একাধিক কসমের কাফফারা
প্রশ্নঃ ১০৯৭৫. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, জীবনে চলার পথে এক এক সময় এক এক রকমের কাজের জন্য এক এক কসম করেছি।কত রকম কাজের কসম যে ভঙ্গ করে তা নিজেও জানি না। একখন কিভাবে কাফফারা আদায় করব ,সব কাজের জন্য একটি কাফফারা নাকি এক এক কাজের জন্য আলাদা আলাদা কাফফারা দিতে হবে ।আর অতিতে অনেক রছরকার রোজা আদায় না হয়ে থাকে কি সব বছরের জন্য একটি কাফফারা নাকি প্রতিটি বছরের জন্য আলাদা কাফফারা দিতে হবে,
২১ ডিসেম্বর, ২০২৪
রুপগঞ্জ
উত্তর
و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
একাধিক কসমের কাফফারা বিষয়ে ফোকাহায়ে কেরাম থেকে দুইটি মত পাওয়া যায়। যথা-
১-প্রতিটি কসম ভঙ্গের জন্য একটি করে কাফফারা আদায় করা।
২-আগের কসমের কাফফারা আদায় না করে থাকলে একটি কাফফারাই যথেষ্ট হবে।
আপনি যদি সক্ষম হয়ে থাকেন, তাহলে অনুমান করে যতটি কসম ভঙ্গ করেছেন ততটি কাফফারা আদায় করে দিন। এটাই উত্তম ও অধিক সতর্কতা এতেই নিহিত রয়েছে। আর যদি অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল হয়ে থাকেন, তাহলে একটি কাফফারা আদায় করা যেতে পারে।
কসমের কাফফারা কিভাবে আদায় করবেন ?
সুরা মায়েদার ৮৯ নং আয়াতে আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন
لَا یُؤَاخِذُکُمُ اللّٰہُ بِاللَّغۡوِ فِیۡۤ اَیۡمَانِکُمۡ وَ لٰکِنۡ یُّؤَاخِذُکُمۡ بِمَا عَقَّدۡتُّمُ الۡاَیۡمَانَ ۚ فَکَفَّارَتُہٗۤ اِطۡعَامُ عَشَرَۃِ مَسٰکِیۡنَ مِنۡ اَوۡسَطِ مَا تُطۡعِمُوۡنَ اَہۡلِیۡکُمۡ اَوۡ کِسۡوَتُہُمۡ اَوۡ تَحۡرِیۡرُ رَقَبَۃٍ ؕ فَمَنۡ لَّمۡ یَجِدۡ فَصِیَامُ ثَلٰثَۃِ اَیَّامٍ ؕ ذٰلِکَ کَفَّارَۃُ اَیۡمَانِکُمۡ اِذَا حَلَفۡتُمۡ ؕ وَ احۡفَظُوۡۤا اَیۡمَانَکُمۡ ؕ کَذٰلِکَ یُبَیِّنُ اللّٰہُ لَکُمۡ اٰیٰتِہٖ لَعَلَّکُمۡ تَشۡکُرُوۡنَ ﴿۸۹﴾
আল্লাহ তোমাদেরকে পাকড়াও করেন না তোমাদের অর্থহীন কসমের ব্যাপারে, কিন্তু যে কসম তোমরা দৃঢ়ভাবে কর সে কসমের জন্য তোমাদেরকে পাকড়াও করেন। সুতরাং এর কাফফারা হল দশ জন মিসকীনকে খাবার দান করা, মধ্যম ধরনের খাবার, যা তোমরা স্বীয় পরিবারকে খাইয়ে থাক, অথবা তাদের বস্ত্র দান, কিংবা একজন দাস-দাসী মুক্ত করা। অতঃপর যে সামর্থ্য রাখে না তবে তিন দিন সিয়াম পালন করা। এটা তোমাদের কসমের কাফ্ফারা, যদি তোমরা কসম কর, আর তোমরা তোমাদের কসম হেফাযত কর। এমনিভাবে আল্লাহ তোমাদের জন্য তাঁর আয়াতসমূহ বর্ণনা করেন যাতে তোমরা শোকর আদায় কর।
★সুতরাং শপথ তিন প্রকার।
এক. যদি অতীত ঘটনা সম্পর্কে ইচ্ছাকৃতভাবে মিথ্যা শপথ করা হয়, তাকে 'ইয়ামিনে গুমুস' বা পাপে নিমজ্জিত শপথ বলা হয়। উদাহরণত, কেউ কোনো কাজ করে জেনেশুনে শপথ করে বলল যে সে কাজটি করেনি। এ মিথ্যা শপথ কবিরা গুনাহ। তবে এর জন্য কাফফারা ওয়াজিব হবে না।
দুই. নিজ ধারণায় সত্য মনে করে কোনো অতীত ঘটনা সম্পর্কে শপথ করা। অথচ বাস্তবে তা অসত্য। যেমন- কোনো অসমর্থিত সূত্রে জানা গেল, অমুক ব্যক্তি এসে গেছে। এর ওপর নির্ভর করে কেউ আল্লাহর নামে শপথ করে বলল, 'অমুক ব্যক্তি এসে গেছে।' এরপর দেখা গেল, এটি বাস্তবের বিপরীত। এ ধরনের শপথকে 'ইয়ামিনে লগভ' বলা হয়।
এ ছাড়া অনিচ্ছাকৃতভাবে মুখে শপথবাক্য উচ্চারিত হলে একেও 'ইয়ামিনে লগ্ভ' বা অহেতুক শপথ বলা হয়। এ-জাতীয় শপথে কোনো গুনাহ নেই। কাফফারাও দিতে হয় না।
