃত ফিকহি মূলনীতি বিষয়ক কিতাব, আল আশবাহ ওয়ান নাজায়েরে-এর “প্রয়োজনের তাগিদে যা বৈধ তা প্রয়োজন পর্যন্ত সীমাবদ্ধ থাকবে”-এই শিরোনামে উল্লেখ আছে,
والطبيب إنما ينظر من العورة بقدر الحاجة
অর্থাৎ ডাক্তার প্রয়োজন অনুপাতে সতর দেখতে পারবে। (আল আশবাহ ওয়ান নাজায়ের পৃষ্ঠা: )
আল জাওহারাতুন্নাইয়্যেরাহ নামক কিতাবের --/--পৃষ্ঠায় এবং ফতোয় শামির --পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে,
( ويجوز للطبيب أن ينظر إلى موضع المرض منها ) أما إذا كان المرض في سائر بدنها غير الفرج فإنه يجوز له النظر إليه عند الدواء ؛ لأنه موضع ضرورة وإن كان في موضع الفرج فينبغي أن يعلم امرأة تداويها فإن لم توجد امرأة تداويها وخافوا عليها أن تهلك أو يصبيها بلاء أو وجع لا يحتمل ستروا منها كل شيء إلا الموضع الذي فيه العلة ثم يداويها الرجل ويغض بصره ما استطاع إلا من موضع الجرح ..... وقال ابن عابدين: والظاهر أن " ينبغي " هنا للوجوب

অর্থাৎ ডাক্তারের জন্য রোগাক্রান্ত স্থান দেখা জায়েজ আছে। আর যদি মহিলার লজ্জাস্থান ব্যতিত পুরো শরীর আক্রান্ত থাকে তাহলে চিকিৎসার প্রয়োজনে ডাক্তার তার দিকে তাকাতে পারবে। কেননা এটা প্রয়োজনের ক্ষেত্র। আর যদি খোদ লজ্জাস্থানই আক্রান্ত হয়, তাহলে কোনো মহিলাকে চিকিৎসা শিখেয়ে তাকে দিয়ে চিকিৎসা করাবে। তবে হ্যাঁ, যদি চিকিৎসায় সক্ষম এমন কোনো মহিলা পাওয়া না যায় এবং রুগীর মৃত্যুর আশঙ্কা হয় কিংবা রোগ বৃদ্ধি পেয়ে তার কষ্ট সহ্যসীমার বাইরে চলে যায় তাহলে তার পুরো শরীর ঢেকে দিয়ে শুধু রোগাক্রান্ত স্থানটি খোলা রেখে পুরুষ ডাক্তার চিকিৎসা করতে পারবে। তবে এক্ষেত্রেও আক্রান্ত স্থান ব্যতিত শরীরের অন্য সকল আঙ্গ থেকে চোখ নিচু করে (সরিয়ে) রাখতে হবে। দিবে।

وكذا إذا كان بها جرح أو قرح في موضع لا يحل للرجال النظر إليه فلا بأس أن تداويها إذا علمت المداواة فان لم تعلم تعلم ثم تداويها فان لم توجد أمرأة تعلم المداواة ولا امرأة تتعلم وخيف عليها الهلاك أو بلاء أو وجع لا تحتمله يداويها الرجل لكن لا يكشف منها لا موضع الجرح ويغض بصره ما استطاع لان الحرمات الشرعية جاز أن يسقط اعتبارها شرعا لمكان الضرورة
অনুবাদ:
(বাদায়েউস সানায়ে ৪/২৯৯ যাকারিয়া দেওবন্দ)

সম্মানিত ভাই/বোন!
পর্দা সক্রান্ত আলোচনার এখানেই ইতি টানছি।যতটুকু উল্লেখ করেছে তার পর্দা বিধানের কিয়দাংশই মাত্র। আমরা যদ্দুর জানি বাংলাদেরশের যেকোনো বাহিনীতেই চাকুরী করতে গেলে নারীদের জন্য পর্দার করার কোনো সুযোগ নেই। আমরা আমাদের অনেকেরই ধারণা শুধু চেহারা ঢাকলেই যেন পর্দা হয়ে যাবে! আসলে বিষয়টি তা নয়। যা আমাদের উপরোক্ত আলোচনা থেকে আশা করছি অনুধাবন করতে সক্ষম হয়েছেন।

দ্বিতীয় বিষয় হলো বাহিনীর ইউনিফর্ম:
মৃত্যু বা মারাত্মক কোন ক্ষতির আশঙ্কা ছাড়া সাধারণ অবস্থায় পুরুষের জন্য নারীর এবং নারীর জন্য পুরুষের পোশাক পরিধান করা হারাম। হযরত আবূ হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত তিনি বলেন,
لَعَنَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ الرَّجُلَ يَلْبَسُ لِبْسَةَ الْمَرْأَةِ، وَالْمَرْأَةَ تَلْبَسُ لِبْسَةَ الرَّجُلِ
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অভিসম্পাত করেছেন ওইসকল পুরুষকে যারা নারীদের পোশাক পরিধান করে এবং ওইসকল নারীদের যারা পুরুষের পোশাক পরিধান করে। (সুনানে আবু দাউদ ৪০৯৮; মুসনাদে আহমদ ২/৩২৫, হাদীস নং-৮৩০৯, সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস নং-৫৭৫২)
বুদ্ধিমান প্রশ্নকারীর কাছে আমাদের সবিনয় নিবেদন, তিনি নিজেই যেন নারীদের বাহিনীতে চাকুরীর বিষয়টির শরঈ দিক বিবেচনা করে নেন।

