আপনার জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর

সকল মাসায়েল একত্রে দেখুন

কল্পণায় গান গাওয়া

প্রশ্নঃ ১৮৩৭৭. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, আমি আগে গান শুনতাম।৭-৮ মাস মতো গান শুনি না।গান এর ভিতর শিরক আছে জানতে পেরে শোনাবাদ দিয়েছি।কিন্তু এই শিরক মিছ্রিত গান সবসময় আমরা মনের ভিতর একাই ছলতে থাকে।আমি ইচ্ছাকৃত মনে করি না তবুও মনে আশে।দিন,রাত সবসময় এই শিরক মিছ্রিত গান মনে আশে।নামাজেও এমনটাই হয়।আলহামদুলিল্লাহ এখন এই বিপদটা কমে গেছে অনেকটা। কিন্তু নামাজরত অবস্থায় এই শিরক মিস্রিত গান মনের ভিতর চলতেই থাকে।মনে না আনার চেষ্টা করি তবু্ও আশে। এতে কি আমি শিরক করে ফেললাম?????যেমন-গানে দুয়া ভি লাগে না মুঝে এই গানের প্রথম লাইন।গানে দুয়া ভি লাগে না মুঝে মনে আশে তখন আমি আমি নামাজরত অবস্থায়/ অন্য সময় মনে আশলে দুয়া ভি লাগে মুঝে বলি।আমার ভয় লাগে, কারণ এতে শিরক করা হয়ে যায়।আবার মানুষের তেরি কাছাম মনে আসে তখন বলি আল্লাহর কছম। তাই এর সঠিকটা বলি। এরকম কিছু শিরক মিছ্রিত গান মনে আশে তার সঠিকটা বলি,আল্লাহর ভয়ে। এতে কি আমি শিরক করে ফেলছি বার বার? আমার কি করনিও? নামাজরত অবস্থায় সিজদায় আল্লাহর কাছে মাফ চায়, আর অন্য সময় মনে আশলে এর জন্য তওবা করি,মাফ চায়। এতে কি শিরক করা হয়ে যায়/গেল?যদিও আমি ইচ্ছাকৃতভাবে বলি না।আমি কি করব????আমি হানাফি ফিকহ গ্রুপ এ অনেকবার প্রশ্ন করেছি কিন্তু কোন উত্তরই পায়নি।আল্লাহই একমাত্র ভরসা।জানিনা কথাগুলো বুঝিয়ে বলতে পেরেছি কি না।একটু কষ্ট করে বুঝে নিবেন ইন শা আল্লাহ। যতটা পারি চেষ্টা করেছি। আল্লাহুয়াকবার।জাজাকাল্লাহ খাইরান,

৪ ডিসেম্বর, ২০২৪

Boalia Rd

উত্তর

و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم


যাবতীয় শিরক থেকে তাওবাহ করে বেরিয়ে এসেছেন। আল্লাহ তায়ালা অবশ্যই আপনার তাওবাহ কবুল করবেন ইনশাআল্লাহ। সদ্য কোন গুনাহ থেকে বেরিয়ে আসলে তার প্রভাব প্রতিক্রিয়াঃ কাটতে কিছুটা সময় নিতে পারে। এতে বিচলিত হবেন না। তাওবাহ-র উপর অটল অবিচল থাকুন। দিলে হিম্মত রাখুন। আল্লাহ আপনাকে তার প্রিয় বান্দিদের অন্তর্ভুক্ত করে নেবেন ইনশা-আল্ল-হ।

নামাজের ভিতরে কোন বিষয়ে ওয়াসওয়াসা সৃষ্টি হলে তাৎক্ষণিক পড়ুন -

اعوذ بالله من الشيطان الرجيم

আউজু বিল্লাহি মিনাশ শাইত্বনির রজীম।

প্রশ্নে আপনি যেভাবে উল্লেখ করেছেন, নামাজের ভেতর শিরক যুক্ত গানের কলি মনে আসায় ঐ বাক্য পরিবর্তন করে সঠিক বাক্য মুখে উচ্চারণ করে নেন। এটার প্রয়োজন নেই। নামাজে এমন বাক্য বলা যাবে না। বরং আল্লাহ তাআলার কাছে বিতাড়িত শয়তান থেকে আশ্রয় গ্রহণ করুন।



حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ خَلَفٍ الْبَاهِلِيُّ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الأَعْلَى، عَنْ سَعِيدٍ الْجُرَيْرِيِّ، عَنْ أَبِي، الْعَلاَءِ أَنَّ عُثْمَانَ بْنَ أَبِي الْعَاصِ، أَتَى النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنَّ الشَّيْطَانَ قَدْ حَالَ بَيْنِي وَبَيْنَ صَلاَتِي وَقِرَاءَتِي يَلْبِسُهَا عَلَىَّ . فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " ذَاكَ شَيْطَانٌ يُقَالُ لَهُ خِنْزِبٌ فَإِذَا أَحْسَسْتَهُ فَتَعَوَّذْ بِاللَّهِ مِنْهُ وَاتْفِلْ عَلَى يَسَارِكَ ثَلاَثًا " . قَالَ فَفَعَلْتُ ذَلِكَ فَأَذْهَبَهُ اللَّهُ عَنِّي .

