প্রশ্নঃ ১১৭৫২. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, একটা পণ্যে কত টাকা লাভ করা যাবে? এক্ষেত্রে শরীয়তের নির্দিষ্ট কোন নিয়ম আছে কিনা? যেমন, আমি 5000 টাকা দিয়ে একটি পণ্য কিনলাম, আমি কি তা 20 হাজার টাকা বিক্রি করতে পারব ? এক্ষেত্রে শরীয়তের বিধি-বিধান কেমন ? সর্বোচ্চ কত গুন বেশি দামে পণ্য বিক্রি করা যাবে ? কিংবা দাম চাওয়া যাবে ? কোন বাঁধাধরা নিয়ম আছে কিনা? নাকি যে যার মত দাম চাইতে পারবে ?
২৩ ডিসেম্বর, ২০২১
মৌলভীবাজার
উত্তর
و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
ব্যবসায় কি পরিমান লাভ করা যায়্,,,?
ইসলামী শরীয়তে এর কোনো নির্দিষ্ট সীমারেখা নেই, বরং যেকোনো জিনিষ উভয়ের সন্তুষ্টিতে যেকোনো মূল্যে ক্রয়-বিক্রয় করা যায়। ক্রয়-বিক্রয়ে আমাদেরকে অবশ্যই দুটি দিক খেয়ালে রাখতে হবে।
প্রথমতঃউভয়ের সন্তুষ্টি আছে কি না নেই?সেদিকে অত্যান্ত সতর্কতার সাথে লক্ষ্য রাখতে হবে ,কেননা আল্লাহ তা'আলা বলেনঃ
ﻳَﺎ ﺃَﻳُّﻬَﺎ ﺍﻟَّﺬِﻳﻦَ ﺁﻣَﻨُﻮﺍْ ﻻَ ﺗَﺄْﻛُﻠُﻮﺍْ ﺃَﻣْﻮَﺍﻟَﻜُﻢْ ﺑَﻴْﻨَﻜُﻢْ ﺑِﺎﻟْﺒَﺎﻃِﻞِ ﺇِﻻَّ ﺃَﻥ ﺗَﻜُﻮﻥَ ﺗِﺠَﺎﺭَﺓً ﻋَﻦ ﺗَﺮَﺍﺽٍ ﻣِّﻨﻜُﻢْ ﻭَﻻَ ﺗَﻘْﺘُﻠُﻮﺍْ ﺃَﻧﻔُﺴَﻜُﻢْ ﺇِﻥَّ ﺍﻟﻠّﻪَ ﻛَﺎﻥَ ﺑِﻜُﻢْ ﺭَﺣِﻴﻤًﺎ
তরজমাঃ-হে ঈমানদারগণ! তোমরা একে অপরের সম্পদ অন্যায়ভাবে গ্রাস করো না। কেবলমাত্র তোমাদের পরস্পরের সম্মতিক্রমে যে ব্যবসা করা হয় তা বৈধ। আর তোমরা নিজেদের কাউকে হত্যা করো না। নিঃসন্দেহে আল্লাহ তা’আলা তোমাদের প্রতি দয়ালু।(সূরা নিসা(২৯)
এবং হযরত ইবনে আব্বাস রাঃ থেকে বর্ণিত,
عن ابن عباس قال;قال رسول اللّٰه صلى اللّٰه عليه و سلم
" ﻻ ﻳﺤﻞ ﻣﺎﻝ ﺍﻣﺮﺉ ﻣﺴﻠﻢ ﺇﻻ ﺑﻄﻴﺐ ﻧﻔﺲ ﻣﻨﻪ "
নবী কারীম সাঃ বলেনঃ"কোন মুসলমানের জন্য অন্য কোনো মুসলমানের মাল তার অন্তরের সন্তুষ্টি ব্যতীত হালাল হবে না।(তালখিসুল হাবীর-১২৪৯)
অত্র আয়াত এবং হাদীস থেকে আমরা সুস্পষ্টভাবে বুঝতে পারলাম যে,যে কোনো ধরণের লেনদেনে উভয়ের সন্তুষ্টি একান্ত অত্যাবশ্যকীয় একটি বিষয়।সুতরাং উভয়ের সন্তুষ্টিতে যেকোনো মূল্যে লেনদেন করা যাবে,বৈধ আছে।কিন্তু কারো সন্তুষ্টি না থাকলে জোর করে বা তাকে বাধ্য করে তার সাথে লেনদেন করা কখনো জায়েয হবে না।
