আপনার জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর

সকল মাসায়েল একত্রে দেখুন

প্রশ্নঃ ১০৯৯৭. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, পুএ সন্তান লাভের জন্য নিরদিস্ট কোন আমল বা দোয়া আছে কি? আমি ৩ মাসের প্রেগন্যান্ট এখন

২৯ নভেম্বর, ২০২১
ঢাকা

উত্তর

و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم





///\\\
হজরত ইবরাহিম (আ.) একসময় নিঃসন্তান ছিলেন। বৃদ্ধ বয়সে হজরত ইবরাহিম আলাইহিস সালাম আল্লাহ তাআলার নিকট দোয়া করলেন সৎ পুত্র সন্তানের জন্য। আল্লাহ তাআলা তার দোয়া কবুল করলেন। তাকে নেক পুত্র সন্তান দান করলেন।

তিনি আল্লাহর কাছে দোয়া করেছেন, রাব্বি হাবলী মিনাস সা-লিহীন অর্থাৎ হে আমার প্রভু! আমাকে সৎকর্মশীল সন্তান দান করো।’ (সুরা : সাফফাত, আয়াত : ১০০)

আল্লাহ রাব্বুল আলামিন নিঃসন্তান মা-বাবাকে এ দোয়া শিখিয়েছেন, ‘রব্বি লা-তাযারনি ফারদাঁও ওয়া আন্তা খাইরুল ওয়ারিছিন। অর্থাৎ হে আমার রব, আমাকে একা রেখো না। তুমি তো সর্বোত্তম উত্তরাধিকারী।’ (সুরা : আম্বিয়া, আয়াত : ৮৯)

সৃষ্টির কাছে কোনো কিছু কামনা নয়। বরং আল্লাহ তাআলা নিকট চাওয়াই হলো ইবাদাত। আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে সব চাওয়া-পাওয়া তার মহান দরবারে প্রার্থনা করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

হজরত জাকারিয়া (আ.) বার্ধক্য পর্যন্ত নিঃসন্তান ছিলেন। অন্যদিকে হজরত মরিয়ম (আ.) বায়তুল মোকাদ্দাসে তার তত্ত্বাবধানে ছিলেন। একদিন তিনি দেখতে পেলেন আল্লাহ তাআলা ফলের মৌসুম ছাড়াই হজরত মরিয়ম (আ.)-কে ফল দিয়ে রিজিকের ব্যবস্থা করেছেন। তখন তার মনে সন্তানের জন্য সুপ্ত আকাঙ্ক্ষা জেগে ওঠে। তাই তিনি আল্লাহর দরবারে বিশেষ দোয়া করেন।

তিনি বলেন, ‘রাব্বি হাবলি মিল্লাদুনকা যুরিরয়্যাতান ত্বাইয়্যিবাহ, ইন্নাকা সামিউদ দুআ। অর্থাৎ হে আমাদের প্রতিপালক! আপনার পক্ষ থেকে আমাকে পূতপবিত্র সন্তান দান করুন। নিশ্চয় আপনি প্রার্থনা কবুলকারী।’ (সুরা : আলে ইমরান, আয়াত : ৩৮)

সুতরাং কোনো মানুষের কাছে সন্তান কামনা করা যাবে না। সন্তান লাভের জন্য অবৈধ ও অনৈসলামিক উপায় অবলম্বন করা যাবে না। নিঃসন্তান দম্পতির উচিত, আল্লাহর ওপর ভরসা করে উল্লিখিত দোয়া পাঠ করা।

আল্লাহর খাঁটি বান্দাদের পরিচয় দিয়ে কোরআনে বলা হয়েছে, তারা পুণ্যবান স্ত্রী ও সন্তানের জন্য দোয়া করেন।

ইরশাদ হয়েছে, ‘রব্বানা-হাবলানা-মিন্ আয্ওয়াজ্বিনা ওয়া যুররিয়্যা-তিনা-কুর্রতা আ’ইয়ুন, ওয়া জা’আল্না-লিল মুত্তাকিনা ইমামা। অর্থাৎ হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদের স্ত্রী ও সন্তানদের আমাদের জন্য নয়ন প্রীতিকর করো এবং আমাদের সংযমীদের আদর্শস্বরূপ করো।’ (সুরা : ফুরকান, আয়াত : ৭৪)

/////\\\\\
. সন্তান গর্ভে ধারণের ১ম, ২য় ও ৩য় মাসেব সূরা লোকমান ও সূরা ইনশিক্বাক পড়ুন। ৪র্থ, ৫ম ও ৬ষ্ঠ মাসে সূরা ইউসুফ ও আল ইমরান পড়ুন। আর ৭ম, ৮ম ও ৯ম মাসে সূরা মারইয়াম ও সূরা মুহাম্মাদ পড়ুন। #সূরা লোকমান পড়লে গর্ভের সন্তান জ্ঞানী, তীক্ষ্ণ বুদ্ধি ও হেকমত ওয়ালা হয়। #সূরা ইনশিক্বাক পড়লে গর্ভের সন্তান সকল প্রকার ক্ষতি থেকে নিরাপদ থাকে। #সূরা ইউসুফ পড়লে গর্ভের সন্তানের রুহানী ও জিসমানী উভয় দিক সুন্দর হয়। #সূরা আল ইমরান পড়লে গর্ভের সন্তান দ্বীনের পথে আহবানকারী হয়। #সূরা মারইয়াম পড়লে গর্ভের সন্তান পরহেজগার ও আল্লাহভীরু হয়। #সূরা মুহাম্মাদ পড়লে গর্ভের সন্তান সুন্দর চরিত্রের অধিকারী হয়। এছাড়াও সন্তান গর্ভে থাকাকালীন আপুদের উচিত বেশী বেশী কোরআনুল কারীম তিলাওয়াত করা, নিয়মিত নামায আদায় করা ও ধর্মীয় বই পড়া। কারণ, এসময়ে মায়েরা যে কাজগুলো করে থাকেন, সন্তানের আচরণের উপর তার প্রভাব পড়ে। এ সময়ে পরনিন্দা-পরচর্চা করা, ঝগড়া করা, গালা-গালি করা ও অন্যান্য মন্দ কাজ থেকে বিরত থাকা বাঞ্চনীয়। দো'আ করি, আল্লাহ্ যেন সকল মা বাবাকে নেককার সন্তান দান করেন।"আমীন"

والله اعلم بالصواب

মুসলিম বাংলা ফাতওয়া বিভাগ

মন্তব্য (0)

কোনো মন্তব্য নেই। প্রথম মন্তব্য করুন!

মন্তব্য করতে লগইন করুন