মুফতী মনসূরুল হক দাঃ বাঃ
মুফতী মনসূরুল হক দাঃ বাঃ
style="text-align: justify;"> face="Arial">
style="margin-right: 0px; margin-bottom: 10px; margin-left: 0px; line-height: 24px; opacity: 1; visibility: visible; transition: opacity 0.24s ease-in-out 0s;"> face="Arial">হযরত মুফতী সাহেব দা.বা. লালবাগ মাদরাসায় থাকাকালীন উস্তাদ হিসেবে জুনিয়র ছিলেন। এ সময়ে তাঁর কাছে যে কোনো শ্রেণীর ছাত্র যে কোনো কিতাবের জটিলতার মাসআলার সহজ সমাধান পেয়ে যেতো। ছাত্ররা তাঁর কাছে দরসে নিযামীর অন্তর্ভুক্ত যে সব কিতাব হল করতে আসতো তার অধিকাংশই তার পড়ানোর দায়িত্ব ছিল না। এ কিতাবগুলো কোনো মুরুব্বী উস্তায পড়াতেন। ছাত্ররা দরসে কোনো মাসআলা না বুঝলে ভয়ের কারণে মূল উস্তাযের কাছে না গিয়ে তাঁর কাছে এসে ভীড় করতো। তিনি ছাত্রদের প্রশ্নগুলোর এমন সহজ ও সুন্দর জবাব দিতেন যে, তাদের কাছে সেই মাসআলা আয়নার মতো স্বচ্ছ হয়ে যেতো। তাঁর সমাধানগুলো শুনলে মনে হতো, যেন এইমাত্র কিতাব থেকে মুতালা‘আ করে তিনি সমাধানটি বের করেছেন।
style="margin-right: 0px; margin-bottom: 10px; margin-left: 0px; line-height: 24px; opacity: 1; visibility: visible; transition: opacity 0.24s ease-in-out 0s;"> face="Arial">হযরত মুফতী সাহেব দা.বা. এর কিতাব বোঝানোর এই গুণটির কথা তাঁর সব যুগের ছাত্ররাই স্বীকার করেন। তাঁর বর্তমান ছাত্রদের ভাষ্যমতে, তাঁর সবকে বসে কোনো ছাত্রই বঞ্চিত হয় না। তাঁর সবক উপস্থাপনের পদ্ধতিই এমন অভিনব ও উন্নততর যে, দরস দু’ তিন ঘন্টা ব্যাপী দীর্ঘ হলেও কোনো ছাত্র মনোসংযোগ-বিচ্ছিন্ন হয় না। এতো দীর্ঘ সময়ের দরসেও ছাত্রদের কোনো ক্লান্তি, কোনো অবসাদ আচ্ছন্ন করে না। উপরন্তু দরস থেকে ওঠার পর কখনো মনে হয়, অতৃপ্তি রয়েই গেল! সর্বোপরি জামা‘আতের মেধাবী এবং দুর্বল উভয়শ্রেণীর ছাত্ররাই দরসের প্রতিটি কথা সমানভাবে আয়ত্ব এবং আত্মস্থ করতে সমর্থ হয়; যা এ যুগের উস্তাদদের মধ্যে একেবারেই দুর্লভ।
style="margin-right: 0px; margin-bottom: 10px; margin-left: 0px; line-height: 24px; opacity: 1; visibility: visible; transition: opacity 0.24s ease-in-out 0s;"> face="Arial">হযরত মুফতী সাহেব দা.বা. এর এমন ছাত্রবান্ধব গুণের মূল রহস্য হলো, তিনি তালিবে ইলমদেরকে উম্মতের আমানত মনে করেন। এ কারণে তাঁর দৃষ্টিভঙ্গি হলো, উস্তাদের মধ্যে ইজতেহাদী মনোভাব থাকা অত্যন্ত জরুরী। উস্তাদ সব সময় তালিবে ইলমদেরকে সহজতম পন্থায় কিতাব বোঝানোর নিত্যনতুন পন্থা উদ্ভাবন করতে থাকবেন। যাতে কোনো সবক কোনো ছাত্রের জন্য দুরূহ না হয়ে যায়। এই ইজতেহাদী দৃষ্টিভঙ্গির কারণে হযরত মুফতী সাহেব দা.বা. এর উপস্থাপনা ছাত্রদের জন্য অত্যধিক উপযোগী হয়।
