নারীর ইহরাম সম্পর্কিত মাসায়েল
প্রশ্নঃ ১০১৫৯৫. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, ইহরাম অবস্থায় নারীদের বিস্তারিত মাসায়েল কি কি?
১ মে, ২০২৫
ঢাকা ১২০৭
উত্তর
و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
নারীদের ইহরামের মাসায়েল পুরুষদের মতই। তবে কিছু বিষয় ব্যতিক্রম রয়েছে।
১. মাথা ঢেকে রাখা ওয়াজিব। তবে চেহারাতে নিকাব পরিধান করতে পারবে না। কিন্তু পরপুরুষ থেকে চেহারা আড়াল করতে হবে। এজন্য বিকল্প পন্থা সানক্যাপের উপর থেকে নিকাব ঝুলিয়ে দেয়া।
২. এমনিভাবে হাত মোজা পরিধানে হাদীসে নিষেধাজ্ঞা আছে। কিন্তু পরপুরুষের দৃষ্টি থেকে হাত আড়াল করার জন্য বিকল্প পন্থা হিসেবে রয়েছে বোরকা এবং ওড়না। সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৮৩৮।
৩. পরপুরুষের সামনে বেপর্দা হওয়া নিষেধ। তাই পরপুরুষ থেকে চেহারা আড়াল করার জন্য বিশেষ হজ্ব ক্যাপ মাথায় দিয়ে চেহারার সম্মুখে নিকাব ঝুলিয়ে দেবে। বাতাসের কারণে বা চলার সময় চেহারায় এই কাপড় লাগলে অসুবিধা নেই।
৪. পা মোজা ব্যবহার করবে।
৫. সেলাইযুক্ত ঢিলেঢালা ও স্বাভাবিক কাপড় পরিধান করবে। সাদা-কালো যে কোন রং-এর বোরকা পরিধান করতে পারবে।
৬. অলংকার ব্যবহার করতে পারবে। তবে না করা উত্তম।
৭. তালবিয়া উচ্চস্বরে পড়া নিষেধ। নিজ কানে শুনতে পায় এতটুকু আওয়াজ করে পড়বে।
৮. তাওয়াফে রমল ও ইযতিবা করবে না এবং সায়ীতেও সবুজ বাতির নিচে দৌড়াবে না। স্বভাবিকভাবে হাটবে।
৯. সায়ীর সময় ভীড় থাকলে সাফা-মারওয়ার(১) ওপরে পুরুষের ভীড়ে প্রবেশ করবে না।
১০. পুরুষের ভীড়ের মধ্যে হাজরে আসওয়াদ চুম্বন করতে যাবে না এবং হাত লাগাবে না।
১১. পুরুষের ভীড়ের মধ্যে মাকামে ইবরাহীমের পিছনে তাওয়াফের দুই রাকাত নামায আদায় করবে না। হারামের যে কোন ভীড়মুক্ত জায়গায় আদায় করবে।
১২. নারীদের চুল মুণ্ডানো নিষেধ। হালাল হওয়ার জন্য স্বামী, মাহরাম কিংবা অন্য কোন নারীর মাধ্যমে চুলের অগ্রভাগ থেকে আঙ্গুলের এক কর পরিমাণ কেটে ফেলবে। গাইরে মাহরামকে দিয়ে চুল কাটানো হারাম।
১৩. হায়েয নেফাসের সময় হজ্বের সকল কাজ করবে। শুধু তাওয়াফ ও সায়ী করবে না। ইহরামের পূর্বে হায়েয নেফাস হলে গোসল করে ইহরাম বেঁধে তাওয়াফ এবং সায়ী ছাড়া হজ্বের অন্যসব কাজ করবে।
