আপনার জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর

সকল মাসায়েল একত্রে দেখুন

স্বামীর অনুমতি ছাড়া নফল রোজা রাখার বিধান

প্রশ্নঃ ২১৫৫৯. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, হুজুর আমার কিছু প্রশ্ন ছিল.. আমার স্বামী সফরে থাকেন. উনি আমাকে নফল রোজা রাখতে বারণ করেছেন এই অবস্থায় উনার কথা মানা কি আবশ্যক.. দ্বিতীয়ত উনি আমার কিছু আত্মীয় স্বজনদের সঙ্গে কথা বলতে বারণ করেছেন এ অবস্থায় কি করবো

৭ জুলাই, ২০২৪
নান্দাইল

উত্তর

و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم


স্ত্রী সর্বদা স্বামীর হক পালনে সতর্ক থাকবে। তাই শরীয়তের বিধান অনুযায়ী স্বামীর অনুমতি ব্যতিত স্ত্রীর জন্য নফল রোযা রাখাও নিষেধ।

হাদীস শরীফে এসেছে-

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " لَوْ كُنْتُ آمِرًا أَحَدًا أَنْ يَسْجُدَ لأَحَدٍ لأَمَرْتُ الْمَرْأَةَ أَنْ تَسْجُدَ لِزَوْجِهَا " .

আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আমি যদি কাউকে অন্য কোন লোকের প্রতি সিজদা করার নির্দেশ দিতাম তাহলে অবশ্যই স্ত্রীকে তার স্বামীর প্রতি সিজদা করার নির্দেশ দিতাম। (তিরমিযি ১১৫৯)

অন্য এক হাদীসে এসেছে-

عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ أَبِي أَوْفَى قَالَ لَمَّا قَدِمَ مُعَاذٌ مِنْ الشَّامِ سَجَدَ لِلنَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ مَا هَذَا يَا مُعَاذُ قَالَ أَتَيْتُ الشَّامَ فَوَافَقْتُهُمْ يَسْجُدُونَ لِأَسَاقِفَتِهِمْ وَبَطَارِقَتِهِمْ فَوَدِدْتُ فِي نَفْسِي أَنْ نَفْعَلَ ذَلِكَ بِكَ فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَلَا تَفْعَلُوا فَإِنِّي لَوْ كُنْتُ آمِرًا أَحَدًا أَنْ يَسْجُدَ لِغَيْرِ اللهِ لَأَمَرْتُ الْمَرْأَةَ أَنْ تَسْجُدَ لِزَوْجِهَا وَالَّذِي نَفْسُ مُحَمَّدٍ بِيَدِهِ لَا تُؤَدِّي الْمَرْأَةُ حَقَّ رَبِّهَا حَتَّى تُؤَدِّيَ حَقَّ زَوْجِهَا وَلَوْ سَأَلَهَا نَفْسَهَا وَهِيَ عَلَى قَتَبٍ لَمْ تَمْنَعْهُ

আবদুল্লাহ বিন আবূ আওফা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, মুআয (রাঃ) সিরিয়া থেকে ফিরে এসে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে সিজদা করেন। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, হে মুআয! এ কী? তিনি বলেন, আমি সিরিয়ায় গিয়ে দেখতে পাই যে, তথাকার লোকেরা তাদের ধর্মীয় নেতা ও শাসকদেরকে সিজদা করে। তাই আমি মনে মনে আশা পোষণ করলাম যে, আমি আপনার সামনে তাই করবো। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, তোমরা তা করো না। কেননা আমি যদি কোন ব্যক্তিকে আল্লাহ ছাড়া অপর কাউকে সিজদা করার নির্দেশ দিতাম, তাহলে স্ত্রীকে নির্দেশ দিতাম তার স্বামীকে সিজদা করতে। সেই স্বত্তার শপথ, যাঁর হাতে মুহাম্মাদের প্রাণ! স্ত্রী তার স্বামীর প্রাপ্য অধিকার আদায় না করা পর্যন্ত তার প্রভুর প্রাপ্য অধিকার আদায় করতে সক্ষম হবে না। স্ত্রী শিবিকার মধ্যে থাকা অবস্থায় স্বামী তার সাথে জৈবিক চাহিদা পূরণ করতে চাইলে স্ত্রীর তা প্রত্যাখ্যান করা অনুচিত। [১৮৫৩] (ইবনে মাজাহ ১৮৫৩ নং হাদীস ১৩৩-১৩৪ নং পৃষ্ঠা)

স্বামী- স্ত্রী এক সাথে থাকলে যেহেতু স্ত্রী নফল রোজা রাখলে স্বামীর হক পালনে ত্রুটি আসতে পারে। আবার স্বামীর সহবাসেও বাঁধা আসতে পারে। তাই শরীয়তের বিধান অনুযায়ী স্বামীর অনুমতি ব্যতিত স্ত্রীর জন্য নফল রোযা রাখা নিষেধ। তবে যদি স্বামী দূরে থাকে সে ক্ষেত্রে নফল রোজা রাখলে স্বামীর হক পালনে ত্রুটি আসার সম্ভবনাই নেই। তাই স্বামী দূরে থাকলে স্ত্রীর জন্য নফল রোজা রাখার ক্ষেত্রে স্বামীর অনুমতি নেওয়া জরুরী নয়। তবে এ ক্ষেত্রেও অনুমতি নেওয়া উত্তম।

والله اعلم بالصواب

মোহাম্মদ আমীর হোসাইন, মুফতি ও মুহাদ্দীস, শাইখ আবু সাঈদ ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার, মোহাম্মাদপুর।
প্রসঙ্গসমূহ:

মন্তব্য (0)

কোনো মন্তব্য নেই। প্রথম মন্তব্য করুন!

মন্তব্য করতে লগইন করুন