আল জামিউস সহীহ- ইমাম বুখারী রহঃ

৬৯- শপথ ও মান্নতের অধ্যায়

হাদীস নং: ৬২১২
আন্তর্জতিক নং: ৬৬৬৭

পরিচ্ছেদঃ ২৭৬৩. কসম করে ভুলবশতঃ যখন কসম ভঙ্গ করে।

৬২১২। ইসহাক ইবনে মনসুর (রাহঃ) ......... আবু হুরায়রা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, এক ব্যক্তি মসজিদে প্রবেশ করে নামায আদায় করতে লাগল। আর নবী (ﷺ) তখন মসজিদের এক কোণে অবস্থান করছিলেন। লোকটি তাঁর কাছে এসে তাকে সালাম করল। তিনি বললেনঃ ফিরে যাও এবং নামায আদায় করে নাও। কেননা, তুমি নামায আদায় করনি। তখন সে ফিরে গেল এবং নামায আদায় করল। পুনরায় এসে তাঁকে সালাম করল। তিনি উত্তরে বললেনঃ তোমার উপরও সালাম, তুমি ফিরে যাও এবং নামায আদায় করে নাও। কেননা, তুমি নামায আদায় করনি। তৃতীয়বার লোকটি বলল, দয়া করে আমাকে অবহিত করে দিন। তিনি ইরশাদ করলেনঃ যখন তুমি নামাযে দণ্ডায়মান হবে, তখন খুব ভালভাবে উযু করে নেবে। এরপর কিবলামুখী হবে। তারপর তাকবীরে তাহরীমা বলবে। এরপর কুরআন মাজীদ থেকে যা তোমার জন্য সহজ তিলাওয়াত করবে। এরপর ধীরস্থিরভাবে রুকু করবে। এরপর মাথা উত্তোলন করবে, এমনকি সঠিকভাবে দাঁড়িয়ে যাবে। এরপর সিজদা করবে ধীরস্থিরভাবে। এরপর (সিজদা থেকে) মাথা উত্তোলন করবে, এমনকি সোজা হয়ে এবং ধীরস্থিরভাবে বসে যাবে। এরপর পূনরায় সিজদা করবে ধীরস্থিরভাবে। তারপর সিজদা থেকে মাথা উত্তোলন করবে, এমনকি সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে যাবে। এরপর তোমার পুরো নামাযেই এরূপ করবে।

হাদীসের ব্যাখ্যাঃ

এ হাদীস থেকে প্রমাণিত হয় যে, রুকু-সিজদায় স্থির হওয়া ওয়াজিব। রুকু-সিজদায় গিয়ে সর্বনি্ম কতটুকু সময় অপেক্ষা করলে ওয়াজিব আদায় হয় এ ব্যাপারে উপরিউক্ত হাদীসের ভিত্তিতে ইমাম ত্বহাবী রহ. বলেন, مِقْدَارُ الرُّكُوعِ أَنْ يَرْكَعَ حَتَّى يَسْتَوِيَ رَاكِعًا وَمِقْدَارُ السُّجُودِ أَنْ يَسْجُدَ حَتَّى يَطْمَئِنَّ سَاجِدًا ، فَهَذَا مِقْدَارُ الرُّكُوعِ وَالسُّجُودِ الَّذِي لَا بُدَّ مِنْهُ . রুকু এবং সিজদায় যে পরিমাণ দেরি না করলেই নয় তা হলো, রুকু-সিজদায় গিয়ে স্থির হওয়া। (ত্বহাবী শরীফ-১৩৯২ নং হাদীসের আলোচনায়, খ--১, পৃষ্ঠা-১৬৭) ইমাম ত্বহাবীর এ বক্তব্য থেকেও সর্বসাধারণের নিকট ধীরস্থিরের পরিমাণ নির্ধারণ করা কষ্টকর হতে পারে। তাই তাদের জন্য আরো সহজ করে বলা যেতে পারে যে, একবার তাসবীহ পাঠ করা যায় এই পরিমাণ সময় রুকু-সিজদায় অপেক্ষা করলে সেটাকে স্থিরতা বলা যায় এবং এর দ্বারা রুকু-সিজদা পূর্ণ হয়ে যায়। এটাই হানাফী মাযহাবের মত। (শামী: ৪৬৪) তবে গুরুত্বপূর্ণ ইবাদাতে এ ধরণের তাড়াহুড়া কোনক্রমে গ্রহণযোগ্য নয়। বরং কমপক্ষে তিনবার তাসবীহ পাঠ করার মতো সময় অপেক্ষা করা উচিত।


tahqiq

তাহকীক:

তাহকীক নিষ্প্রয়োজন

সহীহ বুখারী - হাদীস নং ৬২১২ | মুসলিম বাংলা