নারীদের জন্য মাহরাম ছাড়া কোথাও অবস্থান:
হযরত আবু সাঈদ খুদরী রাঃ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন,
عن أبي سعيد الخدري قال رسول الله صلى الله عليه و سلم لا يحل لإمرأة تؤمن بالله واليوم الآخر أن تسافر سفرا يكون ثلاثة أيام فصاعدا إلا ومعها أبوها أو ابنها أو زوجها أو أخوها أو ذو محرم منها
রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেনঃ আল্লাহ তাআলা এবং কিয়ামত দিবসের উপর ঈমান রাখে
এমন কোন মহিলার জন্য জায়েজ নয়, তিন দিন বা এর চেয়ে অধিক দিনের সফর করে অথচ তার সাথে তার পিতা, তার ছেলে, বা তার স্বামী বা তার ভাই কিংবা কোন মাহরাম না থাকে। {সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-৪২৩}
হয়তো একটা সময় গিয়ে নারীরা তাদের পরিবার/স্বামীসহ সফরসম দূরত্বে না গিয়েও বাহিনীতে চাকুরী করতে পারে।কিন্তু সেক্ষেত্রে অন্যসব বিধিনিষেধগুলোর কি হবে?

প্রিয় দ্বিনীভাই/বোন!
আমরা আমাদের আলোচনাকে দীর্ঘায়িত করতে চাচ্ছি না। কুরআন সুন্নাহ আমাদের যে নির্দেশ দিয়েছে এবং শিখিয়েছে তার আলোকে আমরা বর্তমানে আমরা কোনো নারীকেই এজতীয় পেশায় নিয়োজিত হবার অনুমতি দিতে পারি না। এক্ষেত্রে কেউ যদি না মানে তাহলে তিনি যেন আল্লাহ তায়ালার সাথে “বোঝাপড়া” করে নেন। কারণ আল্লাহ যেটাকে হারাম করেছেন সেটাকে আমরা হালাল করতে পারি না। আবার আল্লাহ যেটাকে হালাল করেছেন সেটাকে কেউ হারামও করতে পারেন না।
সুতরাং যেখানে এজাতীয় পেশায় নারীদের নিয়োজিত হওয়াই শরীয়ত অনুমোদিত নয় সেখানে হিজাব (যদিও এটাই পর্দা চুড়ান্ত নয়) পরিহার করা বা না করার প্রশ্নই থাকেনা!!

মোহতারাম প্রশ্নকারী!
“এখন অনেকে বলতেসে কিছুদিন হিজাব খুলে রেখে rank টা পড়ে পরে আবার হিজাব শুরু করতে।বিপদ আপদ আল্লাহ বুঝে।তাই এভাবে অল্প দিনের জন্য হিজাব খুললে অসুবিধা নাই।” প্রশ্নের এই অংশটুকু আমাদের হৃদয়কে আতঁকে দিয়েছে! যেখানে জাগতিক কোনো বিষয়ে পরিপক্ক জ্ঞান এবং গবেষণা না থাকলে আমরা সিদ্ধান্ত তো দূরে থাকুক নূন্যতম মন্তব্যও করতে রাজী নই সেখানে শরঈ বিষয়ে ফায়সালা দিয়ে দেওয়া!! আল্লাহ আমাদের হেফাজত করুন।

শেষ কথা: প্রশ্নে উল্লেখ আছে তিনি একজন ডাক্তার। ওই বোনের জন্য অসংখ্য মোবারকবাদ! কেননা একজন বিশেষজ্ঞ মহিলা ডাক্তার হিসেবে তিনি উক্ত না-জায়েজ কাজের সাথে জড়িত হওয়া ছাড়াই ইসলামী শরীয়ত মেনে ডাক্তারী পেশায় নিয়োজিত থেকে দেশ ও জাতির সেবার পাশাপাশি নিজের পর্যাপ্ত জীবিকাও উপার্জন করতে সক্ষম। কাজেই যেখানে তিনি আল্লাহ তায়ালার সকল বিধান মেনে দেশ ও জাতির সেবার পাশাপাশি নিজের পর্যাপ্ত জীবিকাও উপার্জন করতে সক্ষম সেখানে এতগুলো হারাম কাজের সাথে জড়িত হয়ে উক্ত চাকরি করা কি করে জায়েজ হতে পারে?

والله اعلم بالصواب

উত্তর দিয়েছেনঃ মুফতি সাইদুজ্জামান কাসেমি
শিক্ষক, জামিয়া ইসলামিয়া ইবরাহিমিয়া দারুল উলুম মেরাজনগর, কদমতলী, ঢাকা।

প্রসঙ্গসমূহ:

মন্তব্য ()

কোনো মন্তব্য নেই।

এ সম্পর্কিত আরও জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর

৩৪১৪৯

মায়ের মিশ্রিত পরিবেশে চাকরি করার কারণে ছেলে দাইয়ুস হয়ে যাবে কি?


২২ জুন, ২০২৩

ওয়েস্ট বেঙ্গল ৭৪২৩০৩

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ শাইখ উমায়ের কোব্বাদী

৪০৯৯৯

হারাম উপার্জন কারীর ঘরে দাওয়াত খাওয়া


২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৩

ঢাকা

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ মুফতি মোহাম্মদ আমীর হোসাইন

২৬৮০৮

পেশা হিসেবে খেলাকে গ্রহণ করা জায়েয হবে কি?


২২ ডিসেম্বর, ২০২২

বসুরহাট ৩৮৫০

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ শাইখ উমায়ের কোব্বাদী

৩৪০৫৪

ব্যাংকে পিয়ন পদে চাকরি করা কি হারাম?


২২ জুন, ২০২৩

ঢাকা

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ শাইখ উমায়ের কোব্বাদী

Logoমুসলিম বাংলা
play storeapp store
TopOfStack Software © 2025 All rights reserved. Privacy Policy