ইস্তিগফারের ফযিলত
প্রশ্নঃ ১৪৫৫৯. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, আসতাগফিরুল্লা হাল্লাজি লা ইলাহা ইল্লাহু ওয়াল হাইয়ুল কাইয়ুম ওয়াতুবু ইলাহি কোন কোন নামাজের পরে পড়লে সাগরের ফেনার মত গুনাহ থাকলে মাপ হয়ে যায় এবং আর কোন সময় পড়তে হয়
২ নভেম্বর, ২০২৩
সুনামগঞ্জ
উত্তর
و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
আল্লাহ তাআলা সবচেয়ে বেশি খুশী হন তখনই যখন কোন বান্দা ভুল করে গোনাহ করে আল্লাহ তাআলার কাছে ক্ষমার জন্য ফরিয়াদ করে ।
গুনাহ করে ফেললে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইলে আল্লাহ ক্ষমা করে দেন। আল্লাহ পবিত্র কোরআনে ক্ষমা প্রার্থনা নিয়ে বলেছেন, “এবং তোমরা আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা কর, নিশ্চয়ই আল্লাহ ক্ষমাশীল, দয়ালু।” [সূরা মুযযাম্মিল ৭৩:২০]
আল্লাহ তা‘আলা বলেন, وَٱسۡتَغۡفِرۡ لِذَنۢبِكَ وَلِلۡمُؤۡمِنِينَ وَٱلۡمُؤۡمِنَٰتِۗ ١٩ ﴾ [محمد : ١٩]
অর্থাৎ তুমি ক্ষমা-প্রার্থনা কর তোমার এবং মুমিন নর-নারীদের ত্রুটির জন্য। (সূরা মুহাম্মাদ ১৯ আয়াত)
আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন, وَٱسۡتَغۡفِرِ ٱللَّهَۖ إِنَّ ٱللَّهَ كَانَ غَفُورٗا رَّحِيمٗا ١٠٦ ﴾ [النساء : ١٠٦]
অর্থাৎ আল্লাহর কাছে তুমি ক্ষমা প্রার্থনা কর, নিশ্চয় আল্লাহ চরম ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। (সূরা নিসা ১০৬ আয়াত)
আল্লাহ তাআলা সুরা নুহ-এ বলেন, ‘আর (নুহকে) বলছি, তোমাদের রবের কাছে ক্ষমা চাও; নিশ্চয় তিনি পরম ক্ষমাশীল। (সুরা নুহ : আয়াত ১০-১২)
আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন :
مَنْ سَبَّحَ فِى دُبُرِ صَلَاةِ الْغَدَاةِ مِائَةَ تَسْبِيحَةٍ وَهَلَّلَ مِائَةَ تَهْلِيلَةٍ غُفِرَتْ لَه” ذُنُوبُه وَلَوْ كَانَتْ مِثْلَ زَبَدِ الْبَحْرِ
‘‘যে ব্যক্তি সকালের (ফজরের) সলাতের পর একশত বার সুবহা-নাল্লা-হ এবং একশত বার লা- ইলা-হা ইল্লাল্লা-হ বলবে, তার গুনাহসমূহ মাফ করে দেয়া হবে। যদিও তা সমুদ্রের ফেনার সমপরিমাণ হয়।[7]
(এটাই মূলত ইস্তিগফারের ফযিলত)
হাদীসে বর্ণিত এত বড় পুরস্কার পেতে হলে তাসবীহ, তাহলীলের শব্দ-বাক্যগুলো অর্থ না বুঝে বেখেয়ালে শুধু মুখে আওড়ালেই হবে না। বরং এগুলোর অর্থ বুঝে, পূর্ণ মনোযোগ সহকারে, যার নাম উচ্চারণ করা হচ্ছে তার প্রতি অর্থাৎ আল্লাহর প্রতি যথাযথ ভক্তি-শ্রদ্ধা-সম্মান অন্তরে ধারণ করে উচ্চারণ করলে হাদীসে বর্ণিত পুরস্কার পাওয়ার দৃঢ় আশা করা যায়।[8]
প্রত্যেক ফরয নামাযের পরে তিনবার ইস্তেগফার পড়বে।
[তাবারানী কাবীর-৮৫৪১]
استغفر الله الذي لا اله الا الا هو الحي القيوم واتوب اليه
উচ্চারণ:আস্তাগফিরুল্লাহ হাল্লাজি লা ইলাহা ইল্লা হুয়াল হাইয়ুল কাইয়ুম ওয়াতুবি ইলাইহি।
