দুনিয়া ও আখেরাতের মাঝে ভারসাম্য রাখার উপায়!
প্রশ্নঃ ১০৩৭৫৩. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, একজন মুসলিমের জীবনে দুনিয়া ও আখেরাতের মাঝে সঠিক ভারসাম্য কীভাবে বজায় রাখা যায়?,
১৯ মে, ২০২৫
ঢাকা
উত্তর
و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
একজন মুসলিমের জীবনে দুনিয়া ও আখেরাতের মধ্যে সঠিক ভারসাম্য বজায় রাখা ইসলামের মূল শিক্ষার একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক। ইসলাম দুনিয়াকে পুরোপুরি পরিত্যাগ করতে বা শুধু আখেরাতের জন্য জীবনযাপন করতে বলে না; বরং এটি উভয়ের মধ্যে একটি সুষম মধ্যপন্থা অবলম্বন করতে উৎসাহিত করে। নিচে কুরআন, হাদিস এবং ইসলামী নীতির ভিত্তিতে এই বিষয়ে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করবো।
আল্লাহ তাআলা বলেন,
وَابْتَغِ فِيمَا آتَاكَ اللَّهُ الدَّارَ الْآخِرَةَ وَلَا تَنسَ نَصِيبَكَ مِنَ الدُّنْيَا
অনুবাদ: আল্লাহ তোমাকে যা-কিছু দিয়েছেন তার মাধ্যমে আখেরাতের নিবাস লাভের চেষ্টা কর এবং দুনিয়া হতেও নিজ হিস্যা অগ্রাহ্য করো না। আল্লাহ যেমন তোমার প্রতি অনুগ্রহ করেছেন, তেমনি তুমিও (অন্যদের প্রতি) অনুগ্রহ কর। (সূরা কাসাস, আয়াত : ৭৭)
ব্যাখ্যা: এই আয়াত স্পষ্টভাবে দুনিয়া ও আখিরাতের মধ্যে ভারসাম্যের নির্দেশ দেয়। দুনিয়ার প্রয়োজনীয় চাহিদা পূরণ করতে হবে, তবে আখিরাতকে প্রাধান্য দিতে হবে। অর্থাৎ, আখেরাতের নিবাস সন্ধানের মানে এ নয় যে, দুনিয়ার প্রয়োজনসমূহ বিলকুল অগ্রাহ্য করা হবে। দুনিয়ার প্রয়োজনীয় উপকরণ সংগ্রহ ও তা রাখাতে দোষের কিছু নেই। হাঁ দুনিয়ার কামাই-রোজগারে এভাবে নিমজ্জিত হয়ো না, যদ্দরুণ আখেরাত ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
হাদীসে এসেছে,
وَحَدَّثَنِي عَنْ مَالِك أَنَّهُ بَلَغَهُ أَنَّهُ كَانَ يُقَالُ إِنَّ أَحَدًا لَنْ يَمُوتَ حَتَّى يَسْتَكْمِلَ رِزْقَهُ فَأَجْمِلُوا فِي الطَّلَبِ
মালিক (রাহঃ)-এর নিকট এই হাদীস পৌঁছেছে যে, সাহাবীদের যুগে বলা হত, স্বীয় রিযিক পূর্ণ করার পূর্বে কোনো ব্যক্তির মৃত্যু হতে পারে না। অতএব ধৈর্য সহকারে জীবিকা অন্বেষণ কর অর্থাৎ এই ব্যাপারে বাড়াবাড়ি করিও না। জীবিকা অন্বেষণে এত লেগে যেও না। যাতে আল্লাহকেও ভুলে যেতে হয়, হালাল হারামের পার্থক্য থাকে না। যা নির্দিষ্ট আছে তাই পাবে।
আল মুওয়াত্তা - ইমাম মালিক রহঃ (মুওয়াত্তা মালিক)
হাদীস নং: ১৬৬৮
অন্য বর্ণনায় এসেছে,
عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، قَالَ: أَخَذَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِمَنْكِبِي، فَقَالَ: «كُنْ فِي الدُّنْيَا كَأَنَّكَ غَرِيبٌ أَوْ عَابِرُ سَبِيلٍ» وَكَانَ ابْنُ عُمَرَ، يَقُولُ: «إِذَا أَمْسَيْتَ فَلاَ تَنْتَظِرِ الصَّبَاحَ، وَإِذَا أَصْبَحْتَ فَلاَ تَنْتَظِرِ المَسَاءَ، وَخُذْ مِنْ صِحَّتِكَ لِمَرَضِكَ، وَمِنْ حَيَاتِكَ لِمَوْتِكَ»
আব্দুল্লাহ ইবনে উমর (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ রাসূলুল্লাহ (ﷺ) একদা আমার উভয় কাঁধ ধরে বললেনঃ তুমি এ দুনিয়াতে একজন মুসাফির অথবা পথযাত্রীর মত থাক। আর ইবনে উমর (রাযিঃ) বলতেন, তুমি সন্ধ্যায় উপনীত হলে আর ভোরের অপেক্ষা করো না এবং ভোরে উপনীত হলে সন্ধ্যার অপেক্ষা করো না। তোমার সুস্থতার অবকাশে পীড়িত অবস্থার জন্য সঞ্চয় করে রেখো। আর জীবিত অবস্থায় তোমার মৃত্যুর জন্য প্রস্তুতি নিও।
আল জামিউস সহীহ- ইমাম বুখারী রহঃ (সহীহ বুখারী)
হাদীস নং: ৫৯৭৪ আন্তর্জাতিক নং: ৬৪১৬
হাদীসের লিংকঃ https://muslimbangla.com/hadith/5974
ব্যাখ্যা: এই হাদিস দুনিয়াকে অস্থায়ী হিসেবে বিবেচনা করতে এবং আখিরাতের জন্য প্রস্তুতি নিতে বলে, তবে দুনিয়ার প্রয়োজনীয় দায়িত্ব পালন করতে বাধা দেয় না।
দুনিয়া ও আখিরাতের ভারসাম্য বজায় রাখার ব্যবহারিক উপায়
নিম্নে কিছু ব্যবহারিক পদক্ষেপ দেওয়া হলো, যা একজন মুসলিমের জন্য প্রযোজ্য:
এক. ইবাদতের মাধ্যমে আখেরাতকে প্রাধান্য দেওয়া:
পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ: নিয়মিত পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করুন। নামাজ দুনিয়ার ব্যস্ততার মধ্যেও আল্লাহর সাথে সংযোগ রাখে। কুরআনে বলা হয়েছে: ‘নিশ্চয়ই নামাজ মুমিনদের উপর নির্দিষ্ট সময়ে ফরজ করা হয়েছে’ (সূরা নিসা, ৪:১০৩)।
কুরআন তিলাওয়াত: প্রতিদিন কিছু সময় কুরআন পড়া ও বোঝার জন্য ব্যয় করুন। এটি আখিরাতের সাফল্যের পথ দেখায়।
যিকির ও দুআ: সকাল-সন্ধ্যার যিকির (যেমন, আয়াতুল কুরসি, তিন কুল) এবং নিয়মিত দুআ করুন। দুআ: رَبَّنَا آتِنَا فِي الدُّنْيَا حَسَنَةً وَفِي الْآخِرَةِ حَسَنَةً وَقِنَا عَذَابَ النَّارِ (সূরা বাকারা, ২:২০১)
রমজান ও নফল ইবাদত: রমজানের রোজা, তারাবি, এবং নফল নামাজ (তাহাজ্জুদ, ইশরাক) আখিরাতের প্রস্তুতি মজবুত করে।
দুই. হালাল উপার্জন ও দুনিয়ার দায়িত্ব পালন:
হালাল রিযিক: হালাল পেশায় কাজ করুন, যেমন, শিক্ষকতা, ব্যবসা, চাকরি, বা ফ্রিল্যান্সিং। হাদিসে বলা হয়েছে,
