আল মুসনাদুস সহীহ- ইমাম মুসলিম রহঃ
১- ঈমানের অধ্যায়
৩৩৬। যুহাইর ইবনে হারব (রাহঃ) ......... মাসরুক (রাহঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি বলেন, আমি আয়েশা (রাযিঃ) এর কাছে হেলান দিয়ে বসেছিলাম। তখন তিনি বললেন, হে আবু আয়েশা! তিনটি কথা এমন, যে এর কোন একটি বলল, সে আল্লাহ সম্পর্কে ভীষণ অপবাদ দিল। আমি জিজ্ঞাসা করলাম, সেগুলো কি? তিনি বললেন, যে এ কথা বলে যে, মুহাম্মাদ তার প্রতিপালককে দেখেছেন, সে আল্লাহর উপর ভীষণ অপবাদ দেয়। আমি তো হেলান অবস্থায় ছিলাম, এবার সোজা হয়ে বসলাম। বললাম, হে উমুল মু”মিনীন! থামুন। আমাকে সময় দিন, ব্যস্ত হবেন না। আল্লাহ তাআলা কুরআনে কি ইরশাদ করেননিঃ “তিনি (রাসুল) তো তাঁকে (আল্লাহকে) স্পষ্ট দিগন্তে দেখেছেন, (সূরা তাকবীরঃ ৮১), অন্যত্র “নিশ্চয়ই তিনি তাকে আরেকবার দেখেছিলেন” (সূরা নাজমঃ ১৩)
আয়েশা (রাযিঃ) বললেন, আমিই এ উম্মতের প্রথম ব্যক্তি, যে রাসূলুল্লাহ (ﷺ)কে এ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করেছিলাম। তিনি বলেছিলেনঃ তিনি তো ছিলেন জিবরাঈল (আলাইহিস সালাম) কেবলমাত্র এ দু'বারই আমি তাঁকে তাঁর আসল আকৃতিতে দেখেছি। আমি তাঁকে আসমান থেকে অবতরণ করতে দেখেছি। তাঁর বিরাট দেহ ঢেকে ফেলেছিল আসমান ও যমীনের মধ্যবতী সবটুকু স্থান।
আয়েশা (রাযিঃ) আরও বলেন, তুমি কি শোননি? আল্লাহ তাআলা বলেছেনঃ তিনি (আল্লাহ) দৃষ্টির অধিগম্য নন, তবে দৃষ্টিশক্তি তাঁর অধিগত এবং তিনিই সূক্ষ্মদর্শী ও সম্যক পরিজ্ঞাত” (সূরা আনআমঃ ১০৩) এরূপ তুমি কি শোননি? আল্লাহ তাআলা বলেছেনঃ “মানুষের এমন মর্যাদা নাই যে, আল্লাহ তার সাথে কথা বলবেন ওহীর মাধ্যম ব্যতিরেকে অথবা পর্দার অন্তরাল ব্যতিরেকে অথবা এমন দুত প্রেরণ ব্যতিরেকে যে তাঁর অনুমতিক্রমে তিনি যা চান তা ব্যক্ত করেন, তিনি সমুন্নত ও প্রজ্ঞাময়” (সূরা শূরাঃ ৫১)।
আয়েশা (রাযিঃ) বলেন, আর ঐ ব্যক্তিও আল্লাহর উপর ভীষণ অপবাদ দেয়, যে এমন কথা বলে যে, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) আল্লাহর কিতাবের কোন কথা গোপন রেখেছেন। কেননা আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেছেনঃ হে রাসুল! আপনার প্রতিপালকের কাছ থেকে যা অবতীর্ণ হয়েছে তা প্রচার করুন, যদি তা না করেন তবে আপনি তার বার্তা প্রচারই করলেন না। (সূরা মায়িদাঃ ৬৭)
তিনি (আয়েশা (রাযিঃ) আরো বলেন, যে ব্যক্তি এ কথা বলে যে, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) আল্লাহর ওহী ব্যতীত কাল কি হবে তা অবহিত করতে পারেন, সেও আল্লাহর উপর ভীষণ অপবাদ দেয়। কেননা আল্লাহ তাআলা বলেনঃ “বল, আসমান ও যমীনে আল্লাহ ব্যতীত গায়েব সম্পর্কে কেউ জানে না।” (সূরা নামলঃ ৬৫)

তাহকীক:
তাহকীক নিষ্প্রয়োজন