দ্বিতীয়তঃকারো উপর জুলুম হচ্ছে কি না?সে দিকটাও নজরে রাখতে হবে।হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রাঃ থেকে বর্ণিত, নবী কারীম সাঃ বলেনঃ
ﻋﻦ ﻋﺒﺪ ﺍﻟﻠﻪ ﺑﻦ ﻋﻤﺮ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻬﻤﺎ ﻋﻦ ﺍﻟﻨﺒﻲ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻗﺎﻝ ﺍﻟﻈﻠﻢ ﻇﻠﻤﺎﺕ ﻳﻮﻡ ﺍﻟﻘﻴﺎﻣﺔ
জুলুম/নির্যাতন কিয়ামতের দিন অন্ধকাররূপ ধারণ করবে।(সহীহ বুখারী-২৩১৫)
এবং অত্র হাদীস থেকে আমরা সুস্পষ্টভাবে বুঝতে পারলাম যে লেনদেনে কারো প্রতি জুলুম/নির্যাতন না হওয়া চাই। জুলুম/নির্যাতন করা সর্বাবস্থায় হারাম।
কিন্তু এক্ষেত্রে যেহেতু ক্রয়-বিক্রয়ের নির্ধারিত শর্ত ইজাব-কবুল(প্রস্তাব-সম্মতি)পাওয়া যাচ্ছে,তাই লেনদেন সংগঠিত হয়ে গেলেও জুলুম-নির্যাতনের গোনাহ অবশ্যই হবে।
والله اعلم بالصواب
মুসলিম বাংলা ফাতওয়া বিভাগ
মন্তব্য (0)
কোনো মন্তব্য নেই। প্রথম মন্তব্য করুন!
মন্তব্য করতে লগইন করুন
এ সম্পর্কিত আরও জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর
মাসায়েল-এর বিষয়াদি
আল কুরআনুল কারীম
৪
হাদীস ও সুন্নাহ
৬
তাসাউফ-আত্মশুদ্ধি । ইসলাহী পরামর্শ
৩
শরীআত সম্পর্কিত
১৪
ফিতনাসমুহ; বিবরণ - করণীয়
২
আখিরাত - মৃত্যুর পরে
৩
ঈমান বিধ্বংসী কথা ও কাজ
৬
ফিরাকে বাতিলা - ভ্রান্ত দল ও মত
২
পবিত্রতা অর্জন
৮
নামাযের অধ্যায়
১৯
যাকাত - সদাকাহ
৫
রোযার অধ্যায়
৬
হজ্ব - ওমরাহ
২
কাফন দাফন - জানাযা
৫
কসম - মান্নত
১
কুরবানী - যবেহ - আকীকা
৪
বিবাহ শাদী
৮
মীরাছ-উত্তরাধিকার
২
লেনদেন - ব্যবসা - চাকুরী
৯
আধুনিক মাসায়েল
৬
দন্ড বিধি
২
দাওয়াত ও জিহাদ
৩
ইতিহাস ও ঐতিহ্য
৬
সীরাতুন নবী সাঃ । নবীজীর জীবনচরিত
৩
সাহাবা ও তাবেঈন
৩
ফাযায়েল ও মানাকেব
৩
কিতাব - পত্রিকা ও লেখক
৩
পরিবার - সামাজিকতা
৭
মহিলা অঙ্গন
২
আখলাক-চরিত্র
২
আদব- শিষ্টাচার
১২
রোগ-ব্যধি। চিকিৎসা
২
দোয়া - জিকির
২
নাম। শব্দ জ্ঞান
৩
নির্বাচিত
২
সাম্প্রতিক
১
বিবিধ মাসআলা
১