- طلبُ الحلالِ فريضةٌ بعدَ الفريضةِ
হালাল রিযিকের সন্ধান করা ফরজ ইবাদতের পরে সর্বোত্তম কাজ” (বায়হাকি, শুআবুল ঈমান, হাদিস: 12030)
পরিবারের দায়িত্ব: পরিবারের জন্য হালাল উপায়ে উপার্জন করা, তাদের পরকালের বিষয়ে ফিকির কারা এবং তাদের প্রতি দায়িত্ব পালন করা ইবাদত। কুরআনে বলা হয়েছে, ‘তোমরা তোমাদের পরিবারকে আগুন থেকে রক্ষা করো।’ (সূরা তাহরিম, ৬৬:৬)।
সময় ব্যবস্থাপনা: দুনিয়ার কাজ (চাকরি, পড়াশোনা) এবং ইবাদতের জন্য সময় ভাগ করে নিন। উদাহরণস্বরূপ, অফিসের বিরতিতে যোহর নামাজ পড়ুন।
তিন. নিয়ত ও তাওয়াক্কুল:
সঠিক নিয়ত: দুনিয়ার প্রতিটি কাজ (যেমন, উপার্জন, পড়াশোনা) আল্লাহর সন্তুষ্টি ও আখিরাতের সাফল্যের নিয়তে করুন। হাদিসে বলা হয়েছে: ‘কাজের ফল নিয়তের উপর নির্ভর করে’ (সহিহ বুখারি, হাদিস: ১)।
আল্লাহর উপর ভরসা: দুনিয়ার চাহিদা পূরণে আল্লাহর উপর তাওয়াক্কুল করুন। কুরআনে বলা হয়েছে: ‘যে আল্লাহর উপর ভরসা করে, তাঁর জন্য আল্লাহই যথেষ্ট।’ (সূরা তালাক, : ৩)।
চার. দান-সদকা ও সমাজসেবা:
যাকাত ও সদকা: আপনার সম্পদের ২.৫% বছরে যাকাত হিসেবে দিন এবং নিয়মিত সদকা দিন। এটি দুনিয়ার সম্পদকে পবিত্র করে এবং আখিরাতের পুরস্কার বাড়ায়। হাদিসে বলা হয়েছে: ‘সদকা সম্পদ কমায় না’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ২৫৮৮)
সমাজসেবা: বাংলাদেশে গরিব-দুঃখীদের সাহায্য করুন, যেমন, থ্যালাসেমিয়া রোগীদের রক্তদান, এতিমদের জন্য দান, বা শিক্ষা প্রকল্পে অংশগ্রহণ। এটি দুনিয়া ও আখিরাত উভয়ের জন্য উপকারী।
পাঁচ. দুনিয়ার মোহ ত্যাগ:
অতিরিক্ত লোভ এড়ানো: দুনিয়ার সম্পদ, ক্ষমতা, বা বিলাসিতার পেছনে অন্ধভাবে না ছুটে আখিরাতের জন্য কাজ করুন। কুরআনে বলা হয়েছে: “দুনিয়ার জীবন খেলাধুলা ও কৌতুক ছাড়া কিছুই নয়, আর আখিরাতের জীবনই মুত্তাকিদের জন্য শ্রেয়” (সূরা আনআম, ৬:৩২)।
জুহদ (সংযম): প্রয়োজনের অতিরিক্ত সম্পদ জমা না করে দান করুন।
عَنْ سَهْلِ بْنِ سَعْدٍ السَّاعِدِيِّ، قَالَ أَتَى النَّبِيَّ ـ صلى الله عليه وسلم ـ رَجُلٌ فَقَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ دُلَّنِي عَلَى عَمَلٍ إِذَا أَنَا عَمِلْتُهُ أَحَبَّنِيَ اللَّهُ وَأَحَبَّنِيَ النَّاسُ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ " ازْهَدْ فِي الدُّنْيَا يُحِبَّكَ اللَّهُ وَازْهَدْ فِيمَا فِي أَيْدِي النَّاسِ يُحِبُّوكَ " .