তিন. আল্লাহর নাম নিয়ে ভবিষ্যতে কোনো কাজ করা বা না করার শপথ করা। এ রকম শপথকে 'ইয়ামিনে মুনআকিদ' বা কার্যকর শপথ বলা হয়। এ শপথ ভঙ্গ করলে কাফফারা ওয়াজিব হবে। এমনকি কোনো কোনো অবস্থায় গুনাহও হয়। রাসুলুল্লাহ সাঃ বলেছেন যে ব্যক্তি গাইরুল্লাহর নামে কসম করল সে শিরিক করল। [আবু দাউদঃ ২৮২৯]
★গায়রুল্লাহ নামে কসম খাওয়া মানে আল্লাহ তায়ালা ব্যাতিত অন্য কিছুর নামে কসম,শপথ করা। যেমন বাপ, মা, ছেলে, পীর, কাবা, নবী, মসজিদ, কিবলা, বই, দেশমাতা ইত্যাদির নামে কসম খাওয়া শিরক।
কসম হবে কেবল আল্লাহর নামে অথবা তার কোন গুনের নাম নিয়ে অথবা কুরআন স্পর্শ করে।
অন্যথায় তাহা জায়েজ নয়।
,
হাদীস শরীফে এসেছেঃ
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا أَبُو خَالِدٍ الأَحْمَرُ، عَنِ الْحَسَنِ بْنِ عُبَيْدِ اللَّهِ، عَنْ سَعْدِ بْنِ عُبَيْدَةَ، أَنَّ ابْنَ عُمَرَ، سَمِعَ رَجُلاً، يَقُولُ لاَ وَالْكَعْبَةِ . فَقَالَ ابْنُ عُمَرَ لاَ يُحْلَفُ بِغَيْرِ اللَّهِ فَإِنِّي سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ " مَنْ حَلَفَ بِغَيْرِ اللَّهِ فَقَدْ كَفَرَ أَوْ أَشْرَكَ " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ . وَفُسِّرَ هَذَا الْحَدِيثُ عِنْدَ بَعْضِ أَهْلِ الْعِلْمِ أَنَّ قَوْلَهُ " فَقَدْ كَفَرَ أَوْ أَشْرَكَ " عَلَى التَّغْلِيظِ . وَالْحُجَّةُ فِي ذَلِكَ حَدِيثُ ابْنِ عُمَرَ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم سَمِعَ عُمَرَ يَقُولُ وَأَبِي وَأَبِي . فَقَالَ " أَلاَ إِنَّ اللَّهَ يَنْهَاكُمْ أَنْ تَحْلِفُوا بِآبَائِكُمْ " . وَحَدِيثُ أَبِي هُرَيْرَةَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَنَّهُ قَالَ " مَنْ قَالَ فِي حَلِفِهِ وَاللاَّتِ وَالْعُزَّى فَلْيَقُلْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا مِثْلُ مَا رُوِيَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَنَّهُ قَالَ " إِنَّ الرِّيَاءَ شِرْكٌ " . وَقَدْ فَسَّرَ بَعْضُ أَهْلِ الْعِلْمِ هَذِهِ الآيَة : ( وَمَنْ كَانَ يَرْجُو لِقَاءَ رَبِّهِ فَلْيَعْمَلْ عَمَلاً صَالِحًا ) الآيَةَ قَالَ لاَ يُرَائِي .
ইবনে উমার (রঃ) একটি লোককে বলতে শুনলেন ‘না, কাবার কসম!’ তিনি তাকে বললেন, ‘আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো নামে কসম খেও না। কেননা, আমি রাসুলুল্লাহ (সঃ) কে বলতে শুনেছি, “যে ব্যক্তি গায়রুল্লাহ নামে কসম করে, সে কুফরি অথবা শিরক করে।” (আবু দাউদ ৩২৫১, তিরমিজি ১৫৩৫ নং)
যদি আল্লাহর নাম নিয়ে কসম না করেন,স্রেফ এইভাবে বলেন যে আমি উক্ত কাজ করবোনা,তাহলে এটি ওয়াদা হবে,কসম নয়। এর জন্য কোনো কাফফারা নেই। আর যদি আল্লাহর নাম নিয়েই কসম করেন,তবে মনে মনে,তাহলেও সেটি কসম হবেনা।
এর জন্যেও কাফফারা নেই।
২.
একই রমযানের একাধিক রোযা ছুটে গেলেও ১টি কাফ্ফারা ওয়াজিব হবে। তবে, যে কয়টি রোযা ছুটবে তার প্রতিটারই কিন্তু কাযা আদায় করতে হবে।
আর প্রত্যেক বসরের জন্য আলাদা আলাদা কাফফারা আদায় করতে হবে ।
والله اعلم بالصواب
মন্তব্য (০)
কোনো মন্তব্য নেই।
এ সম্পর্কিত আরও জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর
১১১০২
৩ ডিসেম্বর, ২০২১
ঢাকা

উত্তর দিয়েছেনঃ মুসলিম বাংলা ফাতওয়া বিভাগ
১১১৪১
৬ ডিসেম্বর, ২০২১
Abu Dhabi, Abu Dhabi, Abu Dhabi, United Arab Emirates

উত্তর দিয়েছেনঃ মুফতি সাইদুজ্জামান কাসেমি
৪৫৪
২১ আগস্ট, ২০২১

উত্তর দিয়েছেনঃ মাসিক আলকাউসার
সাম্প্রতিক প্রশ্নোত্তর
মাসায়েল-এর বিষয়াদি
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে