আপনার জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর

সকল মাসায়েল একত্রে দেখুন

প্রশ্নঃ ১২২২৭. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, ami natok r poty asokto jr fola amr rte gumayte dere hoy fozorer nmj jmate porte prina,,er thika ber hour upay ki r ,,,meyeder dika na takale ki eman nur poyda hoy,

৩ জানুয়ারী, ২০২২

কালিহাতী

উত্তর

و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم





সম্মানিত প্রশ্নকারী! আল্লাহ তায়ালা আপনার হিম্মত ও সৎসাহস বাড়িয়ে দিন। আপনি স্বীয় অপরাধের কথা অকপটে স্বীকার করেছেন। আমরা আশা করছি অচিরেই আপনি উল্লিখিত অপরাধ থেকেও বেরিয়ে আসবেন ইনশাআল্লাহ।

সম্মানিত ভাই! হাশররের ময়দানে আল্লাহ তায়ালার দরবারে আমার আপনার এবং সকলের প্রতিটি কর্মের হিসাব দিতে হবে এই প্রসঙ্গে সাহাবী হযরত ইবনে মাসউদ রা. রাসূলুল্লাহ সা.-এর থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেছেন,
تَزُولُ قَدَمَا ابْنِ آدَمَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ مِنْ عِنْدِ رَبِّهِ حَتَّى يُسْأَلَ عَنْ خَمْسٍ عَنْ عُمْرِهِ فِيمَا أَفْنَاهُ وَعَنْ شَبَابِهِ فِيمَا أَبْلاَهُ وَمَالِهِ مِنْ أَيْنَ اكْتَسَبَهُ وَفِيمَ أَنْفَقَهُ وَمَاذَا عَمِلَ فِيمَا عَلِمَ
(হাশরের দিন) মানুষের পা একবিন্দু নড়তে পারবে না যতক্ষণ পর্যন্ত তার নিকট এই পাঁচটি বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা না হবে।
এক. নিজের জীবনকাল সে কোন কাজে অতিবাহিত করেছে?
দুই. যৌবনেরে শক্তি সামর্থ্য কোথায় ব্যয় করেছে?
তিন. ধন সম্পদ কোথা হতে উপার্জন করেছে?
চার. অর্জিত ধন সম্পদ কোথায় ব্যয় করেছে?
পাঁচ. এবং (দীনের) যতটুকু ইলম অর্জন করেছে সে অনুযায়ী কতটুকু আমল করেছে? (জামে তিরমিযী : ৪/২৪১৬)।
প্রিয় ভাই! এই একটি হাদিস কি আমাদের জীবনে আমূল পরিবর্তনের জন্য যথেষ্ঠ নয়? প্রথমত আমরা কি পারবো নাটক সিনেমা দেখে জীবনের মহামূল্যবান যে সময় অতিবাহিত করেছি সেগুলো ফিরিয়ে আনতে?

কুরআনুল কারিমের এই আয়াতটি লক্ষ্য করুন- আল্লাহ তায়ালা সুরা নূরে ইরশাদ করেন,

قُل لِّلْمُؤْمِنِينَ يَغُضُّوا مِنْ أَبْصَارِهِمْ وَيَحْفَظُوا فُرُوجَهُمْ ۚ ذَٰلِكَ أَزْكَىٰ لَهُمْ ۗ إِنَّ اللَّهَ خَبِيرٌ بِمَا يَصْنَعُونَ - وَ قُل لِّلْمُؤْمِنَاتِ يَغْضُضْنَ مِنْ أَبْصَارِهِنَّ وَيَحْفَظْنَ فُرُوجَهُنَّ وَلَا يُبْدِينَ زِينَتَهُنَّ إِلَّا مَا ظَهَرَ مِنْهَا ۖ وَلْيَضْرِبْنَ بِخُمُرِهِنَّ عَلَىٰ جُيُوبِهِنَّ ۖ وَلَا يُبْدِينَ زِينَتَهُنَّ إِلَّا لِبُعُولَتِهِنَّ أَوْ آبَائِهِنَّ أَوْ آبَاءِ بُعُولَتِهِنَّ أَوْ أَبْنَائِهِنَّ أَوْ أَبْنَاءِ بُعُولَتِهِنَّ أَوْ إِخْوَانِهِنَّ أَوْ بَنِي إِخْوَانِهِنَّ أَوْ بَنِي أَخَوَاتِهِنَّ أَوْ نِسَائِهِنَّ أَوْ مَا مَلَكَتْ أَيْمَانُهُنَّ أَوِ التَّابِعِينَ غَيْرِ أُولِي الْإِرْبَةِ مِنَ الرِّجَالِ أَوِ الطِّفْلِ الَّذِينَ لَمْ يَظْهَرُوا عَلَىٰ عَوْرَاتِ النِّسَاءِ ۖ وَلَا يَضْرِبْنَ بِأَرْجُلِهِنَّ لِيُعْلَمَ مَا يُخْفِينَ مِن زِينَتِهِنَّ ۚ وَتُوبُوا إِلَى اللَّهِ جَمِيعًا أَيُّهَ الْمُؤْمِنُونَ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ
মুমিনদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টি নত রাখে এবং তাদের যৌনাঙ্গর হেফাযত করে। এতে তাদের জন্য খুব পবিত্রতা আছে। নিশ্চয় তারা যা করে আল্লাহ তা অবহিত আছেন। ঈমানদার নারীদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে নত রাখে এবং তাদের যৌন অঙ্গের হেফাযত করে। তারা যেন যা সাধারণতঃ প্রকাশমান, তা ছাড়া তাদের সৌন্দর্য প্রদর্শন না করে এবং তারা যেন তাদের মাথার ওড়না বক্ষ দেশে ফেলে রাখে এবং তারা যেন তাদের স্বামী, পিতা, শ্বশুর, পুত্র, স্বামীর পুত্র, ভ্রাতা, ভ্রাতুস্পুত্র, ভগ্নিপুত্র, স্ত্রীলোক অধিকারভুক্ত বাঁদী, যৌনকামনামুক্ত পুরুষ, ও বালক, যারা নারীদের গোপন অঙ্গ সম্পর্কে অজ্ঞ, তাদের ব্যতীত কারো আছে তাদের সৌন্দর্য প্রকাশ না করে, তারা যেন তাদের গোপন সাজ-সজ্জা প্রকাশ করার জন্য জোরে পদচারণা না করে। মুমিনগণ, তোমরা সবাই আল্লাহর সামনে তওবা কর, যাতে তোমরা সফলকাম হও।(সুরা নূর- আয়াত:৩০-৩১) এই আয়াতে আল্লাহ তায়ালা মুসলিম নরনারীকে পর্দার বিধান দিয়ে নারী-পুরুষের অবাধ বিচরণে বিধিনিষেধ আরোপ করেছেন।

