প্রশ্নঃ ১৭২৭. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, আমাদের এলাকার জামে মসজিদে আযানের পর নামাযের আনুমানিক ৫ মিনিট পূর্বে মুয়াযযিন সাহেব মাইকে سووا صفوفكم، فإن تسوية الصفوف من إقامة الصلاة. এবং নামাযের ৫ মিনিট বাকি আছে বলে মুসল্লিদেরকে আহ্বান করে। জানার বিষয় হল, জামাতের পূর্বে এরূপ বলে ডাকা যাবে কি না? সহীহ হাদীসের আলোকে জানালে কৃতজ্ঞ হব।
উত্তর
و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
প্রশ্নের বর্ণনা অনুযায়ী আযানের পর পুনরায় ঐভাবে ডাকাডাকি করা ঠিক নয়। তাছাড়া যে হাদীসটি বলে ডাকাডাকি করা হয় তা এই সময় বলাও প্রযোজ্য নয়। কেননা হাদীসটির অর্থ হল, তোমরা কাতার সোজা কর। কেননা কাতার সোজা করা নামায কায়েম করার অন্তর্ভুক্ত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উক্ত কথা জামাত শুরু করার ঠিক আগ মুহূর্তে মসজিদে উপস্থিত মুসল্লিদের উদ্দেশ্যে বলতেন যেন সকলে কাতার সোজা করে নেয়।
সহীহ বুখারী ও মুসলিমের বর্ণনামতে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কাতার সোজা করার জন্য ঐ কথা নামাযের ইকামত হয়ে যাওয়ার পর বলতেন। -সহীহ বুখারী, হাদীস ৭১৯; সহীহ মুসলিম, হাদীস ৪৩৬
এছাড়া সাহাবায়ে কেরামও কাতার সোজা করার কথা বলতেন ইকামত হয়ে যাওয়ার পর। নাফে রাহ. বলেন, উমর রা. এক ব্যক্তিকে কাতার সোজা করার জন্য পাঠাতেন। ঐ ব্যক্তি উমর রা.-এর নিকট যতক্ষণ পর্যন্ত কাতার সোজা হওয়ার সংবাদ না দিতেন উমর রা. ততক্ষণ পর্যন্ত তাকবীর বলতেন না। -মুসান্নাফে আব্দুর রাযযাক : ২৪৩৭
মালেক ইবনে আবু আমের রাহ. বলেন, যখন নামাযের ইকামত হত উসমান রা. লোকদেরকে বলতেন, তোমরা কাতার সোজা করে নাও, কাঁধে কাঁধ মিলাও। কেননা কাতার সোজা করা নামাযের পূর্ণতার অংশ। এরপর তিনি ততক্ষণ পর্যন্ত তাকবীরে তাহরীমা বলতেন না যতক্ষণ না লোকেরা সংবাদ দিত যে, কাতার সোজা হয়েছে। তখন তিনি তাকবীর বলে নামায শুরু করতেন। -মুসান্নাফে আব্দুর রাযযাক : ২৪৪২
সুতরাং কাতার সোজা করার কথা তো বলা হবে জামাতের সময় হওয়ার পর মসজিদে উপস্থিত লোকদের উদ্দেশ্যেই। এ কথা বাইরের লোকদেরকে ডাকাডাকির ক্ষেত্রে প্রয়োগ করা অনর্থক।
আর আযানের পর পুনরায় ডাকাডাকির প্রচলন গড়লে এতে আযানের গুরুত্ব কমে যাবে। সেক্ষেত্রে অনেক মানুষ আযানকে গুরুত্ব না দিয়ে দ্বিতীয় ঘোষণার অপেক্ষায় থাকবে।
আযানের অন্যতম উদ্দেশ্য হল, লোকদেরকে নামাযের ওয়াক্ত সম্পর্কে অবহিত করা এবং জামাতের সময় অতি নিকটে তা জানানো। যেন আযান শুনে লোকজন কর্মব্যস্ততা ছেড়ে নামাযের প্রস্তুতি নিয়ে মসজিদে হাজির হয়ে যায়।والله اعلم بالصواب
মন্তব্য (0)
কোনো মন্তব্য নেই। প্রথম মন্তব্য করুন!
মন্তব্য করতে লগইন করুন