সাহল ইবন সা'দ সাঈদী (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, এক ব্যক্তি নবী (ﷺ) -এর নিকট হাযির হলো, এবং বললোঃ হে আল্লাহর রাসূল! আমাকে এমন একটি আমল বাতলে দিন, যখন আমি তা আমল করব, আল্লাহ তা'আলা আমাকে ভালবাসবেন এবং লোকেরাও আমাকে ভালবাসবে। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেনঃ তুমি দুনিয়ার প্রতি যুহদ ইখতিয়ার করো, আল্লাহ তোমাকে ভালবাসবেন এবং মানুষের হাতে যা আছে, তার প্রতি অনাসক্ত হয়ে যাও, তাহলে তারা তোমাকে ভালাবাসবে।
কিতাবুস সুনান - ইমাম ইবনে মাজা' রহঃ (সুনানে ইবনে মাজা')
হাদীস নং: ৪১০২ আন্তর্জাতিক নং: ৪১০২
হাদীসের লিংকঃ https://muslimbangla.com/hadith/29393
ছয়. ইলম অর্জন ও প্রচার:
ধর্মীয় জ্ঞান: ইসলামী ইলম (কুরআন, হাদিস, ফিকহ) শিখুন এবং তা পরিবার ও সমাজে ছড়িয়ে দিন। বাংলাদেশে মাদ্রাসা, মসজিদ, বা অনলাইন প্ল্যাটফর্মে ইলম শেখার সুযোগ রয়েছে।
আপনার কাজগুলো করার জন্য একটি রুটিন তৈরি করুন।
১. দৈনন্দিন রুটিন:
একটি সময়সূচি তৈরি করুন, যেখানে নামাজ, কাজ, পরিবার, এবং ইবাদতের জন্য সময় থাকে।
উদাহরণ: সকালে ফজর ও কুরআন, দিনে কাজ/পড়াশোনা, রাতে ইশা ও তাহাজ্জুদ।
২. মুফতির পরামর্শ:
দুনিয়া ও আখিরাতের ভারসাম্য নিয়ে সন্দেহ হলে স্থানীয় মুফতি বা দারুল ইফতার সাথে যোগাযোগ করুন।
৩. দুআ ও তওবা:
নিয়মিত তওবা করুন: أَسْتَغْفِرُ اللَّهَ الَّذِي لَا إِلَهَ إِلَّا هُوَ وَأَتُوبُ إِلَيْهِ।
৪. সৎ সঙ্গ:
সৎ ও ধার্মিক বন্ধু বা পরিবারের সাথে সময় কাটান।
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ الرَّجُلُ عَلَى دِينِ خَلِيلِهِ فَلْيَنْظُرْ أَحَدُكُمْ مَنْ يُخَالِلُ
আবু হুরায়রা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ নবী করীম (ﷺ) বলেছেনঃ ব্যক্তি তাঁর বন্ধুর দ্বীনের অনুসারী হয়। কাজেই, তোমাদের দেখা উচিত, কার সাথে বন্ধুত্ব করছো।
কিতাবুস সুনান - ইমাম আবু দাউদ রহঃ (সুনানে আবু দাউদ)
হাদীস নং: ৪৭৫৮ আন্তর্জাতিক নং: ৪৮৩৩
হাদীসের লিংকঃ https://muslimbangla.com/hadith/19105
মোটকথা একজন মুসলিমের জন্য দুনিয়া ও আখিরাতের ভারসাম্য বজায় রাখার মূল চাবিকাঠি হলো আল্লাহর উপর তাওয়াক্কুল, সঠিক নিয়ত, এবং ইবাদত ও দুনিয়ার কাজের মধ্যে সমন্বয়। নিয়মিত নামাজ, হালাল উপার্জন, দান-সদকা, এবং দুনিয়ার মোহ ত্যাগের মাধ্যমে এই ভারসাম্য অর্জন সম্ভব। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে, সময় ব্যবস্থাপনা, সমাজসেবা, এবং ইলম অর্জন এই ভারসাম্যকে আরও মজবুত করে। আল্লাহ আমাদের সকলকে দুনিয়া ও আখিরাতে সাফল্য দান করুন।
والله اعلم بالصواب
মুহাদ্দিস, জামিয়া বাবুস সালাম, বিমানবন্দর ঢাকা
মন্তব্য (০)
কোনো মন্তব্য নেই।
এ সম্পর্কিত আরও জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর
১৪৬২৭
১৭ আগস্ট, ২০২২
Sydney

উত্তর দিয়েছেনঃ মুফতি সাইদুজ্জামান কাসেমি
২৮২২৫
কোনো নারীর একাধিক বিবাহ হলে জান্নাতে কোন স্বামীর সাথে থাকবে?
৩১ জানুয়ারী, ২০২৩
পশ্চিমবঙ্গ ৭৪৩৩৭৬

উত্তর দিয়েছেনঃ মুফতি সাইদুজ্জামান কাসেমি
সাম্প্রতিক প্রশ্নোত্তর
মাসায়েল-এর বিষয়াদি
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে