আপনার জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর

সকল মাসায়েল একত্রে দেখুন

প্রশ্নঃ ১০০৩২. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, সম্মানিত মুফতি সাহেব,নিচের লেখা গুলো কি ঠিক আছে?? বিশেষত শেষ অনুচ্ছেদ এর কথা গুলো।"আসরের ওয়াক্ত আরম্ভের ক্ষেত্রে ইমামে আজমের মত হল তা বস্তুর ছায়া ২ গুণ হওয়ার পর থেকে আরম্ভ হয়। হানাফী মাযহাবের প্রসিদ্ধ মত এটিই। ইমাম আবু ইউসুফ এবং ইমাম মুহাম্মাদ এক মিছল এর পক্ষে। আমি আজম থেকেও অনুরূপ একটি মত বর্ণিত আছে। হানাফী মাযহাবের অনুসারী যদি এক মিছলে আসরের নামাজ পড়ে তাহলে তা হয়ে যাবে। তবে শর্ত হল তাকে স্থায়ীভাবে এই মতটি গ্রহণ করতে হবে। সব সময়ের জন্যই সে এইমতে অনুসরণ করবে। এমন করবে না যে, নিজের সুবিধামতো কখনো দুই মিছলে জোহর পড়ল, আবার কখনও এক মিছলে আসর পড়ল।",

৭ নভেম্বর, ২০২১

ব্রাহ্মণবাড়ীয়া

উত্তর

و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم





(আপনার জিজ্ঞাসিত বিষয়টি অনেকটা খণ্ডিত বিষয়। পূর্বাপর না জানলে আলোচনা অস্পষ্ট থাকবে। তাই বিস্তারিত জানতে নিচের আলোচনাটি দেখতে পারেন)

জোহরের ওয়াক্ত কখন শেষ হবে? এবং আসরের সূচনা কখন হবে? এ নিয়ে উলামায়ে কেরামদের মধ্যে মতবিরোধ রয়েছে।


ইমাম শা'ফেয়ী রাহ,ইমাম মালিক রাহ,ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল রাহ সহ ইমাম আবু ইউসুফ রাহ ও ইমাম মুহাম্মাদ রাহ এর মতে ছায়ায়ে আসলি ব্যতীত এক মিছিল পরিমাণ প্রত্যেক জিনিষের ছায়া হওয়ার পর জোহরের ওয়াক্ত শেষ হয়ে যায়,এবং আসরের ওয়াক্ত শুরু হয়ে যায়।ইমাম আবু-হানিফা রাহ থেকেও এক অভিমত রয়েছে।

ইমাম আবু হানিফা রাহ থেকে প্রসিদ্ধ মতানুযায়ী দুই মিছিলের পর জোহরের ওয়াক্ত শেষ হবে এবং আসরের ওয়াক্ত শুরু হবে।