নাটক সিনেমা দেখলে কি আমাদের সময় নষ্ট হয় না? আমাদের কি দৃষ্টির খেয়ানত হয় না? এর কারণে কি আমাদের অমলনামায় গুনাহে বোঝা ভারি হয় না? আমরা কি এর কারণে প্রতিনিয়ত জাহান্নামের অগুনের দিকে ধাবিত হচ্ছি না? হাশরের ময়দানে আল্লাহ তায়ালার কাছে আমরা কি জাবাব দিব?

প্রিয় ভাই! এই বিষয়গুলো মাথার রাখলে আশা করি আমাদের সময় নষ্ট করার সময় হবে না। নাটক সিনেম, গেমসের মতো অহেতুক বিষয়ে আমাদের দুনিয়া এবং আখেরাত বরবাদ করবো না।
# দ্বিতীয়ত আপনি জানতে চেয়েছেন “মেয়েদের দিকে না তাকালে কি ইমানে নূর পয়দা হয়”? এর উত্তরে আমরা বলবো জি হ্যাঁ। অবশ্যই ইমানে নূর পয়দা হবে। শুধু এটাই নয় বরং এর মাধ্যমে ইবাদতে স্বাধ অনুভূত হবে। হাদিস শরিফে ইরশাদ হয়েছে-
ما من مسلمٍ ينظر إلى امرأةٍ أولَ رَمقةٍ ثم يغُضُّ بصرَه ؛ إلا أحدث اللهُ له عبادةً ؛ يجدُ حلاوتَها في قلبِه
যে মুসলিম কোনো (ননমাহরাম) নারীর দিকে প্রথম দৃষ্টিতে চক্ষু অবনত করে নেয় আল্লাহ তায়ালা তার ইবাদতে এমন মজা দান করবেন যা সে হৃদয়ে অনুভব করতে পাবে। হাদিসটি মুহাদ্দিসগণের বিচারে পূর্ণমানোত্তীর্ণ না হলেও এর মর্মার্থ স্বীকৃত।
এছাড়াও কুরআনুল কারীমের আয়াত এবং হাদিসের বর্ণনার ভিত্তিতে ইমান-আমালের মাধ্যমে ইমান বৃদ্ধির বিষয়টি স্বীকৃত ও প্রমাণিত। আল্লাহ তায়ালা আমাদের তার বিধান অনুযায়ী জীবন পরিচালনা করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

والله اعلم بالصواب

উত্তর দিয়েছেনঃ মুফতি সাইদুজ্জামান কাসেমি
বাইতুল কুরআন মাদারাসা , মোহাম্মাদপুর

মন্তব্য ()

কোনো মন্তব্য নেই।

এ সম্পর্কিত আরও জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর

১৮৯৭৬

যখন মিথ্যা বলা জায়েজ


২১ আগস্ট, ২০২৪

Riyadh ১২৬৪৫

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ মুফতি সাইদুজ্জামান কাসেমি

৯০৬৮৩

বিধর্মীরা কি উম্মতে মুহাম্মাদীর দলভুক্ত?


২৩ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫

ওয়েস্ট বেঙ্গল ৭৪৩৫০২

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ মুফতী আরিফুর রহমান

২৭৫৫৩

প্রেম করা হারাম কেন?


৬ জানুয়ারী, ২০২৩

সাভার

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ শাইখ উমায়ের কোব্বাদী

১৮৭৬০

বিবাহের ওয়াদা দিলে তার বিধান


২৯ নভেম্বর, ২০২২

কেরানীগঞ্জ

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ মুফতি সাইদুজ্জামান কাসেমি

Logoমুসলিম বাংলা
play storeapp store
TopOfStack Software © 2025 All rights reserved. Privacy Policy