আপনার জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর

সকল মাসায়েল একত্রে দেখুন

প্রশ্নঃ ১৯৪৫০. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, আসসালামুয়ালাইকুম।কি কি লক্ষন দেখলে বুঝব যে আমি বদনজরে আক্রান্ত?

১৯ জুলাই, ২০২২
নারায়ণগঞ্জ ১৪০০

উত্তর

و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم





বদ নজরের লক্ষণ এবং নজরের চিকিৎসা।

[১] শরীরের সাধারণ দুর্বলতা থাকা, ক্ষুধা হ্রাস এবং বমি বমি ভাব।
[২]চেহারাতে ফ্যাকাশে ফিতে/ধূসর / হলুদ হয়ে যাওয়া।
[৩]স্থায়ীভাবে উচ্চ শারীরিক তাপমাত্রা/ জ্বর থাকা [থার্মোমিটার না উঠা]
[৪]কোন কারণ ছাড়াই কান্নাকাটি করার আশ্বাস।
[৫]কনস্ট্যান্ট জাগ্রত (ঘুমিয়ে আছেন কিন্তু মনে হচ্ছে জাগ্রত)
[৬]উভয় হাত এবং পায়ের মধ্যে প্রায়ই ব্যথা, শরীরের ব্যথা আবর্তিত, শরীরের ব্যথা এক জায়গায় স্থির না হওয়া।
[৭]চিরস্থায়ী মাথাব্যাথা ( সব সময় মাথাব্যথা)
[৮] বিভিন্ন অসুখ লেগে থাকা, অনেক চিকিৎসার পরেও ভালো না হওয়া (ঠান্ডা,কাশি, জ্বর)
[৯] পঞ্চমুখী মমুলাট,( কাজে মন না বসা, লেখাপড়া মন না বসা, নামাজ, যিকিরে মন না বসা)
[১০] মহিলাদের/পুরুষদের অত্যধিক চুল পড়ে যায়(যা শ্যাম্পু ব্যবহার করেও কাজ হয়না)
[১১] আত্মীয়, বন্ধু ও সহকর্মীদের সাথে দেখা করতে অপছন্দ লাগা।
[১২]ব্যবসা, কাজ বা পেশায় বিঘ্ন এবং ক্ষতি, ঝামেলা লেগে থাকা।
[১৩] বুকে ধড়ফড় করা, দমবন্ধ বা অসস্তি লাগা।
[১৪] পেটে প্রচুর গ্যাস জমে থাকা।
[১৫] মেজাজ খিটখিটে থাকা, কোন কারণ ছাড়াই রেগে যাওয়া।
[১৬]একটি প্রাথমিক / বিশেষজ্ঞ কাজ সম্পাদন করতে অক্ষম। যদি কেউ তার প্রাথমিক / বিশেষজ্ঞ কাজ করতে ইচ্ছুক হয়, তবে সে অত্যন্ত অলস হবে অথবা সেখান থেকে অসুস্থ হয়ে পড়া।