আসরের সালাত দুই মিছিলের পর না এক মিছিলের পর এ নিয়ে উলামায়ে আহনাফদের মধ্যেও মতবিরোধ রয়েছে,এবং দুই অভিমতের উপর-ই ফাতাওয়া রয়েছে, তবে ইবনে আবেদিন শামী সহ অধিকাংশ উলামায়ে কেরাম মনে করেন দুই মিছিলের পর-ই সুন্নাহ সম্মত ও উত্তম ।
এ সম্পর্কে উম্মে সালামাহ রাঃ থেকে বর্ণিত আছে
161 عَنْ أُمِّ سَلَمَةَ، أَنَّهَا قَالَتْ: «كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَشَدَّ تَعْجِيلًا لِلظُّهْرِ مِنْكُمْ، وَأَنْتُمْ أَشَدُّ تَعْجِيلًا لِلْعَصْرِ مِنْهُ»: وَقَدْ رُوِيَ هَذَا الحَدِيثُ عَنِ ابْنِ جُرَيْجٍ، عَنْ ابْنِ أَبِي مُلَيْكَةَ، عَنْ أُمِّ سَلَمَةَ نَحْوَهُ،
[حكم الألباني] :)صحيح (
ترمذي
উম্মে সালামাহ রাঃ বলেনঃনবী কারীম সাঃসর্বদাই জোহরের নামায তারাতারি পড়তেন(এবং আসর দেরীতে দুই মিছিলের পর পড়তেন) অথচ তোমরা আসরের নামায তারাতারি পড়ে নাও।
আসরের নামায দুই মিছলের(আসল ছায়া ব্যতীত প্রতিটা জিনিষের দিগুন ছায়া) পর উত্তম নিম্নোক্ত হাদীসের দিকে তাকালে সেটা অনায়াসে বুঝা যায়।
ﻋﻦ ﺍﺑﻦ ﻋﻤﺮ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻬﻤﺎ ﺃﻥ ﺍﻟﻨﺒﻲ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻗﺎﻝ :
( ﺇِﻧَّﻤَﺎ ﺑَﻘَﺎﺀُﻛُﻢ ﻓِﻴﻤَﺎ ﺳَﻠَﻒَ ﻗَﺒﻠَﻜُﻢ ﻣِﻦَ ﺍﻷُﻣَﻢِ ﻛَﻤَﺎ ﺑَﻴﻦَ ﺻَﻼﺓِ ﺍﻟﻌَﺼْﺮِ ﺇِﻟَﻰ ﻏُﺮُﻭﺏِ ﺍﻟﺸَّﻤﺲِ ، ﺃُﻭﺗِﻲَ ﺃَﻫﻞُ ﺍﻟﺘَّﻮﺭَﺍﺓِ ﺍﻟﺘَّﻮﺭَﺍﺓَ ﻓَﻌَﻤِﻠُﻮﺍ ، ﺣَﺘّﻰ ﺇِﺫَﺍ ﺍﻧﺘَﺼَﻒَ ﺍﻟﻨَّﻬَﺎﺭُ ﻋَﺠَﺰُﻭﺍ ، ﻓَﺄُﻋﻄُﻮﺍ ﻗِﻴﺮَﺍﻃًﺎ ﻗِﻴﺮَﺍﻃًﺎ ، ﺛُﻢَّ ﺃُﻭﺗِﻲَ ﺃَﻫﻞُ ﺍﻹِﻧﺠِﻴﻞِ ﺍﻹِﻧﺠِﻴﻞَ ﻓَﻌَﻤِﻠُﻮﺍ ﺇِﻟَﻰ ﺻَﻼﺓِ ﺍﻟﻌَﺼﺮِ ﺛُﻢَّ ﻋَﺠَﺰُﻭﺍ ، ﻓَﺄُﻋﻄُﻮﺍ ﻗِﻴﺮَﺍﻃًﺎ ﻗِﻴﺮَﺍﻃًﺎ ، ﺛُﻢَّ ﺃُﻭﺗِﻴﻨَﺎ ﺍﻟﻘُﺮﺁﻥَ ﻓَﻌَﻤِﻠﻨَﺎ ﺇِﻟَﻰ ﻏُﺮُﻭﺏِ ﺍﻟﺸَّﻤﺲِ ، ﻓَﺄُﻋﻄِﻴﻨَﺎ ﻗِﻴﺮَﺍﻃَﻴﻦِ ﻗِﻴﺮَﺍﻃَﻴﻦِ ، ﻓَﻘَﺎﻝَ ﺃَﻫﻞُ ﺍﻟﻜِﺘَﺎﺑَﻴﻦِ : ﺃَﻱْ ﺭَﺑَّﻨَﺎ ! ﺃَﻋﻄَﻴﺖَ ﻫَﺆُﻻﺀِ ﻗِﻴﺮَﺍﻃَﻴﻦِ ﻗِﻴﺮَﺍﻃَﻴﻦِ ، ﻭَﺃَﻋﻄَﻴﺘَﻨَﺎ ﻗِﻴﺮَﺍﻃًﺎ ﻗِﻴﺮَﺍﻃًﺎ ، ﻭَﻧَﺤﻦُ ﻛُﻨَّﺎ ﺃَﻛﺜَﺮَ ﻋَﻤَﻠًﺎ ؟ ! ﻗَﺎﻝَ : ﻗَﺎﻝَ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﺰَّ ﻭَﺟَﻞَّ : ﻫَﻞ ﻇَﻠَﻤﺘُﻜُﻢ ﻣِﻦ ﺃَﺟﺮِﻛُﻢ ﻣِﻦ ﺷَﻲْﺀٍ ؟ ﻗَﺎﻟُﻮﺍ : ﻻ ، ﻗَﺎﻝَ : ﻓَﻬُﻮَ ﻓَﻀﻠِﻲ ﺃُﻭﺗِﻴﻪِ ﻣَﻦ ﺃَﺷَﺎﺀُ ) ﺭﻭﺍﻩ ﺍﻟﺒﺨﺎﺭﻱ ( 557 ) .
হযরত ইবনে উমর রাঃ থেকে বর্ণিত, নবী কারীম সাঃ একবার বললেনঃ পুর্বেকার উম্মাতের স্থায়িত্বের তুলনায় তোমাদের স্থায়িত্ব হল আসর থেকে নিয়ে সূর্য অস্ত যাওয়ার মধ্যবর্তী সময়ের অনুরূপ।
"তাওরাত অনুসারীদেরকে তাওরাত দেওয়া হয়েছিল,তারা তদনুসারে কাজ করতে লাগল; যখন দুপুর হল, তখন তারা অপারগ হয়ে পড়ল, তাদের এক এক ‘কীরাত’ করে পারিশ্রমিক প্রদান করা হয়।
''তারপর ইনজীল অনুসারীদেরকে ইনজীল দেওয়া হল, তারা আসরের সালাত (নামাজ) পর্যন্ত কাজ করে অপারগ হয়ে পড়ল, তাদেরকে এক এক ‘কীরাত’ করে পারিশ্রমিক দেওয়া হল।
"তারপর আমাদেরকে কুরাআন দেওয়া হল,আমরা সূর্যাস্ত পর্যন্ত কাজ করলাম, আমদের দুই দুই ‘কীরাত’ করে দেওয়া হল।
এতে উভয় কিতাবী সম্প্রদায় বলল, হে আমাদের প্রতিপালক! তাদের দুই দুই ‘কীরাত’ করে দান করেছেন, আর আমাদেরকে দিয়েছেন এক এক কীরাত করে; অথচ আমলের দিক দিয়ে আমরাই বেশী। আল্লাহ তা’আলা বললেনঃ তোমাদের পারিশ্রমিকের ব্যাপারে আমি কি তোমাদের প্রতি কোনরূপ যুলুম করেছি? তারা বলল, না। তখন আল্লাহ্ তা’আলা বললেনঃ এ হল, আমার অনুগ্রহ যাকে ইচ্ছা তাকে দেই।