অর্থ: আমি আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাই, তিনি ব্যতীত কোনো মাবুদ নাই, তিনি চিরঞ্জীব ও চিরন্তন; এবং আমি তাঁর কাছে ফিরে আসি। (তিরমিজি, আবু দাউদ)।
এবং এ দোয়াটি পড়লে ও ভালো হয়।
[বুখারী শরীফ-১/১১৭]
لا اله الا الله الا الله وحده لا شريك له له الملك وله الحمد وهو على كل شيء قدير-اللهم لا مانع لما اعطيت ولا معطي لما منعت ولا ينفع ذا الجد منك الجد
উচ্চারণ: লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারিকালাহু লাহুল মুলকু ওয়াল হামদু ওয়া হুয়া আলা কুল্লি শাইয়িন কাদির। আল্লাহুম্মা লা মা-নিয়া লিমা আতাইতো ওয়ালা মতিয়া লিমা মানাআতা ওয়ালা ইয়ান ফায়ু জাল যাদ্দি মেনকাল যাদ্দা।
অর্থ : আল্লাহ ছাড়া কোনো ইলাহ নেই, তিনি একক, তাঁর কোনো শরিক নেই, রাজত্ব একমাত্র তাঁরই, সব প্রশংসা একমাত্র তাঁরই জন্য, আর তিনি সব কিছুর ওপর ক্ষমতাবান। আপনি দিলে কেউ বাঁধা দিতে পারে না। আপনি না দিলে কেউ দিতে পারে না, কেউ উপকার করতে পারে না।
আরো কিছু দোয়া কালাম আছে যা ফরজের পর সুন্নত ও নফল থাকলে সুন্নত ও নফলের পারে পড়বে। আর সুন্নত নফল না থাকলে ফরজের পরে পড়বে।
ক. আয়তুল কুরসী, একবার। (নাসাঈ-৯৮৪৮)
খ. সূরা ফালাক, সূরা নাস-তিনবার করে, এর সাথে সূরায়ে কাফিরুন ও ইখলাস মিলিয়ে নিলে ভালো। (তিরমিযী-২৯০৩)
গ. তাসবীহে ফাতেমী একবার। (অর্থাৎ ৩৩ বার সুবহানাল্লাহ ৩৩ বার আলহামদুলিল্লাহ ও ৩৪ বার আল্লাহু আকবার)।
(মুসলিম-৫৯৭)
এগুলো পাঁচ ওয়াক্তেই পড়বে। শুধু ফজর ও মাগরিবের তিনটির আগে নিচের দোয়াটি পড়বে।
ঘ. اللهم اجرني من النار সাতবার।
উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা আজিরনি মিনান্নার।
ঙ. সূরা হাশরের শেষ তিন আয়াত একবার বিসমিল্লাহ সহ পড়বে।
(মুসনাদে আহমদ-২০৩০৬)
والله اعلم بالصواب
মুসলিম বাংলা ফাতওয়া বিভাগ
মন্তব্য (0)
কোনো মন্তব্য নেই। প্রথম মন্তব্য করুন!
মন্তব্য করতে লগইন করুন
এ সম্পর্কিত আরও জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর
মাসায়েল-এর বিষয়াদি
আল কুরআনুল কারীম
৪
হাদীস ও সুন্নাহ
৬
তাসাউফ-আত্মশুদ্ধি । ইসলাহী পরামর্শ
৩
শরীআত সম্পর্কিত
১৪
ফিতনাসমুহ; বিবরণ - করণীয়
২
আখিরাত - মৃত্যুর পরে
৩
ঈমান বিধ্বংসী কথা ও কাজ
৬
ফিরাকে বাতিলা - ভ্রান্ত দল ও মত
২
পবিত্রতা অর্জন
৮
নামাযের অধ্যায়
১৯
যাকাত - সদাকাহ
৫
রোযার অধ্যায়
৬
হজ্ব - ওমরাহ
২
কাফন দাফন - জানাযা
৫
কসম - মান্নত
১
কুরবানী - যবেহ - আকীকা
৪
বিবাহ শাদী
৮
মীরাছ-উত্তরাধিকার
২
লেনদেন - ব্যবসা - চাকুরী
৯
আধুনিক মাসায়েল
৬
দন্ড বিধি
২
দাওয়াত ও জিহাদ
৩
ইতিহাস ও ঐতিহ্য
৬
সীরাতুন নবী সাঃ । নবীজীর জীবনচরিত
৩
সাহাবা ও তাবেঈন
৩
ফাযায়েল ও মানাকেব
৩
কিতাব - পত্রিকা ও লেখক
৩
পরিবার - সামাজিকতা
৭
মহিলা অঙ্গন
২
আখলাক-চরিত্র
২
আদব- শিষ্টাচার
১২
রোগ-ব্যধি। চিকিৎসা
২
দোয়া - জিকির
২
নাম। শব্দ জ্ঞান
৩
নির্বাচিত
২
সাম্প্রতিক
১
বিবিধ মাসআলা
১