আল জামিউস সহীহ- ইমাম বুখারী রহঃ
৬৯- শপথ ও মান্নতের অধ্যায়
৬২৬৪। আলী ইবনে হুজর (রাহঃ) ......... যাহদাম জারমী (রাহঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমরা একদা আবু মুসা আশআরী (রাযিঃ) এর নিকট ছিলাম। আমাদের এবং এই জারম গোত্রের মাঝে ভ্রাতৃত্ব ও সুসম্পর্ক বিদ্যমান ছিল। রাবী বলেনঃ তাঁর জন্য খানা পেশ করা হল, তাতে ছিল মুরগীর গোশত। তাদের দলের মাঝে তাইমুল্লাহ গোত্রের এক ব্যক্তি ছিল, যার গায়ের রং ছিল লাল যেন দেখতে গোলাম। রাবী বলেনঃ লোকটি খানার কাছেও গেল না। আবু মুসা আশআরী তাকে বললেনঃ কাছে এসো (খানাতে শরীক হও)। কেননা, আমি রাসূলুল্লাহ (ﷺ) কে এর গোশত খেতে দেখেছি। লোকটি বলল, আমি একে (মুরগী) কিছু খেতে দেখেছি; ফলে আমি এটিকে ঘৃণা করছি। এবং সে থেকে কসম করেছি যে, কখনও আর এটি খাব না।
আবু মুসা (রাযিঃ) বলেন, কাছে এসো; আমি তোমাকে এ সম্পর্কে অবহিত করব। একদা আমরা আশআরী গোত্রের একটি দলের সঙ্গে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর কাছে বাহন চাইবার জন্য আসলাম। তখন তিনি যাকাতের উট বণ্টন করছিলেন। –আইয়ুব বলেন, আমার মনে হয় তিনি বলেছিলেন, নবীজী তখন রাগান্বিত ছিলেন– তিনি বলেছিলেনঃ আল্লাহর কসম! আমি তোমাদেরকে বাহন দিব না; আমার কাছে বাহনযোগ্য কোন কিছুই নেই। রাবী বলেনঃ আমরা তখন প্রস্থান করলাম। এমন সময় তাঁর নিকট গনিমতের কয়েকটি উট আনা হল। তিনি বললেনঃ ঐ আশআরী লোকগুলো কোথায়? তখন আমরা ফিরে এলাম এবং রাসূলুল্লাহ (ﷺ) পাঁচটি আকর্ষনীয় উট আমাদেরকে দেওয়ার জন্য হুকুম করলেন। আমরা উটগুলো নিয়ে রওয়ানা হলাম।
এমন সময় আমি আমার সঙ্গীদেরকে বললাম, আমরা রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর কাছে বাহন চাওয়ার জন্য এসেছিলাম। আর তিনি আমাদেরকে বাহন দিবেন না বলে কসম করেছিলেন। কিন্তু এরপরে আমাদের কাছে লোক পাঠালেন এবং আমাদেরকে বাহন দিয়ে দিলেন। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) তাঁর কসম ভুলে গিয়েছেন। আল্লাহর কসম! আমরা যদি রাসূলুল্লাহ (ﷺ) কে তার কসম ভুলিয়ে দিয়ে থাকি তাহলে তো আমরা কখনও কৃতকার্য হতে পারব না। চল, আমরা রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর কাছে ফিরে যাই এবং তার কসম সম্পর্কে স্মরণ করিয়ে দেই।
এরপর আমরা ফিরে গিয়ে বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমরা আপনার কাছে বাহন চাওয়ার জন্য এসেছিলাম, আপনি আমাদেরকে বাহন দিবেন না বলে কসম করেছিলেন। কিন্তু পরে আবার বাহন দিয়েছিলেন। এতে আমরা ধারণা করলাম বা বুঝতে পারলাম, আপনি হয়ত কসম ভুলে গিয়েছেন। তখন তিনি বললেনঃ তোমরা চলে যাও। নিশ্চয়ই আল্লাহই তো তোমাদেরকে বাহন দিয়েছেন। আল্লাহর কসম! নিশ্চয়ই আমি যখন আল্লাহর ইচ্ছায় কোন বিষয়ে কসম করি আর তার অন্যটির মাঝে মঙ্গল দেখতে পাই, তখন যেটার মধ্যে কল্যাণ আছে সেটি বাস্তবায়িত করি এবং কসমের কাফফারা আদায় করে দেই।
হাম্মাদ ইবনে যায়দ আইয়ুব থেকে আবু কিলাবা এবং কাসিম ইবনে আসিম কুলায়বী (রাহঃ) বর্ণিত উপরোক্ত হাদীসে ইসমাঈল ইবনে ইবরাহীমের অনুসরণ করেছেন।

তাহকীক:
তাহকীক নিষ্প্রয়োজন