style="margin-right: 0px; margin-bottom: 10px; margin-left: 0px; line-height: 24px; opacity: 1; visibility: visible; transition: opacity 0.24s ease-in-out 0s;"> face="Arial">দরসের শুরুতেই তিনি সেদিনের সবকের সারাংশ বলে নেন। এরপর পুরো সবকের কথাগুলো বিশদভাবে এতোটাই ধীরে ধীরে বলেন যে, কেউ কথাগুলো লিখতে চাইলে হুবহু লিখে নিতে পারে। তাছাড়া তিনি কথা বলার সময় অনেকটা ধমকের মতো জোরালো স্বরে কথা বলেন। এ কারণে কেউ না লিখলেও কথাগুলো তার অবচেতন মনের গভীরে গেঁথে যায়। দরসের কথাগুলো এতটাই বিশ্লেষণধর্মী ও বাস্তবসম্মত হয় যে, প্রতিটি মাসআলার সমস্ত দিক এবং প্রতিটি আপত্তির সকল উত্তরই আলোচনায় চলে আসে। যখন সারাংশের কথাগুলোই পুরো দরসে একে একে আসতে থাকে তখন কোনো ছাত্রের জন্য অমনোযোগিতার সুযোগ থাকে না। ছাত্রদের ঘুম বা তন্দ্রাভাব আসা তো দূরের কথা, বরং পুরো ক্লাসের সকল ছাত্রই যেন তাঁর দরসে আকণ্ঠ নিমজ্জিত হয়ে কথাগুলো আত্মস্থ করতে থাকে। এরকম সুবিন্যস্ত ও ধীর উপস্থাপনার কারণে দরস থেকে ওঠার সময় একজন দুর্বল ছাত্রও সবকের আদ্যোপান্ত গুছিয়ে বলে দিতে পারে।
style="margin-right: 0px; margin-left: 0px; line-height: 24px; opacity: 1; visibility: visible; transition: opacity 0.24s ease-in-out 0s;"> face="Arial">মুফতী সাহেব দা.বা. লালবাগ জামি‘আয় থাকাকালীন ১৯৮৬ সাল থেকে কাশিয়ানী হুজুর রহ. এর পক্ষে বুখারী ও মিশকাত শরীফের দরস দিতেন। সেই থেকে আজ অবধি প্রায় ৩০ বছর যাবত তিনি বোখারী ও মিশকাত শরীফ পড়ানোর মহান খিদমত আঞ্জাম দিয়ে যাচ্ছেন। বর্তমানে তিনি নিয়মিত শুধু জামি‘আ রাহমানিয়ায় বুখারী শরীফের প্রথম খন্ড এবং মিশকাত শরীফের প্রথম অংশের দরস দিলেও অবসরে কখনো কখনো ঢাকা বা ঢাকার আশপাশের বিভিন্ন মাদরাসায়ও বুখারী শরীফের দরস প্রদান করেন।
style="margin-right: 0px; margin-left: 0px; line-height: 24px; opacity: 1; visibility: visible; transition: opacity 0.24s ease-in-out 0s;"> face="Arial">
style="margin-right: 0px; margin-bottom: 10px; margin-left: 0px; line-height: 24px; opacity: 1; visibility: visible; transition: opacity 0.24s ease-in-out 0s;"> face="Arial">দীন সম্পর্কে বিস্তর জ্ঞানার্জনের জন্য ধর্মীয় বইপত্র এবং কিতাবাদির বিকল্প নেই। যারা দীন সম্পর্কে অজ্ঞ তাদের দাওয়াত কিংবা বয়ানের মাধ্যমে দীনের সাথে পরিচিত করে তোলা সম্ভব। কিন্তু শাখা-প্রশাখাগত জ্ঞান এবং খুঁটিনাটি তথ্যাদির জন্য বই-পুস্তকের প্রয়োজন অনস্বীকার্য। তেমনিভাবে ভ্রান্ত মতবাদ এবং বিদ‘আত ও কুসংস্কারের মূলোৎপাটনেও বিশদ দলীল-প্রমাণের উপস্থাপন জরুরি। তাই অত্যধিক কর্মব্যস্ততার এ যুগে দীনের দা‘ঈগণ দাওয়াত এবং বয়ানের পাশাপাশি বইপত্র রচনায়ও মনযোগী হয়ে থাকেন।
