আপনার জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর

সকল মাসায়েল একত্রে দেখুন

শ্বশুর-শাশুড়িকে কি বাবা-মা ডাকা নিষেধ?

প্রশ্নঃ ১৯৮৮৩. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, আশা করি আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছেন। আমার প্রশ্ন হলো. স্ত্রীর লালন পালন কারী পিতা মাতা (শ্বশুর শাশুড়ি) কে আব্বা আম্মা ডাকা যাবে কি না?

১৩ অক্টোবর, ২০২৩
Unayzah ৫৬৪৬৩

উত্তর

و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم


শশুর-শাশুড়িকে বাবা-মা ডাকা যাবে। বরং এটি সৌহার্দ্যতা ও উত্তম শিষ্টাচারের নিদর্শন। যেমন পবিত্র কোরআনে মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর স্ত্রীদেরকে মুমিনদের মা এবং ইব্রাহিম আলাইহিসসালামকে মুসলিম-উম্মাহর বাবা বলা হয়েছে।
النَّبِيُّ أَوْلَى بِالْمُؤْمِنِينَ مِنْ أَنفُسِهِمْ وَأَزْوَاجُهُ أُمَّهَاتُهُمْ নবী মুমিনদের নিকট তাদের নিজেদের অপেক্ষা অধিক ঘনিষ্ঠ এবং তাঁর স্ত্রীগণ তাদের মা ।
(সূরা আহযাব ৬)

مِّلَّةَ أَبِيكُمْ إِبْرَاهِيمَ هُوَ سَمَّاكُمُ الْمُسْلِمينَ
এটা তোমাদের বাবা ইব্রাহিমের মিল্লাত (ধর্মাদর্শ); তিনি পূর্বে তোমাদের নামকরণ করেছেন ‘মুসলিম’। (সূরা হাজ্জ ৭৮)

অনুরূপভাবে হাদীস এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর চাচী আবু তালিবের স্ত্রী আলী রাযি.এর মাকে মা বলে ডেকেছেন। তাঁর নাম ছিল ফাতিমা বিনতে আসাদ বিন হাশিম রাযি.।

ফাতিমা যখন মারা যান তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর ঘরে এসে তাঁর মাথার কাছে বসেন এবং বলেন,
رحِمَك اللَّهُ يا أمِّي كنتِ أمِّي بعدَ أمِّي تجوعينَ وتُشبِعينَني وتَعرَينَ وتُكسينني وتمنعينَ نفسَك طيِّبَها وتطعمينَني تريدينَ بذلِك وجهَ اللَّهِ
অর্থাৎ, ও আম্মা! আল্লাহ আপনার ওপর রহম করুন। আমার মায়ের পর আপনিই আমার মা ছিলেন। আপনি ক্ষুধার্ত থেকেও আমাকে পেট ভরে খাইয়েছেন, আপনি নিজে কাপড় না পরেও আমাকে কাপড় পরিয়েছেন, নিজেকে না দিয়ে আপনি আমাকে ভালো খাবার খাইয়েছেন, আপনি শুধু আল্লাহর সন্তুষ্টি ও আখেরাত চেয়েছিলেন। (মাজমাউযযাওয়াইদ ১৫৩৯৯)
সুতরাং বুঝা গেলো যে শ্বশুড়-শ্বাশুড়িকে আব্বু-
আম্মু বলে ডাকা যাবে।
[আহকামুল কুরআন, জাসসাস ৩/৩৫৪; সহীহ
বুখারী, হাদীস : ৬৭৬৬; ৬৭৬৮, ৪৩২৬, ৪৩২৭,৩৫০৮;
উমদাতুল কারী ১৬/৭৯; সহীহ মুসলিম, হাদীস :
১১২-১১৫; ইকমালুল মুলিম ১/৩১৯; তাফসীরে
রূহুল মাআনী ৯/২১০; তাফসীরে কুরতুবী ১২/৬৭;
ফাতহুল মুলহিম ১/২৩৬; মুসান্নাফ আবদুর
রাযযাক ৯/৪৯-৫২; মুসনাদে আহমদ ১/১৭৪, ৩/৮৯;
ফয়যুল কাদীর ৬/৪৬; কেফায়াতুল মুফতী ৯/১১৮]

والله اعلم بالصواب

মোহাম্মদ আমীর হোসাইন, মুফতি ও মুহাদ্দীস, শাইখ আবু সাঈদ ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার, মোহাম্মাদপুর।

মন্তব্য (0)

কোনো মন্তব্য নেই। প্রথম মন্তব্য করুন!

মন্তব্য করতে লগইন করুন