৫৫৫০। ইয়াহইয়া ইবনে খালাফ আল বাহিলী (রাহঃ) ... আবুল আলা (রাহঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, উসমান ইবনে আবুল আস (রাযিঃ) রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর কাছে এসে বললেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ! শয়তান আমার এবং আমার নামায ও কিরা’আতের মাঝে প্রতিবন্ধক হয়ে তা আমার জন্য এলোমেলো করে দেয়। তখন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেনঃ ওটা এক (প্রকারের) শয়তান যার নাম ‘খিনযিব’। যখন তুমি তার উপস্থিতি অনুভব করবে তখন (আউযুবিল্লাহ পড়ে) তার কবল থেকে আল্লাহর নামে আশ্রয় নিয়ে তিনবার তোমার বামদিকে থু থু নিক্ষেপ করবে। তিনি বলেনঃ পরে আমি তা করলে আল্লাহ আমা থেকে তা দূর করে দিলেন।
—সহীহ মুসলিম, ইফা নং ৫৫৫০

নামাজের বাহিরে এই ধরনের সমস্যা বিষয়ক আরেকটি হাদীস নিচে দেখুন।

أَخْبَرَنَا أَبُو دَاوُدَ قَالَ حَدَّثَنَا الْحَسَنُ بْنُ مُحَمَّدٍ قَالَ حَدَّثَنَا زُهَيْرٌ قَالَ حَدَّثَنَا أَبُو إِسْحَقَ عَنْ مُصْعَبِ بْنِ سَعْدٍ عَنْ أَبِيهِ قَالَ كُنَّا نَذْكُرُ بَعْضَ الْأَمْرِ وَأَنَا حَدِيثُ عَهْدٍ بِالْجَاهِلِيَّةِ فَحَلَفْتُ بِاللَّاتِ وَالْعُزَّى فَقَالَ لِي أَصْحَابُ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِئْسَ مَا قُلْتَ ائْتِ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَأَخْبِرْهُ فَإِنَّا لَا نَرَاكَ إِلَّا قَدْ كَفَرْتَ فَأَتَيْتُهُ فَأَخْبَرْتُهُ فَقَالَ لِي قُلْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَحْدَهُ لَا شَرِيكَ لَهُ ثَلَاثَ مَرَّاتٍ وَتَعَوَّذْ بِاللَّهِ مِنْ الشَّيْطَانِ ثَلَاثَ مَرَّاتٍ وَاتْفُلْ عَنْ يَسَارِكَ ثَلَاثَ مَرَّاتٍ وَلَا تَعُدْ لَهُ

৩৭৭৭. আবু দাউদ (রাহঃ) ... মুসআব ইবনে সা’দ (রাযিঃ) তাঁর পিতা হতে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, আমরা কোন ব্যাপারে আলোচনা করছিলাম, আর আমি নতুন ইসলাম গ্রহণ করেছিলাম। এক পর্যায়ে আমি লাত ও উযযার কসম করলাম। আমাকে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর কয়েকজন সাহাবী বললেনঃ তুমি অতি মন্দ কথা বলেছ। তুমি রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) এর নিকট চল, তাঁকে এটা জানাও। আমরা মনে করি, তুমি কুফরী করেছ।

আমি তাঁর নিকট এসে তাঁকে এ কথা জানালে তিনি আমাকে বললেন, তুমি তিনবার বলঃ “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারীকা লাহু”, আর শয়তান হতে আল্লাহ্ তা’আলার নিকট তিনবার আশ্রয় চাও এবং তোমার বামদিকে তিনবার থুথু ফেল। আর কখনও এরূপ কথা বলবে না।
—সুনানে নাসায়ী, ইফা নং ৩৭৭৭

والله اعلم بالصواب

উত্তর দিয়েছেনঃ ইসহাক মাহমুদ
মুফতী ও মুহাদ্দিস, জামিআ মুহাম্মাদিয়া আরাবিয়া, মোহাম্মদপুর

মন্তব্য ()

কোনো মন্তব্য নেই।

এ সম্পর্কিত আরও জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর

৩৮৪৮৯

মালাকুল মাউত কি একাই জান কবয করেন ?


২০ আগস্ট, ২০২৩

ওয়েস্ট বেঙ্গল ৭৩১২৪৫

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ মুসলিম বাংলা ইফতা বিভাগ

২৮২৮০

আকীদায়ে খতমে নবুয়ত


১৮ জানুয়ারী, ২০২৩

ভান্ডারিয়া

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ শফিকুল ইসলাম হাটহাজারী

Logoমুসলিম বাংলা
play storeapp store
TopOfStack Software © 2025 All rights reserved. Privacy Policy