বদ নজরের চিকিৎসা
কোন ব্যক্তির নযর লেগেছে তা যদি জানা যায়, তবে তাকে ওযু করতে বলতে হবে। অতঃপর উক্ত ওযুর পানি দ্বারা বদনযরে আক্রান্ত ব্যক্তিকে গোসল করাতে হবে। (ছহীহ মুসলিম)
দ্বিতীয়ত :- নিম্নলিখিত আয়াত ও দু’আ সমূহ পড়ে বদনযরে আক্রান্ত ব্যক্তিকে ঝাড়-ফুঁক করবে।
(১)সূরা ফাতিহা,
(২) আয়াতুল কুরসী (সূরা বাক্বারার ২৫৫নং আয়াত)
(৩) সূরা বাক্বারার শেষের দুটি আয়াত (২৮৫ ও ২৮৬ নং আয়াত)
(৪) সূরা ইখলাছ
(৫) সূরা ফালাক
(৬) সূরা নাস
(৭) এই দু’আটি
بِسْمِ اللهِ أرْقِيْكَ مِنْ كُلِّ شَيْءٍ يُؤْذِيْكَ وَمِنْ شَرِّ كُلِّ نَفْسٍ أوْ عَيْنٍ حاَسِدٍ اللهُ يَشْفِيْكَ بِسْمِ اللهِ أرْقِيْكَ
“আমি আল্লাহর নাম নিয়ে তোমাকে ঝাড়-ফুঁক করছি- তোমাকে কষ্টদানকারী সকল বস্তু হতে, এবং প্রত্যেক ব্যক্তির অথবা হিংসুক ব্যক্তির নযরের অনিষ্ট থেকে। আল্লাহ্ তোমাকে আরোগ্য দান করুন। আল্লাহর নাম নিয়ে তোমাকে ঝাড়-ফুঁক করছি।” (বুখারী ও মুসলিম)
(৮) এই দু’আটি
أعُوذُ بِكَلِماَتِ اللهِ التاَّمَّةِ مِنْ كُلِّ شَيْطاَنٍ وَهاَمَّةٍ وَمِنْ كُلِّ عَيْنٍ لاَمَّةٍ
“আল্লাহর পরিপূর্ণ বাণী সমূহের মাধ্যমে আমি আশ্রয় প্রার্থনা করছি সকল প্রকার শয়তান থেকে, বিষধর প্রাণীর অনিষ্ট থেকে এবং সকল প্রকার বদনযর থেকে।” (বুখারী)
(৯) এই দু’আটি
بِسْمِ اللهِ يُبْرِيْكَ ومِنْ كُلِّ داَءٍ يَشْفِيْكَ، ومِنْ شَرِّ حاِسِدٍ إذاَ حَسَدَ، وَمِنْ شَرِّ كُلِّ ذِيْ عَيْنٍ
“আল্লাহর নামে শুরু করছি, তিনি তোমাকে মুক্ত করুন, প্রত্যেক অসুখ থেকে আরোগ্য দান করুন, প্রত্যেক হিংসুকের হিংসা থেকে এবং প্রত্যেক বদনযরের অনিষ্ট থেকে (মুক্ত করুন)। (মুসলিম)
এই পদ্ধতি বর্ণনা করেন ইমাম ইবনুল ক্বাইয়ুম।
তৃতীয়:-
যদি জানা না যায় কার নজর লেগের তাহলে নিচের এই পদ্ধতি অনুসরণ করুন।
প্রথমে এক বালতি পানি নিন। যদি বাথরুম আর টয়লেট একসঙ্গে হয় তাহলে বালতি বাহিরে নিয়ে এসে দুই হাতের কবজি পযন্ত ডুবিয়ে নিচের এগুলো পাঠ করুন।তবে পানিতে ফোঁ দিবেন না, পরে গোসল করুন।
(১) দরুদ শরীফ সাত বার
(২) সুরা ফাতেহা সাতবার
(৩) আয়াতুল কুরসী সাতবার
(৪)সুরা কাফিরুন সাতবার
(৫) সুরা ইখলাস সাতবার
(৬)সুরা ফালাক সাতবার
(৭) সুরা নাস সাতবার
( ৮) পুনরায় দুরুদ শরীফ সাতবার
এ পদ্ধতি টি বর্ণনা করেন মুফতী জুনায়েদ আন্দহারী মুম্বাই।
প্রথমে সাতদিনের জন্য রুকইয়াহ করুন যদি সমস্যা না কমে আরও সাতদিন করুন যদিও এতেও না কমে তাহলে আরও সাতদিন বাড়িয়ে নিন ইংশা আল্লাহ একুশ দিন করলে আপনি সুস্থতার পথে। পরে প্রতদিন না পারলে সাপ্তাহিক এক দিন আপনি নজরের গোসল করতে পারেন। নজরের গোসলের পুর্বে সম্পুর্ন অডিও শুনে নিবেন। বাকি সময় আরও দু একবার শুনলে আরও ভাল হবে আপনার জন্য।

সংগ্রহীত।

والله اعلم بالصواب

মুফতি মোঃ ইমদাদুল হক ওস্তাদ, জামিয়া সাঈদিয়া আরাবিয়া মাদ্রাসা, কেরানীগঞ্জ
প্রসঙ্গসমূহ:

মন্তব্য (0)

কোনো মন্তব্য নেই। প্রথম মন্তব্য করুন!

মন্তব্য করতে লগইন করুন

এ সম্পর্কিত আরও জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর

#২৩৪৯০
আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ,
💥
আমার নাম ফজলে রাব্বি,আমি একজন ছাত্র, আমার বয়স ২৩, বিবিএ অনার্স করছি,,
***আমার প্রশ্নটা হল: আমি প্রায় দীর্ঘদিন যাবত অসুস্থ, শারীরিক কিংবা মানসিকভাবে উভয় অসুস্থ,
সবকিছু ভালই যাচ্ছিল, কিন্তু এক বছর যাবত আমি দীর্ঘ অসুস্থ, নানান সমস্যায় ভুগছি, একটা রোগ ভালো হলে/আরেকটা রোগ হয়,,, বুঝে উঠতে পারছি না কি করব,,এমনকি আমার পরিবারের অন্যরাও কম বেশি অসুস্থ হচ্ছে বা থাকে,,,
💥 আমার এবং আমার পরিবারের সময়টা তেমন ভালো যাচ্ছে না, তবুও বলবো আলহামদুলিল্লাহ,,,
💥💥 আমার বাপ /চাচাদের মধ্যে দীর্ঘদিন যাবত জায়গা জমি নিয়ে দ্বন্দ্ব,,, জানতে পেরেছি যে আমার কাকারা কুফরীতে লিপ্ত,,, এখন আমাদের উপরে তা প্রয়োগ করেছে কিনা তা প্রত্যক্ষভাবে তো বলতে পারব না,,,, কিন্তু পরোক্ষভাবে সন্দেহ হচ্ছে,,,,

💥💥💥 যদি এমন কোন আমল/কোন পরামর্শ সম্পর্কে বিস্তারিত একটু দ্রুত জানাতেন, তাহলে খুবই উপকৃত হতাম 🙂
(ধন্যবাদ)
question and answer iconউত্তর দিয়েছেন: মুফতি সাইদুজ্জামান কাসেমি
৬ অক্টোবর, ২০২২
ঢাকা