১৪. হায়েযের কারণে ফরয তাওয়াফ নির্দিষ্ট সময় থেকে বিলম্বে করলে দম ওয়াজিব হবে না। যদি কোন মহিলা হায়েয বা নেফাস অবস্থায় থাকার কারণে হজ্বের ফরয তাওয়াফ করতে না পারে, এদিকে পবিত্র হওয়ার আগেই ফিরতি ফ্লাইটের তারিখ এসে যায় এবং কোনভাবেই তারিখ পিছানো সম্ভব না হয়, তাহলে সে এ অবস্থাতেই তাওয়াফ করে নিবে। এর দ্বারা হজ্বের ফরয আদায় হয়ে যাবে। তবে হারামের সীমানায় একটি ‘বাদানা’ তথা উট বা গরু কুরবানী দেওয়া ওয়াজিব হবে।
১৫. যদি দেশে ফেরার সময় হায়েয এসে যায় আর বিদায়ী তাওয়াফ করতে না পারে, তাহলে দম ওয়াজিব হবে না। তবে পবিত্র হয়ে বিদায়ী তাওয়াফ করার পর রওয়ানা করা উত্তম। মুয়াল্লিমুল হুজ্জাজ: ১২১-১২৩; ফতোয়া শামী-৩/৪৯৯,
টিকা: (১) সাফা ও মারওয়া হলো দুটি পাহাড়, যা মসজিদুল হারামসংলগ্ন অবস্থিত। এ দুটি পাহাড়ের মধ্যবর্তী স্থানে হজ্ব ও উমরা পালনের সময় সায়ী করা হয়। সাফা ও মারওয়া মধ্যে সাতবার সায়ী (দৌড়ানো) ওয়াজিব। বর্তমানে সাফা পাহাড়ের কিছু অংশ কাঁচ দিয়ে ঘেরা আছে।
والله اعلم بالصواب
ইসহাক মাহমুদ
মুফতী ও মুহাদ্দিস, জামিআ মুহাম্মাদিয়া আরাবিয়া
খতীব, নবোদয় সি ব্লক জামে মসজিদ, মোহাম্মদপুর
ইমাম, বায়তুল ওয়াহহাব জামে মসজিদ, মোহাম্মদপুর
মন্তব্য (0)
কোনো মন্তব্য নেই। প্রথম মন্তব্য করুন!
মন্তব্য করতে লগইন করুন
এ সম্পর্কিত আরও জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর
মাসায়েল-এর বিষয়াদি
আল কুরআনুল কারীম
৪
হাদীস ও সুন্নাহ
৬
তাসাউফ-আত্মশুদ্ধি । ইসলাহী পরামর্শ
৩
শরীআত সম্পর্কিত
১৪
ফিতনাসমুহ; বিবরণ - করণীয়
২
আখিরাত - মৃত্যুর পরে
৩
ঈমান বিধ্বংসী কথা ও কাজ
৬
ফিরাকে বাতিলা - ভ্রান্ত দল ও মত
২
পবিত্রতা অর্জন
৮
নামাযের অধ্যায়
১৯
যাকাত - সদাকাহ
৫
রোযার অধ্যায়
৬
হজ্ব - ওমরাহ
২
কাফন দাফন - জানাযা
৫
কসম - মান্নত
১
কুরবানী - যবেহ - আকীকা
৪
বিবাহ শাদী
৮
মীরাছ-উত্তরাধিকার
২
লেনদেন - ব্যবসা - চাকুরী
৯
আধুনিক মাসায়েল
৬
দন্ড বিধি
২
দাওয়াত ও জিহাদ
৩
ইতিহাস ও ঐতিহ্য
৬
সীরাতুন নবী সাঃ । নবীজীর জীবনচরিত
৩
সাহাবা ও তাবেঈন
৩
ফাযায়েল ও মানাকেব
৩
কিতাব - পত্রিকা ও লেখক
৩
পরিবার - সামাজিকতা
৭
মহিলা অঙ্গন
২
আখলাক-চরিত্র
২
আদব- শিষ্টাচার
১২
রোগ-ব্যধি। চিকিৎসা
২
দোয়া - জিকির
২
নাম। শব্দ জ্ঞান
৩
নির্বাচিত
২
সাম্প্রতিক
১
বিবিধ মাসআলা
১