আপনার জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর

সকল মাসায়েল একত্রে দেখুন

ইতিকাফের ফাজায়েল, মাসায়েল

প্রশ্নঃ ১৪৩৯৭. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, রমজান মাসে যে ইতেকাফ করা হয় এই ইতেকাফ কয়দিন করতে হয়? আর এর ফযীলত টা কি?

২১ ডিসেম্বর, ২০২৪
শংকরচন্দ্র

উত্তর

و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم


ইতেকাফ প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের রমজানের শেষ দশ দিনের একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। এ দশকে লাইলাতুল কদর প্রাপ্তি এবং আল্লাহর নৈকট্য অর্জনের জন্য ইতেকাফ জরুরি বিষয়। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সালাম আমৃত্যু ইতেকাফ করতেন।

ইতেকাফের পরিচয়

ইতিকাফ মানে হলো আঁকড়ে ধরা অর্থাৎ উদ্দেশ্য হাসিলের নিমিত্তে দৃঢ়ভাবে আঁকড়ে ধরা ও তার প্রতি মনকে আবদ্ধ রাখা। ইসলামি শরিয়তে আল্লাহ তাআলার নৈকট্য অর্জনের জন্য মসজিদে অবস্থান করাকে ইতেকাফ বলে।

ইতিকাফে বসার কারণ

আগের সব নবি-রাসুলগণ ও তাদের উম্মতগণ শ’বছর/হাজার বছর হায়াত (জীবন) পেয়েছেন। তারা বছরের পর বছর আল্লাহ ইবাদাত-বন্দেগিতে কাটাতেন। সে হিসেবে আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে দিয়েছেন সল্প আয়ুষ্কাল। কিন্তু আল্লাহ তাআলা উম্মাতে মুহাম্মাদির জন্য দান করেছেন মহিমান্বিত লাইলাতুল কদর। এ লাইলাতুল কদর তথা এক রাতকে কুরআনে হাজার মাসের চেয়ে উত্তম বলে ঘোষণা করেছেন। যা রমজানের শেষ দশকের যে কোনো এক রাতকে আল্লাহ তাআলা লাইলাতুল কদর হিসেবে গণ্য করেন।

এ কারণেই মুসলিম উম্মাহ রমজানের শেষ দশকে লাইলাতুল কদর প্রাপ্তির মাধ্যমে আল্লাহর নৈকট্য অর্জনে ইতেকাফে বসেন। ইতেকাফে বসা প্রসঙ্গে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আর যখন তোমরা মসজিদ ইতিকাফে বসো তখন স্ত্রীদের সাথে সহবাস করো না। এগুলো আল্লাহর নির্ধারিত সীমারেখা এর ধারে কাছেও যেয়ো না।’

ইতিকাফে বসার অর্থই হচ্ছে, রমজানের শেষ দশ দিন মসজিদে অবস্থান করা এবং এই দিনগুলোকে আল্লাহর জিকিরের জন্য নির্দিষ্ট করা। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দুনিয়ার জীবনে রমজানের শেষ দশকে ইতিকাফ করে গেছেন। (বুখারি, মুসলিম)।

ইতেকাফের মাসায়িল

- মুমিন বান্দাদের জন্য ২০ রমজান সূর্যাস্তের পূর্বে অর্থাৎ ইফতারের পূর্বেই ইতেকাফের নিয়তে মসজিদে পৌঁছে যাওয়া আবশ্যক।

- ইতেকাফের জন্য নিয়্ত করা আবশ্যক। এক সঙ্গে দশদিনের জন্য নিয়্ত না করলে সুন্নাত ইতেকাফ আদায় হবে না, বরং তা নফলে পরিণত হবে।

- মাসনুন ইতেকাফের নিয়ত করলে অবশ্যই তা পূর্ণ করা আবশ্যক। ওজর ব্যতিত তা ভঙ্গ করা বৈধ নয়।

- ইতেকাফকারীর জন্য ইতেকাফ অবস্থায় স্ত্রী সহবাস করা হারাম। আল্লাহ বলেন, ‘আর যতক্ষণ তোমরা এতেকাফ অবস্থায় মসজিদে অবস্থান কর, ততক্ষণ পর্যন্ত স্ত্রীদের সাথে মিশো না। এই হলো আল্লাহ কর্তৃক বেঁধে দেয়া সীমানা।’ (সুরা বাক্বারা : আয়াত ১৮৭) এমনকি স্ত্রীকে চুমু খাওয়া, আলিঙ্গন করাও বৈধ নয়।

- মাসনুন ইতেকাফ শুরু করার পর কোনো ব্যক্তির যদি দু’একদিন ভঙ্গ হয়ে যায়, তখন ভঙ্গ দিনের ইতেকাফ পরে কাযা করে নিতে হবে।

- পারিশ্রমিক বা ইফতার-সাহরির বিনিময়ে ইতেকাফ করা ও করানো কোনোটিই বৈধ নয়।

والله اعلم بالصواب

মুসলিম বাংলা ফাতওয়া বিভাগ
প্রসঙ্গসমূহ:

মন্তব্য (0)

কোনো মন্তব্য নেই। প্রথম মন্তব্য করুন!

মন্তব্য করতে লগইন করুন

এ সম্পর্কিত আরও জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর

#১৬৯০৪
আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ,
আমি রমজানের শেষ ১০ দিন ইতেকাফ করতে চাচ্ছি। রমাদানের আগে থেকেই কুরআন শিক্ষার একটা অনলাইন কোর্সে ভর্তি হয়েছি। ক্লাস সব অনলাইনে হয়, আর মশক করা ছাড়া হুজুরের সাথে কোন কথা হয়না। ক্লাস ২৫ রমজান পর্যন্ত চলবে। আমি কি ইতেকাফ অবস্থায় ক্লাস করতে পারি? নাকি ইতেকাফের কোন ক্ষতি হবে?
আমি আল্লাহর রহমতে গত বছর প্রথম ইতেকাফ করেছিলাম। আমার পরিবারে বলেছি যেন এ সময় আমার সাথে কথা না বলে। কিন্তু তবুও মাঝে মাঝে বলতো। কখনো ঘরে একা থাকলে কেউ আসলে দরজা খোলা বা রাতের আর সাহরীর খাবার নিজে এনে খেতে হয়েছে রান্নাঘর থেকে। এতে কি ইতেকাফের কোন সমস্যা হবে?
মেয়েদের ইতেকাফ নিয়ে বিস্তারিত জানালে উপকৃত হবো। জাজাকাল্লাহ খাইরান
question and answer iconউত্তর দিয়েছেন: মুফতি সাইদুজ্জামান কাসেমি
১৯ এপ্রিল, ২০২২
টঙ্গী