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
আপনি যে মাযহাবকে ফলো করেন, সকল মাসআলায় ঐ মাযহাবকে ফলো করবেন। নিজের লাভ দেখে কোনো মাযহাবকে গ্রহণ করতে পারবেন না।

(২) সর্তকতা অবলম্বনের জন্য একটু বিলম্ব করলে সমস্যা হবে না।


মুফতী ইমদাদুল হক হাফি. এর ফতোয়া থেকে সংগৃহীত।

والله اعلم بالصواب

উত্তর দিয়েছেনঃ মুফতি সাইদুজ্জামান কাসেমি
বাইতুল কুরআন মাদারাসা , মোহাম্মাদপুর

প্রসঙ্গসমূহ:

মন্তব্য ()

কোনো মন্তব্য নেই।

এ সম্পর্কিত আরও জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর

১৪০৬৭

কোচিংয়ের কারণে নামাজ চেড়ে দেওয়া!


৭ জুলাই, ২০২৪

মির্জাপুর

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ মুফতি সাইদুজ্জামান কাসেমি

২৪০৩৫

ইশরাক ও চাশত সালাত


৩০ অক্টোবর, ২০২২

Khulna

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ মুফতি সাইদুজ্জামান কাসেমি

২৫০১২

বিতর নামাযের ওয়াক্ত


২৪ নভেম্বর, ২০২২

পঞ্চগড়

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ মুফতী মুহাম্মাদ রাশেদুল ইসলাম

Logoমুসলিম বাংলা
play storeapp store
TopOfStack Software © 2025 All rights reserved. Privacy Policy