style="margin-right: 0px; margin-bottom: 10px; margin-left: 0px; line-height: 24px; opacity: 1; visibility: visible; transition: opacity 0.24s ease-in-out 0s;"> face="Arial">যাপিত জীবনের প্রতিটি বাঁকে দীনের যেসব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের ইলম অর্জন করা ফরযে আইন, সে সব বিষয়েই হযরত মুফতী সাহেব দা.বা. সাবলীল ভাষায় বিশ্লেষণী গ্রন্থাদি রচনা করেছেন। ঈমান-আকীদা, ইবাদত-বন্দেগী, সুন্নত-বিদ‘আত, মু‘আমালাত-মু‘আশারাত, বাতিল মতবাদসহ সব বিষয়েই তাঁর লিখনী নিরবিচ্ছিন্ন অবদান রেখে চলেছে। হযরত মুফতী সাহেব দা.বা. এর সূক্ষ্মদৃষ্টি, নিগূঢ় বিশ্লেষণ এবং ভাষা ব্যবহারে সচেতনতার কারণে এসব বই-পুস্তকের মাধ্যমে সাধারণ শিক্ষিত দীনদার জনসাধারণ ব্যাপকভাবে উপকৃত হচ্ছেন।
style="margin-right: 0px; margin-bottom: 10px; margin-left: 0px; line-height: 24px; opacity: 1; visibility: visible; transition: opacity 0.24s ease-in-out 0s;"> face="Arial">হযরত মুফতী সাহেব দা.বা. রচিত বই-পুস্তকের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো-কিতাবুল ঈমান, ফাতাওয়ায়ে রাহমানিয়া, ইসলামী যিন্দেগী, ‘আমালুস সুন্নাহ, কিতাবুস সুন্নাহ, ইশা‘আতুস সুন্নাহ, মাযহাব ও তাকলীদ, তুহফাতুল হাদীস, সন্তানের শ্রেষ্ঠ উপহার, ইসলামী বিবাহ, মালফুযাতে মুজাদ্দিদে দীন, নবীজীর সুন্নাত, মাসনূন দু‘আ ও দরূদ, নামায শিক্ষা, জীবনের শেষদিন, তাবলীগ কি ও কেন, সান্তনা ও পুরস্কার, সম্মিলিত মুনাজাত ইত্যাদি।
style="margin-right: 0px; margin-left: 0px; line-height: 24px; opacity: 1; visibility: visible; transition: opacity 0.24s ease-in-out 0s;"> face="Arial">এছাড়াও হযরত মুফতী সাহেব দা.বা. বিভিন্ন পত্রিকা-সাময়িকীতে প্রবন্ধ-নিবন্ধ এবং ধারাবাহিক কলাম লিখে থাকেন। বিভিন্ন সময়ে মাসিক হক পয়গাম ও মাসিক রাহমানী পয়গামে (প্রতিষ্ঠাকাল থেকে ২০০১ ইং পর্যন্ত) মাসিক আদর্শ নারী, আল-আবরার, আল-জামি‘আ এবং দ্বিমাসিক রাবেতা’য় তাঁর বহু কলাম ও নিবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে।
style="margin-right: 0px; margin-left: 0px; line-height: 24px; opacity: 1; visibility: visible; transition: opacity 0.24s ease-in-out 0s;"> face="Arial">
style="margin-right: 0px; margin-left: 0px; line-height: 24px; opacity: 1; visibility: visible; transition: opacity 0.24s ease-in-out 0s;"> style="text-align: justify;"> face="Arial">সূর্যের চোখ ধাঁধানো কিরণ যে দেখেনি তাকে সূর্যালোকের বিবরণ দেয়া অনর্থক। রজনীগন্ধার সুবাস যে শোঁকেনি তার কাছে রজনীগন্ধার বিবরণ মূল্যহীন। কোনো বর্ণনাই বাস্তবতার চিত্রায়ক হতে পারে না। দীন ও ঈমানের দিবাকর হযরত মুফতী সাহেব দা. বা. এর কর্ম ও পরিচয় এবং গুণ ও বৈশিষ্ট্যের যত মর্মস্পর্শী ও বিশ্লেষণধর্মী বিবরণই উপস্থাপন করা হোক, তাঁর পরিচিত মহলের কাছেই তা অসম্পূর্ণ থাকবে। তাঁর পরিচয় প্রত্যাশীদের আশাও যে নিরাশায় পর্যবসিত হবে- সেটা বলাই বাহুল্য। তবু মূলত সূর্যের পূর্ণপরিচয় সূর্যালোকই দিতে পারে। ফুলের সুবাসই হতে পারে ফুলের বড় পরিচয়। হযরতুল আল্লাম মুফতী মনসূরুল হক সাহেব দা. বা. কে জানতে হলে তাঁর সান্নিধ্যেই আসতে হবে। তাঁর পরিচয় পেতে হলে তাঁর কর্মের ঘনিষ্ঠ পর্যবেক্ষণ করতে হবে।